এক পায়ে ১ কিলোমিটার হেঁটে স্কুলে যায় শিশু মেয়েটি


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


এক পায়ে ১ কিলোমিটার হেঁটে স্কুলে যায় শিশু মেয়েটি

আমাদের চারপাশে এমন অনেকে আছে যারা শাররিকভাবে অক্ষম হলেও তাদেরকে দামিয়ে রাখতে পারেনি কোন প্রতিবন্ধকতা, তাদের কাজ দিয়ে অনুপ্রেরণার উৎস হয় অন্যান্য প্রতিবন্ধী শিশুদের। তাদেরই একজন ১০ বছর বয়সি সীমা। অন্য অনেক শিশুর মত সীমাও স্কুলে যায়। তবে, সে কোনো সাধারণ মেয়ে নয়। এক পায়ে হেঁটে প্রতিদিন ১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে স্কুলে যেতে হয় তাকে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অদম্য মানসিক শক্তির অধিকারী সীমার বাড়ি ভারতের বিহারের মাওবাদী আক্রান্ত জামুই জেলায় খাইরা ব্লকের ফতেহপুর গ্রামে। দুই বছর আগে এক সড়ক দুর্ঘটনায় পা হারায় সীমা। কিন্তু, নিজের সাহস হারায়নি। এক পায়ের সাহায্যেই প্রতিদিন স্কুলে পৌঁছে নিয়মিত ক্লাস করে সীমা।

স্থানীয় রবিচন্দ্র জানান, ‌‘তাঁদের রাজ্য চরমপন্থিদের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এর মধ্যেও এক পায়ে এক কিলোমিটার হেঁটে স্কুলে যাওয়ার মেয়েটির যে অদম্য ইচ্ছা, তা সবাইকে অবাক করে দেয়।’

সীমা জানায়, ‘আমি শিক্ষক হয়ে আশপাশের এলাকার লোকদের শিক্ষিত করতে চায়।’

সীমার মা বেবী দেবী জানান, ‘আমার স্বামী খিরান মাঞ্জি একজন অভিবাসী শ্রমিক। তিনি প্রতি মাসে যে সামান্য পরিমাণ পাঠান, তা দিয়ে পুরো পরিবারের খরচ চলে। সীমা আমার ছয় সন্তানের মধ্যে মেজ মেয়ে।’

সীমার শিক্ষক শিবকুমার ভগত জানান, ‘সীমাকে কখনোই দুর্ঘটনায় তার পা হারানোর জন্য ভেঙে পড়তে দেখেননি। ববং তিনি তার মধ্যে সবসময় এক ধরনের আত্মবিশ্বাস দেখেছেন।’

সীমার পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ় সংকল্পে খুশি গ্রামবাসীরাও। 

সীমার গ্রামের করণ মাঞ্জি জানান, ‘সীমা তার বয়সি অনেক মেয়ের কাছে এখন রোল মডেল। তাঁরা মেয়েটির পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।’

এদিকে, সীমার এক পায়ে হেঁটে স্কুলে যাওয়ার একটি ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। মুহূর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায় ওই ভিডিও। অনেকেই তার অদম্য লড়াইয়ের প্রশংসা করেছেন। ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পর বিহারের সরকারি কর্মকর্তারা সীমার স্কুলে যান এবং তাকে একটি তিন চাকার সাইকেল উপহার দেন। এখন তিন চাকার সাইকেলে বসা সীমার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছে।

এসএ/