আহসান উল্লাহ মাস্টারকে হত্যার কারণ ছিল আদর্শিক: হানিফ
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, শহিদ আহসান উল্লাহ মাস্টার একজন দক্ষ সাংগঠনিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি খুব দ্রুত সময়ে শ্রমিকদের মাঝে জনপ্রিয় নেতা হয়ে উঠেছিলেন। যার কারণে তিনি জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি শিক্ষক থেকে একজন শ্রমিক নেতা হয়ে মেহনতি মানুষের খুব কাছে যেতে পেরেছিলেন। আহসান উল্লাহ মাস্টারকে হত্যার কারণ ছিল আদর্শিক। ১৯৭১ এর পরাজিত শক্তি ও তাদের রাজনৈতিক মিত্র তারা আমাদের এ স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেনি। তারা বারবার চেষ্টা করেছিল আমাদের এ স্বাধীনতাকে পরাধীনতার শৃংখলায় আবব্ধ করার জন্য।
তিনি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, তিনি কথায় কথায় গণতন্ত্রের সবক দেন। আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যাকান্ডসহ অজস্য হত্যাকান্ডের দায় আপনাদের ঘাড়ে আছে। আহসান উল্লাহ মাস্টারের রক্তে আপনার নেত্রী খালেদা জিয়া ও আপনার নেতা তারেক রহমানের হাত রঞ্জিত আছে। এখান থেকে কোন দিন মুক্তি পাওয়ার সুযোগ নেই। আপনি যতই মায়া কান্না কাঁদেন আওয়ামীলীগের ২৬ হাজার নেতাকর্মীর রক্তে আপনার নেত্রীর হাত রঞ্জিত। আপনার নেতার হাত রঞ্জিত। এ হত্যাকান্ডের বিচার এ বাংলার মাটিতে হয়েছে এবং আরো হবে।
তিনি শহিদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের ১৮তম শাহাদাৎ বার্ষিকীর উপলক্ষ্যে শনিবার দুপুরে গাজীপুর মহানগরীর হায়দরাবাদে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের ছেলে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, ইকবাল হোসেন সবুজ এমপি, প্রফেসর রুমানা আলী টুসি এমপি, মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মন্ডল, জেলা পরিষদের প্রশাসক আখতারউজ্জামান, সাবেক সচিব ও জাতীয় পার্টির মহানগর কমিটির সভাপতি এমএম নিয়াজ উদ্দিন, যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল, মহানগর আওয়ামীলীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট ওয়াজ উদ্দিন মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক মহি উদ্দিন মহি, জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক জামিল হাসান দুর্জয়সহ আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ।
সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আহসান উল্লাহ মাস্টারের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো এবং ফাতেহা পাঠ করে মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া করা হয়।
মাহবুবুল আলম হানিফ মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আয়নায় নিজের নিজের চেহারা দেখুন। আপনার দুই শীর্ষ নেতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতি ও এতিমের টাকা আত্মসাতের জন্য কারাগারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বদন্যতা ও দয়ায় জেলখানার পরিবর্তে বাসায় আছেন। আরেকজন শীর্ষ নেতা তারেক রহমান দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কারণে বিদেশে পলাতক। যে দলের দুই শীর্ষ নেতা কারাগারে ও বিদেশে পলাতক তাদের মুখে আইনের কথা, দুর্নীতি ও গণতন্ত্রের কথা মানায় না।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান ১৯৭৫ এর ঘাতকদের দোসর রাস্ট্রক্ষমতায় আাসর পরই আওয়ামীলীগকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য চক্রান্ত করেছিল। আওয়ামীলীগের প্রায় তিন লক্ষ্য নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণ করেছিলেন। তখনই বহু আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছিল। আওয়ামীলীগকে খন্ড বিখন্ড করা হয়েছিল। তিনি এই অপশক্তির বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করছে তাদের কাছ থেকে সতর্ক থাকার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানান।
তিনি বলেন, বিএনপি মিথ্যা তথ্য দিয়ে আবেদন করে আমাদের এ দেশের এলিট ফোর্স র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। এই মির্জা ফখরুলরা লবিস্ট নিয়োগ করে টাকা দিয়ে টাকা খরচ করে র্যাবের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার ব্যবস্থা করেছেন। আপনার নেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আছে। সেটার জন্য আপনার লজ্জিত হওয়া উচিত। তারেক রহমান একজন দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসী বলে তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আছে।
তিনি আশা ব্যক্ত করেন আহসান উল্লাহ মাস্টারের আগামি ১৯তম শাহাদাৎ বার্ষিকীর আগেই এ হত্যাকান্ডের বিচারের রায় কার্যকর করা হবে।
এসএ/