বৈশ্বিক খাদ্য সংকট এবং মানবিক বিপর্যয়
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
ক্ষুধার আগুনে পুড়ছে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ। যাদের জীবনে দিনে একবারও খাবার জুটে না এমন মানুষের সংখ্যাও কম নয়। নানা সংকটে এই সংখ্যা বেড়ে্ই চলছে। ক্ষুধার্তের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাদ্যের অনিশ্চয়তাও তীব্রভাবে দেখা দিয়েছে বিশ্বে। বর্তমানে বিশ্বের প্রতি তিনজন মানুষের একজন এই অনিশ্চয়তার শিকার।গত দুই বছর ধরে করোনা মহামারির প্রভাবে বিশ্বজুড়ে ক্ষুধার্তের হারে উল্লম্ফন ঘটেছে। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহামারির এক বছরেই বিশ্বে ক্ষুধার্ত মানুষ বেড়েছে ১৮ শতাংশ, যা গত কয়েক দশকে দেখা যায়নি। এদিকে নতুন করে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান ইতোমধ্যে একটি ট্র্যাজেডিতে পরিণত হয়েছে। এটি বিশ্বের খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে খাধ্য সঙ্কটের পাশাপাশি, আরও কিছু বিপর্যয় ডেকে আনবে। এই বিপর্যয়গুলো তিনভাবে অনুভূত হবে। বর্তমান শস্যের চালানে ব্যাঘাত, ইউক্রেন ও রাশিয়ায় কম খাদ্য শস্যের কম ফলন বা ভবিষ্যত ফসলের অপ্রাপ্যতা এবং বিশ্বের অন্যান্য অংশে উৎপাদন হ্রাস পাওয়া। এর ফলে খাদ্য ও জ্বালানির এই উচ্চ মূল্য বিশ^ব্যাপি অনান্য পণ্যের ব্যাপক মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি, মূল্যস্ফীতিকেও বাড়িয়ে তুলবে। আর বাড়িয়ে তুলবে অর্থনৈতিক সঙ্কট ও মানবিক বিপর্যয়।বিশ্বব্যাপী উৎপাদিত সারের ২৫ শতাংশই সরবরাহ করে রাশিয়া। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় এখন তাও বন্ধ। যার প্রভাবও পড়ছে বৈশ্বিক কৃষি ব্যবস্থাপনায়। ফলে আফ্রিকা কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত কোনো দেশ নয়, খাদ্য সংকটে পড়ার তীব্র শঙ্কা রয়েছে খোদ ইউরোপের। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি বিষয়ক সংস্থা এফএও জানিয়েছে এমন শঙ্কা। সংস্থাটি বলছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ভেঙ্গে গেছে গম ও ভুট্টা সরবরাহে শীর্ষে থাকা দেশ দু’টির শস্য উৎপাদন ও রফতানির অবকাঠামো।ফলে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে ২০ শতাংশ পর্যন্ত। যার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ছে ইউরোপের দেশগুলোতে।
এদিকে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের সরাসরি প্রভাব পড়ছে খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থায়। বিশ্বের অন্যতম শস্য উৎপাদনকারী দুই দেশের বিরোধে পাল্টে গেছে সব হিসেব নিকেশ। খোদ ইউরোপের দেশগুলোতেই দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট।ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের কারণে বন্ধ রয়েছে দেশটি থেকে গম ও ভুট্টা রফতানি। অন্যদিকে, যুদ্ধ ও পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া গুরুত্ব দিচ্ছে নিজস্ব চাহিদার দিকে। ফলে রাশিয়া থেকেও শস্য রফতানি হচ্ছে না। অথচ দেশ দু’টির গম ও ভুট্টার প্রধান আমদানি কারক ইউরোপের দেশগুলো। বৈশ্বিক গম রফতানির ৩০ শতাংশই হয় দেশ দু’টি থেকে। এমনকি মোট সয়াবিনের ৮০ শতাংশই সরবরাহ করে ইউক্রেন ও রাশিয়া।