শীতে ত্বকের যত্নে মধু পর্ব-২


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


শীতে ত্বকের যত্নে মধু পর্ব-২

গুরুদাসপুর প্রতিনিধি: প্রাকৃতিকভাবেই মধু নানা গুণের অধিকারী। এর রয়েছে একাধিক রোগ নিরাময়ের ক্ষমতাও। আর শীতে শরীরের উষ্ণতা বাড়াতে বিশেষভাবে সহায়তা করে মধু। কেননা মধু ভালো শক্তি প্রদায়ী একটি খাদ্য। দেহে তাপ ও শক্তি জুগিয়ে উষ্ণতা বাড়ায় মধু। তাই মধু খেলে শীত আপনাকে কাবু করতে পারবে না।

মধু খুব ভালো একটি Humectant হিসেবে কাজ করে:
Humectant হলো এমন একটি  উপাদান যা ত্বকের সজীবতা ধরে রাখতে বিভিন্ন প্রসাধনীতে ব্যবহার করা হয়। এটি  ত্বকের কোষ গুলোকে সজিব রাখে। ত্বক যখন প্রয়োজনীয় পানি হারায় তখন তা শুষ্ক ও নির্জিব হয়ে পড়ে। শীতে ত্বকের যত্নে মধু ব্যবহার করলে তা প্রাকৃতিক ভাবে আমাদের ত্বকের সজিবতাকে সিল করে দেয় যাতে, ত্বক তার সজীবতা না হারায়

ত্বকের নানা ধরনের সমস্যায় মধু  

একজিমা, সোরিয়াসিস হলে আমাদের চামড়া অনেক বেশি শুস্ক হয়ে পড়ে। এ ধরনের সমস্যায় সারা বিশ্বে মধু ব্যবহার করা হয়। আয়ুর্বেদিক ঔষধে মধু ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় – যেমন পোড়া, কাটা, যে কোন ধরনের ক্ষত এবং প্রদাহ, লাল হয়ে যাওয়া ত্বক।

স্ক্রাবার এবং ময়েশ্চারাইজার  হিসেবে মধুর ব্যবহারঃ

শুষ্ক ত্বকে তেলগ্রন্থি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম থাকে। ফলে ত্বক অল্পতেই শুষ্ক হয়ে যায়। আর শীত এলে এ ধরনের ত্বকে শুষ্কতা বেশি দেখা দেয়।  এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন পরিষ্কার করতে হবে। ত্বকের উপর মৃত কোষের স্তর জমে গেলে আপনি উপরে যতই লোশন, ক্রিম, প্যাক লাগান না কেন আপনার ত্বক পর্যন্ত তা পৌঁছাতে পারেনা। তাই সপ্তাহে দু-তিন দিন নিয়ম করে স্ক্রার্বিং করতে হবে।

শুষ্ক ত্বকে ক্রিম সমৃদ্ধ ক্লিনজার ব্যবহার করা উচিত।  বেসন খুব ভালো ক্লিনজার হিসেবে কাজ করে। সাবানের পরিবর্তে বেসন দিয়ে দিনে দু-তিনবার পরিষ্কার ত্বক করুন। যতবার মুখ ধোবেন ততবারই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। রাতে কিছুটা হালকা ময়েশ্চারাইজিং করতে পারেন। মধু খুব ভালো কাজ করবে এক্ষেত্রে। এতে রয়েছে অ্যান্টি-ফাঙ্গাল, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ভাইরাল উপাদান। নিয়মিত মধু ব্যবহার করলে ত্বক হয় উজ্জ্বল ও সুন্দর। এছাড়া ব্রণ, বলিরেখা ও রোদে পোড়া দাগ দূর করতে পারে এ প্রাকৃতিক উপাদান।

শুষ্কতা থেকে রক্ষা পেতে বেসনের সঙ্গে কাঁচা দুধ ও মধু মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে মুখে এবং দেহের অনাবৃত অংশে ব্যবহার করতে পারেন। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক পরিষ্কার, উজ্জ্বল ও মোলায়েম হবে। স্ক্রার্বিংয়ের সময় এই মিশ্রণের সঙ্গে এক চা-চামচ চিনি মিলিয়ে নিন। এরপর পুরো মুখে লাগিয়ে পাঁচ মিনিট হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন। তারপর উষ্ণ পানির ঝাপটা দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।এর সঙ্গে কয়েকটা গোলাপের পাপড়ি পেস্ট করে মিশিয়ে নিতে পারেন।

শীতে ত্বকের যত্নে মধু দিয়ে কিভাবে বানাবেন ময়েশ্চারাইজারঃ

একটি বাটিতে একটি ডিমের কুসুমের সঙ্গে বেশ খানিকটা দুধের সর, একটু মসুর ডাল বাটা ও একটু মধু মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে ত্বকে লাগাতে পারেন। সপ্তাহে তিন দিন এ প্যাক ব্যবহারে ত্বকের অতিরিক্ত শুষ্ক ভাব কমে আসবে। শুকিয়ে গেলে ঘষে ঘষে তুলে নিন। তাহলে ত্বক একেবারে ঝকঝকে হয়ে উঠবে।

এ ছাড়া পাকা পেঁপে ও মধু মিলিয়ে মুখে লাগিয়ে নিতে পারেন। পাঁচ মিনিট রাখে ধুয়ে ফেলুন। পাকা পেঁপে এবং মধু ‘ন্যাচারাল ময়েশ্চারাইজার’ হিসেবে ভালো কাজ করে।

এত উপকরণ হাতের কাছে না থাকলে ১ চা চামচ মধু সরাসরি মুখে লাগান। ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ত্বক। প্রতিদিন ২ বার লাগালে ত্বকে আসবে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা।

ফেসিয়াল ক্লিনজার হিসেবে মধু:

মুখের মেকাপ রিমুভার অথবা মেকাপ গলিয়ে ফেলতে মধু খুব ভালো কাজ করে। যদি এর সাথে জোজোবা তেল অথবা নারকেল তেল মিশিয়ে নেন তাহলে আরোও ভালো কাজ করবে। মধু এবং তেল মিশিয়ে নিন একটি বাটিতে। ঘন একটা মিশ্রণ হবে। আপনার মুখে ভালো ভাবে ঘষে লাগান। এরপর হাল্কা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। 

এসএ/