Logo

শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য চাই নিরাপদ খাদ্য

profile picture
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৬ অক্টোবর, ২০২৫, ১৪:২৪
25Shares
শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য চাই নিরাপদ খাদ্য
ফাইল ছবি।

বিজ্ঞাপন

প্রকৃতপক্ষে সকলের সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমেই নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহ সম্ভব যা সুস্থ্য, সবল জাতি গঠনের অন্যতম নিয়ামক। আমরা সবাই জানি, মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অত্যাবশ্যকীয় মৌলিক উপাদান সমূহের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো খাদ্য। খাদ্য ব্যতীত জীবনের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। কিন্তু সেই খাদ্যটি হতে হবে নিরাপদ, যা বিভিন্ন প্রকার রাসায়নিক বালাইনাশক যেমন: কীটনাশক, ছত্রাকনাশক ইত্যাদি এবং অন্যান্য দূষক যেমন: ভারী ধাতু, মাইকোটক্সিন ইত্যাদি হতে মুক্ত হবে অথবা এ সমস্ত দূষক সমূহের উপস্থিতি ক্ষতিকর পর্যায়ের নীচে থাকবে। অন্যদিকে যদি খাদ্য দ্রব্যে এ সমস্ত দূষক সমূহের উপস্থিতি ক্ষতিকর পর্যায়ের উপরে থাকে, তাহলে সেটি হয়ে যায় দূষিত খাদ্য। আর এ দূষিত খাদ্যই তৈরী করছে মানবদেহে ক্যান্সার সহ বিভিন্ন প্রকার রোগব্যাধি। জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা এর তথ্যমতে দেশে ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে শতকরা ৩৪ ভাগ কৃষক পরিবারের। কারণ কৃষকগণ প্রতিনিয়তই এ বিষাক্ত রাসায়নিক বালাইনাশকসমুহ তাদের ফসলে প্রয়োগ করে থাকেন কোনরকম স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা ব্যতিরেকেই।

আমরা প্রতিদিন যে সমস্ত খাদ্যদ্রব্য ভক্ষণ করে থাকি তার মধ্যে ফল-মূল ও শাকসবজি অন্যতম। ফল-মূল ও শাকসবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, ফাইবার, মিনারেল ইত্যাদি, যা মানুষের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটিয়ে থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতিদিন একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের অন্তত ৪০০ গ্রাম ফল-মূল ও শাকসবজি ভক্ষণ করা উচিত। কিন্তু উৎপাদনকারীরা এ সমস্ত ফল-মূল ও শাকসবজি উৎপাদন করতে যেয়ে সবচেয়ে বড় যে সমস্যার সম্মুখীন হন সেটি হলো রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ। কাজেই কৃষকেরা রোগবালাই ও পোকামাকড় দমনের জন্য প্রতিনিয়তই বিভিন্ন প্রকার রাসায়নিক বালাইনাশক ব্যবহার করে থাকেন। এ সমস্ত বালাইনাশকের ব্যবহার শুধুমাত্র ফসলের উৎপাদন খরচই বৃদ্ধি করে না বরং ফল-মূল ও শাকসবজিতে বালাইনাশকের অবশিষ্টাংশের উপস্থিতি পরিবেশ ও জনস্বাস্থের জন্য বিরাট হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ক্ষতিকর রাসায়নিক বালাইনাশকের প্রভাবে আজ জীব-বৈচিত্র্য হুমকীর সম্মুখীন হচ্ছে। ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রকারের মাছ সহ অন্যান্য অনেক প্রজাতির জীব।