এফএও এর প্রধান অর্থনীতিবিদ ম্যাক্সিমো টরেরো বলেন, শীর্ষ গম রফতানিকারক দেশগুলোর মধ্যে ১ম অবস্থান রাশিয়ার। আর ৫ম অবস্থানে ইউক্রেন। এই দু’টি দেশে উৎপাদিত শস্যের প্রধান বাজারই ইউরোপ। যুদ্ধের কারণে জ্বালানির দামের সাথে বাড়ছে শস্য উৎপাদন খরচও। দেশ দু’টি থেকে রফতানি বন্ধ থাকায় মজুদ পণ্যের ওপরও পড়ছে প্রভাব। এতে ভেঙে পড়েছে পুরো সাপ্লাই চেইন।যুদ্ধের এক মাস যেতে না যেতেই এর প্রভাব টের পেতে শুরু করেছে ইউরোপ। এরইমধ্যে দেশগুলোতে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে ৭ শতাংশের বেশি। জাতিসংঘের শঙ্কা এটা ২০ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে।ম্যাক্সিমো টরেরো আরও বলেন, এখন প্রশ্ন হলো যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা কিংবা অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলো তাদের রফতানির পরিমাণ বাড়াবে কিনা। এরইমধ্যে আর্জেন্টিনা এবং ভারত গম রফতানির ঘোষণা দিয়েছে। তবে এসব উদ্যোগের ফলে বৈশ্বিক চাহিদার কতটুকু পূরণ হবে সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট বেড়ে যাওয়ায় মস্কোকে দায়ী করা হচ্ছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানে গমের মজুদ লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালানো এবং জাহাজের মাধ্যমে কিয়েভ হতে খাদ্যশস্য বহন ব্যাহত হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলো বলছে,বর্তমানে তারা (রাশিয়া) বিশ্বে খাদ্য ঘাটতির প্রধান কারণ। কেননা, ইউক্রেনের বিভিন্ন নগরীতে বোমা হামলা চালানো এবং দেশটি থেকে খাদ্যশস্যের যোগান বন্ধ হয়ে পড়ায় বিশ্বে খাদ্য সংকট অনেকটা বেড়ে যাচ্ছে।মস্কো যখন পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাকে ‘খাদ্যের ঘাটতি এবং ক্রমবর্ধমান মূল্যের জন্য দায়ী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে, তখন রাশিয়াই বন্দরে গম আটকিয়ে এবং গমের ভাণ্ডার ধ্বংস করে বিশ্বে মন্দা সৃষ্টি করছে।এদিকে জাতিসংঘ বিশ্বে খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে সতর্ক করার পর তার এই মন্তব্য এলো। জাতিসংঘ জানিয়েছিল, মার্চ মাসে বিশ্বব্যাপী খাদ্যের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।বিশ্ব খাদ্য সংস্থা বলছে, গত তিন বছরে বিশ্বব্যাপী গম ও ভুট্টা রফতানির প্রায় ৩০ শতাংশ রাশিয়া এবং ২০ শতাংশ ইউক্রেন থেকে হয়েছে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থা অনুমান করছে, পশ্চিম আফ্রিকা এবং সাহেল অঞ্চলে (উভয়ই রাশিয়ান এবং ইউক্রেনীয় শস্যের ওপর অত্যন্ত নির্ভরশীল) যদি কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তবে জুনের মধ্যে ৩ কোটি ৮০ লাখের বেশি লোককে আরও দুরবস্থার সম্মুখীন হতে হবে। ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে বিশ্বের পণ্যবাজারে অর্ধ শতকের মধ্যে সবচেয়ে বড় ধাক্কা লাগতে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছে বিশ্বব্যাংক।এ সংস্থার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ইউক্রেইনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের কারণে গ্যাস থেকে গম ও তুলা পর্যন্ত বিভিন্ন পণ্যে দাম অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে এবং এই ধাক্কা ১৯৭০-এর দশকের পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে।