কর্মকর্তা নিজেই জানেন না তার ব্যক্তিগত নম্বর চসিকের কন্ট্রোল রুমে!


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


কর্মকর্তা নিজেই জানেন না তার ব্যক্তিগত নম্বর চসিকের কন্ট্রোল রুমে!

প্রবল বর্ষণে পাহাড় ধস কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগে সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার জন্য কন্ট্রোল রুম খুলেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগের জন্য দেয়া হয়েছে চসিকের দুই কর্মকর্তার ব্যক্তিগত দুটি মোবাইল নম্বর। অথচ চসিকের এমনসিদ্ধান্তের ব্যাপারে জানেনই না সেই কর্মকর্তারা। 

সোমবার (২০ জুন) সকালে চসিকের খোলা কন্ট্রোল রুমের দুটি নম্বরে কল দিলে একটি বন্ধ পাওয়া যায়। অপর নম্বরে কল দিলে ফোন ধরেন ফারুক ওমর নামে চসিকের এক কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, গত রোববার রাত থেকে ১৫০ থেকে ১৬০ টার বেশি কল রিসিভ করেছি। প্রথম কলটা যখন আসে আমি দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যাই। কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগের জন্য আমার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর দেয়া হয়েছে অথচ সেটি আমাকে জানানোই হয়নি। আমার কাছ থেকে চসিকের কেউ অনুমতিও নেয়নি। কন্ট্রোল রুমে টিএন্ডটি নম্বর দিতে পারতো। অথচ অনুমতি ছাড়া একেবারে ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর দেয়া দুঃখজনক। 

ব্যক্তিগত জীবনের জন্য এটা একটা হ্যারেজমেন্ট। কাল সারারাত ঘুমাতে পারিনি। নম্বর যেহেতু দিয়ে ফেলেছে, সহযোগিতা চেয়ে মানুষ যেহেতু যোগাযোগ করছে, যথাসাধ্য সহযোগিতা দেয়ার চেষ্টা করছি। অপর নম্বর বন্ধ কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনুমতি ছাড়া কারো ব্যক্তিগত নম্বর কন্ট্রোল রুমে দিলে মোবাইল বন্ধ রাখাটাই স্বাভাবিক। নম্বরটা কার আমার
জানা নেই। তবে তিনি হয়তো বিরক্ত হয়েই মোবাইল বন্ধ করে রেখেছেন। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে ,ভারি বর্ষণে নগরের আকবরশাহ এলাকায় পৃথক দু’টি পাহাড় ধসের ঘটনায় চারজন প্রাণ হারিয়েছেন। 

এভাবে পাহাড় ধস কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগে সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। আট ঘণ্টা করে চসিকের সচিবালয়সহ অন্যান্য শাখার সদস্যদের নিয়ে তিনটি টিম রোস্টার ভিত্তিতে কন্ট্রোল রুমে কাজ করছে। অপরদিকে মাঠে রেডক্রিসেন্ট ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবক কর্মীরা বিভিন্ন টিমে বিভক্ত হয়ে কাজ করছে। বর্তমানে ৩০০ জনেরও বেশি সদস্য মাঠে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন।

জানা গেছে, গত রোববার রাতে নগরের হালিশহর ওয়াপদা এলাকায় পানি নামছিল না। সেখানেও চসিকের টিম কাজ করেছে। পানি প্রবাহ সচল রাখার জন্য এখনো সেখানে কাজ চলছে। পাশাপাশি বৃষ্টির সাথে জোয়ারের পানি যোগ হয়েছে। জোয়ার থাকায় কর্ণফুলী দিয়ে শহরের পানি নামতে পারছে না। বাঁধ খোলার চেষ্টা চলছে। কয়েকটা বাঁধ সরানো এখনো সম্ভব হয়নি। মহেশখালে একটা বাঁধ আছে, হিজড়া খালের রেল ব্রিজের নিচে একটা বাঁধ আছে। সেগুলো সরানো যায়নি। পানি যাতে সরে যেতে পারে সেই জন্য কাজ চলমান আছে। চসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মীরা সেখানে আছে। স্কেভেটরসহ অন্য যন্ত্রও কাজেলাগানো হয়েছে।

ফারুক ওমর বলেন, সোমবার সকালে নগরের ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ড থেকে কল এসেছিল। সেখানে খাল ও ছরা দিয়ে প্রচুর বৃষ্টির পানি বের হচ্ছে। এতে করে ছাত্র- ছাত্রীরা বাসা থেকে বের হতে পারছিল না। এরমধ্যে কুলগাও স্কুলে আজ একটা পরীক্ষা ছিল। অভিভাবকরা স্কুল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে তারা বলেছেন ছাত্র- ছাত্রীরা আসতে পারুক আর না পারুক তারা পরীক্ষা নেবেন। তারপর প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে টিম পাঠানো হয়েছে। এর বাইরে আপাতত কোন ঘটনার খবর আমার কাছে নেই।

জি আই