ইউরোপের মুকুট আবারও রিয়ালের
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
সাল ২০১৮ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হারের প্রতিশোধ নেওয়া হলো না লিভারপুলের। আবারো সালাহ-মানের স্বপ্ন ভেঙে ইউরোপ সেরার মুকুট উঠল রিয়াল মাদ্রিদের মাথায়।
শনিবার (২৮ মে) দিবাগত রাতের ফ্রান্সের প্যারিসে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে লিভারপুল ও রিয়াল মাদ্রিদের মহারণে গোল করে রিয়ালকে লিড এনে দেন ব্রাজিলিয়ান তারকা ভিনিসিয়াস জুনিয়র। কিন্তু নায়ক হয়ে রইলেন গোলরক্ষক থিবো কর্তোয়াও, কারণটা তার দুর্দান্ত সব সেভ। আর এতেই ১-০ গোলের জয় নিয়ে রেকর্ড ১৪তম বারের মতো ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন হল বেনজেমারা।
রিয়াল জয় পেরেও ম্যাচের পরিসংখ্যান দেখলে যে কারও চোখ কপালে উঠবে। সালাহ-মানেরদের আক্রমণে রীতিমত কোণঠাসা ছিল রিয়াল। মোট মাত্র ৪ শটের দুটি লক্ষ্যে রাখতে পেরেছিল রিয়াল। অন্যদিকে ২৪টি শট নেয় লিভারপুল, যার ৯টি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে। তবে শর্ট যতই নিক না কেন জালে না জড়াতে পারলে সবই বৃথা।
‘প্যারিসে ম্যাচটিতে প্রথমার্ধে লিভারপুলের আক্রমণের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি রিয়াল। তবে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন থিবো কর্তোয়া। ম্যাচের ১৬ মিনিটের মাথায় মোহামেদ সালাহর ক্লোজ রেঞ্জ শট বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে ফেরান রিয়াল গোলরক্ষক। ২১তম মিনিটে সাদিও মানে তো গোলই পেয়েই যাচ্ছিলেন, এবারও কর্তোয়ায় বেঁচে যায় রিয়াল। ৪২তম মিনিটে সতীর্থের বাড়ানো থ্রো বল একদম এলিসনের সামনে পেয়ে গিয়েছিলেন বেনজেমা। দুই তিনবার লিভারপুল গোলরক্ষককে কাটিয়ে শট নেওয়ার জায়গা পাননি, পড়ে যাওয়ার সময় আলতো করে বল ঠেলে দেন ভালভার্দের দিকে। ভালভার্দেও ঠিকমতো শট নিতে পারেননি, বল গড়িয়ে আবার চলে যায় বেনজেমার পায়ে। এবার আর ভুল করেননি ফরাসি ফরোয়ার্ড, জড়িয়ে দেন জালে। কিন্তু অফসাইডের কারণে গোলটি পায়নি রিয়াল। ফলে গোলশূন্য ড্র নিয়ে বিরতিতে যায় দুই দল।’
‘দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণের ধারা ধরে রাখে লিভারপুল। রিয়ালের ত্রাতা ছিলেন সেই কর্তোয়া। ৫৪তম মিনিটে আলেকজান্ডার-আর্নল্ডের শট ঝাঁপিয়ে পড়ে এক হাতে বের করে দেন রিয়াল গোলরক্ষক। এর কিছুক্ষণ পরই খেলার ধারার বিপরীতে গোল তুলে নেয় আনচেলত্তির দল। ৫৯তম মিনিটে ভালভার্দের পাস বক্সের মাঝে বেনজেমাকে পার করে খুঁজে পায় ভিনিসিয়াস জুনিয়রকে। আলতো ছোঁয়ায় সেটি জাল ঠেলে দেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। তাতে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল। গোল শোধে মরিয়া লিভারপুল আক্রমণের পর আক্রমণ করতে থাকে। ৬৪তম মিনিটে সালাহর বাঁ পায়ের বুলেট গতির শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ফেরান কর্তোয়া। ৮২তম মিনিটে বল পায়ে নিয়ে গিয়ে কর্তোয়াকে একা পেয়ে গিয়েছিলেন মিসরীয় ফরোয়ার্ড।এবারও অতিমানবীয় এক সেভ করেন রিয়াল গোলরক্ষক। সালাহর ডান পায়ের শট চোখের পলকে এক হাতে কোনোমতে বাইরে বের করে দেন কর্তোয়া। আরও একবার নিশ্চিত বিপদ থেকে বাঁচে রিয়াল। বাকি সময়ে লিভারপুল কেবল আক্রমণই শানিয়েছে, কিন্তু সত্যিকারের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি আর। আসরে সর্বোচ্চ ১৫ গোল করা এবং মৌসুমে রিয়ালের সব সাফল্যের মূল নায়ক বেনজেমা শেষে গোল করে মুহূর্তটা আরও রাঙানোর সুযোগ পেয়েছিলেন, তবে কাজে লাগাতে পারেননি।এই ব্যর্থতা ম্লান হয়ে যায় শিরোপা হাসির কাছে। পাঁচ মিনিট যোগ করা সময়ের পর শেষের বাঁশি বাজতেই সেই চেনা দৃশ্য, হতাশায় মুখ ঢেকে নুয়ে পড়লেন লিভারপুলের অনেকে। আর পাশেই উল্লাসে ফেটে পড়ল রিয়ালের কোচ, খেলোয়াড় এবং গ্যালারির দর্শকরা।’
এসএ/