বিশ্ব ব্যাংকের এ প্রতিবেদনের সহ-লেখক পিটার ন্যাগল বিবিসিকে বলেন, পণ্যের দামের এই ঊর্ধ্বগতি এরই মধ্যে বড় ধরনের অর্থনৈতিক ও মানবিক প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। বিশ্বজুড়ে মানুষকে জীবনযাত্রার বাড়তি খরচ যোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গরীব পরিবারগুলোর জন্য বেশি উদ্বেগের বিষয়।যেহেতু তাদের আয়ের সিংহভাগ খাবার ও জ্বালানির পেছনে খরচ হয়। পণ্যের দাম বাড়লে তারাই সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে পড়ে।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জ্বালানির দাম ৫০ শতাংশের বেশি বাড়ার দিকে এগোচ্ছে, যা ব্যবসা ও সংসার চালানোর খরচ অনেক বাড়িয়ে দেবে। সবচেয়ে বেশি বাড়বে ইউরোপে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম, যা দ্বিগুণের বেশি বেড়ে যেতে পারে বলে বিশ্ব ব্যাংকের ধারণা। আগামী বছরের শরৎ এবং ২০২৪ সালের পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, গত বছরের তুলনায় ২০২৪ সালে গ্যাসের দাম ১৫ শতাংশ বেশি থাকবে।বিশ্বব্যাংক বলছে, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত বিশ্ব টানা ২৩ মাস জ্বালানির দামে ঊর্ধ্বগতি দেখছে। মধ্যপ্রাচ্য সংকটের জেরে ১৯৭৩ সালের জ্বালানি মূল্য বৃদ্ধির পর এটাই দীর্ঘতম সময় ধরে জ্বালানির দাম বেড়ে চলার ঘটনা।বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাসে সতর্ক করা হয়েছে, অনেক খাদ্য পণ্যের দাম হঠাৎ লাফিয়ে বাড়ার মত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য মূল্য সূচক এরই মধ্যে ইতিহাসের সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছে। ছয় দশক আগে এই সূচক চালু করা হয়।গমের দাম ৪২ দশমিক ৭ শতাংশ বাড়তে পারে এবং ডলারের হিসাবে এটা দাম বৃদ্ধির নতুন রেকর্ড গড়ার পথে আছে। অন্যান্য খাদ্য পণ্যের মধ্যে বার্লি ৩৩ দশমিক ৩ শতাংশ, সয়াবিন ২০ শতাংশ, ভোজ্য তেল ২৯ দশমিক ৮ শতাংশ ও মুরগির দাম ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়তে পারে। এসব পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি এটাই ইঙ্গিত করছে যে, রাশিয়া ও ইউক্রেইন থেকে এসব পণ্যের রপ্তানি রাতারাতি কমে গেছে।যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক প্রতিষ্ঠান জেপি মরগ্যান এবং এসঅ্যান্ডপির হিসাবে, যুদ্ধ শুরুর আগে বিশ্বের মোট সয়াবিনের ৬০ শতাংশ ও গম রপ্তানির ২৮ দশমিক ৯ শতাংশ এ দুই দেশ থেকে মিলতো। যুদ্ধ চলায় ইউক্রেইন থেকে দানাদার শষ্য ও তেলবীজের সরবরাহ ৮০ শতাংশ কমে গেছে, যা এক বছরের সরবরাহ হিসাবে বিবেচনা করলে বিশ্বের ১০ দিনের বেশি খাদ্য ঘাটতির সমান। বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ খাদ্য পণ্যের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আরচার ড্যানিয়েলস মিডল্যান্ডের প্রধান নির্বাহী হুয়ান লুসিয়ানো বলেন,দাম শিগগির কমবে এমন আশা করা যাচ্ছে না বর্তমান প্রেক্ষাপটে।
যুক্তরাষ্ট্রের এ কোম্পানি এ বছরের প্রথম তিন মাসে ৫৩ শতাংশ আয় বাড়ার ঘোষণা দিয়েছে, যার পরিমাণ ১০৫ কোটি ডলার।বিশ্বব্যাংকের অর্থনীতিবিদ ন্যাগল বলেন, ইউক্রেইনে যুদ্ধে যে ঘাটতি দেখা দিয়েছে, অন্য দেশগুলো মধ্য মেয়াদের জন্য এই সরবরাহ ঘাটতির সুরাহা করতে পারে। তবে এ বছর সারের দাম ৬৯ শতাংশ বেড়ে যাওয়ার মানে হচ্ছে, চাষিরা কম সার ব্যবহার করবে, তাতে আগামীবারও ফলন কমবে।ইউক্রেইনে যুদ্ধ যত দীর্ঘ হবে, খাদ্য পণ্যের দাম বাড়তি থাকার সময়সীমাও ততই বাড়তে থাকবে বলে সতর্ক করেছে বিশ্বব্যাংক।
