বগুড়ায় বন্ধুত্বের বন্ধন স্মরনীয় রাখতে ‌‘এসএসসি ৮৭’ ব্যাচের মিলন মেলা


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


বগুড়ায় বন্ধুত্বের বন্ধন স্মরনীয় রাখতে ‌‘এসএসসি ৮৭’ ব্যাচের মিলন মেলা

আমাদের জীবনে পরিবারের পরে যে মানুষটি সবচেয়ে বেশি আপন থেকে থাকে তা হলো বন্ধু। একজন বন্ধু প্রত্যেককের জীবনে প্রকৃত সাথী। ভালো-মন্দ, আবেগ-অনুভূতি, ভালো লাগা, খারাপ লাগা সকল কিছু আমরা যে মানুষটির সাথে বলে শান্তি পাই এটিই প্রকৃত বন্ধু। বেঁচে থাকার জন্য যেমন অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় ঠিক তেমনি প্রয়োজন হয় ভালো বন্ধু। বন্ধুত্ব হলো বিশ্বাস, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা এবং সহযোগিতার পাশাপাশি একটি পবিত্র সম্পর্ক। সর্বোৎকৃষ্ট আয়না হলো একজন পুরনো বন্ধু। বন্ধুত্ব হলো স্বাধীন পায়রা। তারে যতটা ভালোবাসা যায় ততটাই ভালোবাসা হয়ে থাকে। কবে কার সাথে দেখা হয়েছে অনেকেই তা মনে করতে পারে না। দুরন্তপনার সেই কৈশোর ডিঙ্গিয়ে যখনই জীবিকার ভার পড়েছে তখনই সবাই ছুঁটেছে যে যার মত। সময় পাল্টানোর সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে গেছে মানুষগুলো। কিন্তু স্মৃতিচারনায় কৈশোরের যে কথাগুলো উঠে এলো সেগুলো বড্ড চেনা। চোখে ভেসে উঠে কৈশোরের চেনা মুখটিও। 

‘বন্ধুত্বে আলো-বন্ধুত্বে ভয়, বন্ধুত্বে শক্তি বন্ধুত্বেই জয়’ এ কথাটি মনে লালন করে বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে বন্ধুত্বের বন্ধন স্মরনীয় রাখতে এসএসসি ‘অন্তর জুড়ে-৮৭’ ব্যাচের জাগরিত বন্ধুদের মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বন্ধু মানে সুখ-দুঃখের এক মজবুত ভরসা, চরম বন্ধুর পথে এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা। মানুষের জীবনের প্রায় ধাপে ধাপে শত বন্ধুর দেখা মেলে। কেউ স্কুলজীবনের বন্ধু, কেউবা কলেজ জীবনের, কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের, কেউবা আবার কর্মজীবনের বন্ধু। এর বাইরেও অনেক বন্ধু রয়েছে। তবে জীবনচলার পথে যে বন্ধুদের দিয়ে বন্ধুত্বের সংজ্ঞা মনের মাঝে আত্মস্থ হয়, এটি স্কুলজীবনের বন্ধু। এ বন্ধুত্বকে কখনও ভোলা যায় না। হয়তো ব্যস্ততার কারণে নিয়মিত খোঁজখবর রাখা হয়ে ওঠে না, কিন্তু তারাই গেঁথে থাকে অন্তরে। বাস্তবে সচরাচর দেখা না মিললেও স্মৃতির পাতায় আজীবন রয়ে যায় অমলিন। স্কুলজীবনই স্বর্ণালি সময়ের নামান্তর।

বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী নানা অয়োজনে সারিয়াকান্দি উপজেলার দিঘলকান্দি প্রেম যমুনার ঘাটে এ সম্মেলনের আয়োজন করে এসএসসি ১৯৮৭ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।

বিভিন্ন স্কুলের ৫’শতাধিক বন্ধু-বান্ধবীর উপস্থিতি অনুষ্ঠানটিকে জমাকালো করে তুলে। বন্ধুত্বের টানে, প্রাণের বন্ধনে দীর্ঘদিন পর বন্ধুদের পরষ্পরের সঙ্গে দেখা হলে এই মিলনমেলা আনন্দ মেলায় রূপ নেয়। অনুষ্ঠানে ছিল স্মৃতি স্মারণ, নাচ-গান, বন্ধুদের মধ্যে কথাপোকথন, মধ্যহ্ন ভোজ এবং র‌্যাফেল ড্র। শুরুতে একটি আনন্দ র‌্যালি উপজেলার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
 
এতে সভাপতির বক্তব্য রাখেন এসএসসি ১৯৮৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী মাদারিপুর রিজিওয়নের হাইওয়ে পুলিশ সুপার হামিদুল আলম মিলন বিপিএম, পিপিএম। বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের অর্থোপেডিক সার্জন ডাঃ একেএম লতিফুল বারী, ঠিকাদার মজিবর রহমান, বাংলাদেশ প্রতিদিন বগুড়ার নিজস্ব প্রতিবেদক আব্দুর রহমান টুলু, বরপুকুরিয়া কয়লা খনির ডিজিএম প্রকৌশলী নাজমুল হক, ব্যবসায়ি শাফি মাহমুদ, স্টাডি পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ সাজেদুর রহমান সাজু, সারিয়াকান্দি সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাফি, ব্রাকের সাবেক  কর্মকর্তা হারুনুর রশীদ, আব্দুল কাইয়ুম জুয়েল, মো. সবুজ মিয়া, মোহাম্মাদ আলী জিন্নাহ, বিকাশ চন্দ্র সাহা, ফজলে নূর, ব্যবসায়ি কাইয়ুমুল ইসলাম রুবেল, সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম, সাংবাদিক আব্দুল লতিফ, একাব্বর হোসেন প্রমুখ। বন্ধু সম্মেলনে এসএসসি ১৯৮৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী যারা মৃতুবরণ করেছেন তাদের স্মরণে ১মিনিট নিরবতা পালন ও তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া এবং মোনাজাত করা হয়। আলোচনা সভা শেষে মধ্যহৃভোজের আয়োজন করা হয়। পরে র‌্যাফেল ড্র ও বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। শেষে এক মনোজ্ঞা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, আগামীদিনে আরো সুন্দর ও বড় পরিসরে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। একই সঙ্গে অনুষ্ঠান থেকে একটি তহবিল গড়ে অস্বচ্ছল বন্ধুদের সন্তানদেরকে শিক্ষা বৃত্তি প্রদান করা হবে। 

এসএ/