পদ্মা সেতুতে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে: প্রধানমন্ত্রী


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


পদ্মা সেতুতে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে: প্রধানমন্ত্রী

পদ্মা সেতুর কারণে দক্ষিণাঞ্চলে শিল্পায়নের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মানুষের আর্থিক উন্নয়ন হবে। আপনাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আমি মনে করি, ২১টি জেলার মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়ে যাবে।’

সোমবার (২৭ জুন) সকালে সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যার্থে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে আর্থিক অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করে তিনি এ কথা বলেন।

গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে অনুদানের চেক হস্তান্তর করেছে। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস অনুদান গ্রহণ করেন।

সরকারের প্রচেষ্টা দেশের দারিদ্র্য বিমোচন ও মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি করা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশকে উন্নত করে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া; যাতে বিজয়ী জাতি হিসাবে বিশ্বের দরবারে এ দেশের মানুষ মাথা উঁচু করে সম্মানের সঙ্গে চলতে পারে।’

১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘যত্রতত্র শিল্প না, আমরা পরিবেশ-প্রতিবেশের দিকে দৃষ্টি রেখে সব রকমের সুযোগ রেখে শিল্পাঞ্চল গড়ে তুলছি।’

কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে জমি সীমিত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নয়নও করতে হবে, পাশাপাশি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তাও দিতে হবে। খাদ্য নিরাপত্তার জন্য কৃষি উৎপাদন যাতে ব্যাহত না হয় এবং কৃষি জমি রক্ষার দিকে লক্ষ্য রেখে শিল্পাঞ্চল গড়ে তুলছি।’

খাদ্য নিরাপত্তা, শতভাগ বিদ্যুতায়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একসময় বলা হতো বাংলাদেশে গ্যাস বাড়ছে। প্রকৃতপক্ষে তা নেই, তারপরও আমরা আমাদের অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছি। এলএনজি আমদানি করে শিল্প কারখানা চলতে পারে, সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

করোনাভাইরাসের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টার মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেইসঙ্গে বন্যা। সমস্যা আসবেই। সেটা মোকাবিলা করে আমাদের চলতে হবে।’

মানুষের জীবনযাত্রা যাতে ব্যাহত না হয়, সেদিকে সরকার খেয়াল রাখে জানিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘প্রকৃতি তার আপন খেয়ালে চলে। এতে মানুষের কোনও হাত থাকে না। সিলেট বিভাগে পর পর তিনবার বন্যা হয়। হাওর অঞ্চলে আমাদের কিছু ফসলও নষ্ট হয়েছে। পানিটা নেমে আসার সময় নেত্রকোনা থেকে শুরু করে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, রংপুর, জামালপুরসহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টি কম হওয়ায় এখন মানুষের দুর্ভোগ কম। কিন্তু মানুষের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাটসহ ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়েছে।’

ত্রাণ তহবিলে অনুদান দেওয়ায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কোনও দুর্যোগ-দুর্বিপাক হলেই আপনারা নিজ উদ্যোগে এগিয়ে আসেন এবং আর্তমানবতার সেবায় পদক্ষেপ নেন এবং তাদের জন্য কিছু করেন। এটা বিরাট মানবিক গুণ।’

উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘রফতানি বহুমুখী করতে হবে। নতুন নতুন পণ্য আমাদের রফতানির ব্যবস্থা করতে করতে হবে। সেখানে কৃষিপণ্যকে গুরুত্ব দিতে পারি। নতুন নতুন জায়গা খুঁজে বের করা, কোন দেশে কৃষিপণ্যের চাহিদা বেশি, সেটা উৎপাদন করে রফতানি করতে পারি। সেটারও যেমন ব্যবস্থা নেবো, সেই সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি করে দেবো, যাতে নিজস্ব বাজার গড়ে উঠে।’

সরকার তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পায় সেই দিকে খেয়াল রেখে নীতিমালা করে বলে জানান সরকারপ্রধান। করোনার প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় সবাইকে সচেতন হওয়ার অনুরোধও জানান প্রধানমন্ত্রী।

ওআ/