সমুদ্রপথে পাকিস্তান-বাংলাদেশ সরাসরি জাহাজ চলাচল শুরু

প্রথমবারের মতো করাচি ও চট্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি সমুদ্রপথে শিপিং সেবা চালু করেছে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে পণ্য পরিবহনের সময় প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে, খরচও কমেছে উল্লেখযোগ্যভাবে। এতে দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই দেশের বাণিজ্যিক যোগাযোগে বাস্তব অগ্রগতি এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম সামা টিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদন অনুসারে, পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার জাতীয় পরিষদে জমা দেওয়া এক লিখিত প্রতিবেদনে এই তথ্য উপস্থাপন করেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি জানান, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতায় ইতিবাচক গতি এসেছে। নতুন শিপিং রুট চালুর ফলে করাচি থেকে চট্টগ্রামে পণ্য পৌঁছাতে এখন সময় লাগছে মাত্র ১০ দিন, যা আগে ছিল ২৩ দিন। এতে লজিস্টিক কার্যক্রমের দক্ষতা বেড়েছে এবং পরিবহন ব্যয়ও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
অন্য এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপে বাংলাদেশ ২০২৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে পাকিস্তানি পণ্যের জন্য বন্দরগুলোতে ১০০ শতাংশ পরিদর্শন বাধ্যবাধকতা তুলে নিয়েছে। ইসহাক দার এ সিদ্ধান্তকে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘যুগান্তকারী অগ্রগতি’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এর ফলে দুই দেশের মধ্যে আস্থা বাড়বে এবং পণ্য পরিবহনের গতি আরও ত্বরান্বিত হবে। কাস্টমসে বিলম্ব কমে যাওয়ায় পাকিস্তানি রপ্তানি এখন বাংলাদেশের বাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠবে।
বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে ইসহাক দার জানান, ২০২৪ সালের ২৭ অক্টোবর ঢাকায় অনুষ্ঠিত নবম যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন (জেইসি) বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও যোগাযোগ বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
বিজ্ঞাপন
এর ধারাবাহিকতায় ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে হওয়া এক চুক্তির ভিত্তিতে পাকিস্তান ইতোমধ্যে বাংলাদেশে ৫০ হাজার টন চাল রপ্তানি করেছে এবং মোট ২ লাখ টন চাল রপ্তানির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তিনি নিশ্চিত করেছেন, এই কাঠামোর অধীনে আগামী মাসগুলোতেও চাল রপ্তানি অব্যাহত থাকবে।
লিখিত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ও ডেনিম এক্সপোতে পাকিস্তানের দুই শতাধিক কোম্পানি অংশ নিয়েছে, যা বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও উৎপাদন খাতে পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান আগ্রহের প্রতিফলন।
বিজ্ঞাপন
সরাসরি বিমান যোগাযোগের পরিকল্পনা চলছে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামুদ্রিক যোগাযোগের পাশাপাশি দুই দেশ এখন সরাসরি আকাশপথ চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইসহাক দার মতে, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে পাকিস্তানের দুটি বেসরকারি বিমানসংস্থাকে ঢাকা রুটে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দিয়েছে। উভয় পক্ষ এখন সময়সূচি ও লজিস্টিক চূড়ান্ত করার কাজ করছে। তার প্রত্যাশা, এই ফ্লাইট চালু হলে ব্যবসা ও পর্যটন—উভয় ক্ষেত্রেই দুই দেশের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে।








