পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান যেন দুর্ঘটনায় পরিণত না হয়: প্রধানমন্ত্রী


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান যেন দুর্ঘটনায় পরিণত না হয়: প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশের বহুল প্রত্যাশিত স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন আগামী ২৫ জুন। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের উৎসব শুধু পদ্মাপাড়ে হবে না, সারা বাংলাদেশে উৎসবটা করবেন। তবে উৎসব করতে গিয়ে যেন দুর্ঘটনা না ঘটে, সে জন্য সবাইকে ধৈর্য ধারণ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) সকালে পল্লী জনপদ রংপুর এবং বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বাপার্ড) কোটালীপাড়া গোপালগঞ্জের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে রংপুর ও কোটালীপাড়া প্রান্তে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এই আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘আমি চাচ্ছি বাংলাদেশের প্রত্যেক জেলায় পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী দিনে উৎসব হোক। কারণ এটা আমাদের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জের ব্যাপার ছিল। বিশ্বের সব থেকে খরস্রোতা নদী আমাজন, তারপর হচ্ছে পদ্মা। আমরা এখানে সেতু করতে পারি এটা অনেকেরই ধারণা ছিল না। এটা দ্বিতল সেতু—নিচ দিয়ে ট্রেন যাবে, উপর দিয়ে গাড়ি যাবে। এটা একটা কঠিন কাজ। পৃথিবীতে এই ধরনের কাজ বোধ হয় এটাই প্রথম। এখানে যেসব মেশিনারিজ ব্যবহার করা হয়, এটা বোধ হয় আর কোথাও হয়নি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে পদ্মা সেতু নির্মাণ হয়ে গেছে, যে দক্ষিণাঞ্চল সারাজীবন অবহেলিত তা আর অবহেলিত থাকবে না। কারণ, এই যোগাযোগ ব্যবস্থা একটা জায়গায় যদি হয় তাহলে সেখানকার অর্থনৈতিক অবস্থা এমনিই উন্নত হয়, সেটা হল বাস্তবতা।’

সেতু নির্মাণের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা ড. ইউনুসের দিকে ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশেরই একজন, যে আমার কাছ থেকে সব থেকে বেশি সুযোগ পেয়েছে। সব থেকে বেশি সুযোগ-সুবিধা যে আমার কাছ থেকে নিয়েছে, তারই বেইমানির কারণে এই পদ্মা সেতুর টাকাটা বন্ধ হয়ে যায়।’
দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘আমি যখন ঘোষণা দিয়েছিলাম দেশের টাকায় পদ্মা সেতু করবো, দেশের সাধারণ মানুষ পর্যন্ত তারা পাশে দাঁড়িয়েছিল। বলেছিল, যা যা আছে আমরা দেব, নিজের টাকায় করবো। অনেকে আমাকে চেকও পাঠিয়েছে। যদিও আমি ভাঙ্গি নাই। সেগুলো রেখে দিয়েছি। এভাবে মানুষের যে অভূতপূর্ব সাড়া, এটাই আমাকে সাহস জুগিয়েছিল। এটাই আমাকে শক্তি জুগিয়েছিল। কারণ মানুষের শক্তিতেই আমি বিশ্বাস করি এবং আজকে সেই পদ্মা সেতু সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি করতে পেরেছি।'

তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু নিয়ে কত কথা, কত অপবাদ দেয়ার চেষ্টা করেছে। কানাডা কোর্ট মামলার রায় দিয়েছে যে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক যে সমস্ত অভিযোগ এনেছে সব ভুয়া মিথ্যা দুর্নীতির কোনো অভিযোগই এখানে টেকেনি। আমাদের পক্ষে রায় পেয়ে গিয়েছিলাম।’

দেশের মানুষের সার্বিক উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘জাতির পিতা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ে তোলা। ইনশাআল্লাহ, এখন আমরা সোনার বাংলা গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছি। উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। সামনের দিকে আরও আমরা এগিয়ে যাব। বাংলাদেশে একটা মানুষও গৃহহীন থাকবে না, একটা মানুষও অভুক্ত থাকবে না, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’

স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে গোপালগঞ্জ প্রান্তে আরও উপস্থিত ছিলেন এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মশিউর রহমান, বাপার্ড পরিচালনা পর্ষদের সদস্য শেখ কবির হোসেন।

ওআ/