বৃদ্ধাকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে মাথা ফাটালো পুত্রবধূ


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


বৃদ্ধাকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে মাথা ফাটালো পুত্রবধূ

শেরপুর প্রতিনিধি: শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধাকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বাসা থেকে বের করে পাকা রাস্তায় ফেলে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে তারই পুত্রবধূ ও নাতি। শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে পৌর শহরের উত্তর বাজারস্থ ৩নং ওয়ার্ডে ঘটনার সময় ধারণ করা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় মাথা ফেটে যায় বৃদ্ধার। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নালিতাবাড়ি হাসপাতাল ও পরে শেরপুর হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানায়, শহরের ওই মহল্লার মেইন রোড সংলগ্ন অমল কান্তি গাঙ্গুলি দুই ছেলে, এক কন্যা ও স্ত্রী রেখে গত বছরের ১৫ মে মারা যান। অমল কান্তির মৃত্যুর পর বড় ছেলে অসীম গাঙ্গুলি (৫৫) বাসার সবটুকু জমি তার নামে লেখা রয়েছে বলে দাবি করেন। শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) এ নিয়ে আবারও বিবাদ শুরু হলে বড় পুত্রবধূ উমাকে মারধোর করে বৃদ্ধা অঞ্জলী। পরে পুত্রবধূ ও নাতি মিলে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বৃদ্ধা অঞ্জলিকে রাস্তায় ছুড়ে ফেলে। 

বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি পর্যন্ত গড়ালে সামাজিক বিচারে ছোট ভাই অনুজ গাঙ্গুলি (৫২) ও বড় ভাই অসীম গাঙ্গুলির মাঝে হিন্দু রীতি অনুযায়ী সমানভাবে ভাগ করে বাসার সীমানা ইটের দেয়াল তুলে বাউন্ডারি করে দেওয়া হয়। এছাড়া পিতার জীবদ্দশায় তার কাছ থেকে কৌশলে লিখে নেওয়া বাসার সবটুকু জমির অর্ধেক ছোট ভাইকে লিখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু বড় ভাই অসীম গাঙ্গুলি লিখে দিতে গড়িমসি করায় তাদের বৃদ্ধা মা অঞ্জলী গাঙ্গুলি বিষয়টি সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সামনে থাকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দেন। শুক্রবার বৃদ্ধা অঞ্জলী বড় ছেলের অংশে বাসায় প্রবেশ করলে পুত্রবধূ উমা গাঙ্গুলি ও নাতি ঐহী গাঙ্গুলি বৃদ্ধাকে ঘাড় ধরে বাসা থেকে বের করে দেয়। এসময় নাতি ঐহী ঘাড় ধরে সজোরে সামনে থাকা পাকা রাস্তায় তার দাদীকে ছুঁড়ে ফেলে। বৃদ্ধা রাস্তায় আছড়ে পড়ার সাথে সাথেই মাথা ফেটে রক্ত বের হতে থাকে। এসময় প্রত্যক্ষদর্শীরা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে এর আগে বড় ভাই অসীমের দোকানের সামনে অবস্থান করা বৃদ্ধা অঞ্জলীকে সড়িয়ে দিতে গেলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে পুত্রবধূ ও নাতির উপর লাঠিপেটা করেন বলে পাল্টা অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে এ ঘটনার দৃশ্য কে বা কারা মোবাইলে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে মুহূর্তেই সমালোচনার ঝড় ওঠে। আশপাশের মানুষ বাসার সামনে জড়ো হতে থাকে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।

এ বিষয়ে না‌লিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বছির আহমেদ বাদল ব‌লেন, ঘটনা জানার পর পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। সামাজিক মীমাংসার ব্যবস্থা হওয়ায় এ নিয়ে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেয়নি পরিবার।

এসএ/