জাতিসংঘ এবং বিশ্বব্যাংক সর্বসাম্প্রতিক পৃথক পৃথক দুটি প্রতিবেদনে বলেছে, করোনা মহামারীর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ায় বিশ্ব বর্তমানে এমন ভয়াবহ অর্থনৈতিক এবং খাদ্য সংকটের দ্বারপ্রান্তে-যা কেউই গত কয়েক দশকেও দেখেননি। জাতিসংঘ বলছে, করোনার কারণে এমন খাদ্য সংকট বিশ্ব জুড়ে দেখা দেবে- যা গত ৫০ বছরেও দেখা যায়নি। আর পুরো বিশ্ব এমন এক পরিস্থিতির মুখোমুখি, যাতে দরিদ্র মানুষই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। জাতিসংঘ বিশ্বব্যাপী সরকারগুলোকে এই মর্মে সতর্ক করে দিয়েছে যে, ত্বরিৎ ও জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এই মহাদুর্যোগ মোকাবেলা সম্ভব হবে না। আর এটি সম্ভব না হলে সুদীর্ঘকাল ধরে বিশ্বের কোটি কোটি শিশুসহ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ নিদারুনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, যা এখন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে এ বছরেই করোনার কারণে বিশ্বে ৫ কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্য সীমার নিচে নেমে গেছেন।বিশ্ব অর্থনৈতিক সম্ভাবনা শীর্ষক প্রতিবেদনে বলেছে, বৈশ্বিক অর্থনীতি এ বছরে ৫ দশমিক ২ শতাংশ হারে সংকুচিত হবে। আর সামগ্রিক বৈশ্বিক অর্থনীতি এমন এক সুগভীর মন্দার মধ্যে পড়েছে, যার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আর দেখা যায়নি। সবচেয়ে উদ্বেগজনক হবে বিশ্বব্যাপী কৃষিতে যুদ্ধের প্রভাব। বৃহত্তর রাশিয়া প্রাকৃতিক গ্যাস এবং পটাশসহ গুরুত্বপূর্ণ সার উপাদান গুলোর একটি বড় সরবরাহকারী।
২০২১ সালে ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা ও পরিবহন খরচ এবং ২০২১ সালে বেলারুশের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে সারের দাম ইতোমধ্যেই প্রকারভেদে দ্বিগুণ বা তিনগুণ বেড়েছে, যা বিশ্বে পটাশের ১৮ শতাংশ উৎপাদন করে। পরামর্শক সংস্থা ক্রু’র হামফ্রে নাইট সতর্ক করেছেন, যেহেতু রাশিয়া পটাশের বৈশ্বিক উৎপাদনের ২০ শতাংশ সরবরাহ করে থাকে,নিশ্চিত ভাবে এর মূল্য আরও বাড়বে। এবং তাই এই মূল্য বৃদ্ধির প্রভাব বিশ্বের প্রতিটি কৃষি অঞ্চলে অনুভূত হবে। এছাড়াও খাদ্য সংকটের এই ধাক্কাটি মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা এবং এশিয়ার কিছু অংশে সবচেয়ে তীব্রভাবে অনুভ‚ত হবে, যেখানে প্রায় ৮ কোটি মানুষ কৃষ্ণ সাগরের গমের উপর অনেক বেশি নির্ভর করে। এর মধ্যে রয়েছে তুরস্ক, যা দক্ষিণ ভ‚মধ্যসাগরের বেশিরভাগ অংশে ময়দা সরবরাহ করে। মিশর সাধারণত তার ৭০ শতাংশ গম রাশিয়া এবং ইউক্রেন থেকে ক্রয় করে। বাকি ৩০ শতাংশের অর্ধেকই একা লেবান গম আমদানি করে। ইউক্রেনের ভুট্টা, সয়াবিন এবং উদ্ভিজ্জ তেল ছাড়া অন্য অনেকেই খুব কাজ চালাতে পারে।ভার্দে এগ্রিটেকের ক্রিস্টিয়ানো ভেলোসো বলেন, মাংস এবং কৃষি পণ্যের অন্যতম বিশাল উৎপাদক ব্রাজিল রাশিয়া বা বেলারুশ থেকে তার পটাশের ৪৬ শতাংশ আমদানি করে। সার এবং জ্বালানির উচ্চতর মূল্য সর্বত্র কৃষকদের প্রান্তিক আয়কে সঙ্কুচিত করবে।