কীটতত্ত্ব বিভাগ, বাংলাদশে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর বালাইনাশক বিশ্লেষণ গবেষণাগারের বিগত ১৮ বছরের ফলাফল হতে প্রতিয়মান হয় যে, বাজার হতে সংগৃহীত বিভিন্ন প্রকার সবজির নমুনা সমূহের মধ্যে শতকরা ১০-১২ ভাগ নমুনাতে প্রাপ্ত বালাইনাশকের অবশিষ্টাংশের পরিমাণ সর্বোচ্চ সহনীয় মাত্রার উপরে এবং বিশ্লেষণকৃত বিভিন্ন প্রকার ফলের নমুনা সমূহের মধ্যে শতকরা ৩-৪ ভাগ নমুনাতে প্রাপ্ত বালাইনাশকের অবশিষ্টাংশের পরিমাণ সর্বোচ্চ সহনীয় মাত্রার উপরে। সালাদ জাতীয় ফসল যেমন: ক্যাপসিকাম, লেটুসপাতা, ধনিয়া পাতা, গাজর ইত্যাদির ক্ষেত্রে শতকরা ১০-১৫ ভাগ নমুনাতে এবং পান ফসলের ক্ষেত্রে শতকরা ১০ ভাগ নমুনাতে প্রাপ্ত বালাইনাশকের অবশিষ্টাংশের পরিমাণ সর্বোচ্চ সহনীয় মাত্রার উপরে। ফসল উৎপাদনকারী তার ফসলকে পোকামাকড় ও রোগবালাইয়ের আক্রমণ হতে রক্ষা করত উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য অনুমোদিত রাসায়নিক বালাইনাশক ব্যবহার করবে এটাই স্বাভাবিক। তবে এই বিষাক্ত রাসায়নিক বালাইনাশক ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে সমস্ত নিয়ম কানুন রয়েছে সেগুলো অবশ্যই তাকে মেনে চলতে হবে। বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে আমাদের দেশে রাসায়নিক বালাইনাশকের ব্যবহার দিন দিন কমে আসছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্যমতে, হংকং, তাইওয়ান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ইত্যাদি দেশ সমূহ বাংলাদেশের তুলনায় যথাক্রমে ৯.৪, ৭.৫, ৭.৪, ৭.০ এবং ৬.৭ গুণ বেশি রাসায়নিক বালাইনাশক ব্যবহার করে থাকে। বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে আমাদের দেশে রাসায়নিক বালাইনাশকের ব্যবহার কম হলেও আমাদের দেশের কৃষকেরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে উত্তম কৃষি চর্চা অনুসরণ করেন না। যেমন: ফসলের রোগবালাই ও পোকামাকড় দমনের জন্য মাত্রাতিরিক্ত বালাইনাশক ব্যবহার করে থাকেন। এছাড়া একই ফসলে বার বার বালাইনাশক ব্যবহার করে থাকেন। সবচেয়ে প্রধান যে সমস্যাটি আমাদের দেশের কৃষকগণ করে থাকেন সেটি হলো বালাইনাশক প্রয়োগের পর অপেক্ষমান সময় (Pre-harvest interval, PHI) পর্যন্ত অপেক্ষা না করেই ফসল সংগ্রহ ও বাজারজাত করেন। ফলশ্রুতিতে প্রতিদিনই আমরা ভক্ষন করছি বিষাক্ত খাবার।

বিজ্ঞাপন

এখন আসুন জেনে নেয়া যাক বালাইনাশকের ফসল সংগ্রহ পূর্ব অপেক্ষমান সময় (PHI) বলতে কি বুঝায়, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে ফসল সংগ্রহ পূর্ব অপেক্ষমান সময় (PHI) এর কি প্রভাব এবং ফসল সংগ্রহ পূর্ব অপেক্ষমান সময় (PHI) এর বাস্তবায়নের জন্য কি করণীয়ঃ

ফসল সংগ্রহ পূর্ব অপেক্ষমান সময় (PHI) বলতে বুঝায় কোন ফসলে সর্বশেষ রাসায়নিক বালাইনাশক প্রয়োগের পর হতে ফসল সংগ্রহের পূর্বে ন্যূনতম কত দিন অপেক্ষা করলে বালাইনাশকের অবশিষ্টাংশের পরিমাণ সর্বোচ্চ সহনীয় মাত্রার (Maximum Residue Limit, MRL) নিচে চলে যাবে। এই অপেক্ষমাণ সময় ফসলভেদে ও বালাইনাশকের প্রকারভেদে বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। যেমন: সিনথেটিক পাইরিথ্রয়েড কীটনাশকের ক্ষেত্রে ৪-৬ দিন, অর্গানোফসফরাস কীটনাশকের ক্ষেত্রে ৭-২০ দিন, নিওনিকোটিনয়িড কীটনাশকের ক্ষেত্রে ৮-২২ দিন এবং কার্বামেট কীটনাশকের ক্ষেত্রে ২০-৪০ দিন অপেক্ষা করতে হয়। এই অপেক্ষমান সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করে যদি ফল-মূল ও শাকসবজি সংগ্রহ করা হয়, তবে ফল-মূল ও শাকসবজিতে ব্যবহৃত বালাইনাশক সমূহের অবশিষ্টাংশের মাত্রা ক্ষতিকর পর্যায় বা সর্বোচ্চ সহনীয় মাত্রার নিচে চলে যাবে। উল্লেখিত নিয়ম কানুন সমূহ মেনে উৎপাদনকারীগণ সহজেই বিষাক্ত বালাইনাশক ব্যবহার করেও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করতে পারেন।

আমাদের দেশের কৃষকগণ সাধারণত রাসায়নিক বালাইনাশক প্রয়োগের ১-২ দিন পরেই ফসল সংগ্রহ করে থাকেন, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত হুমকিস্বরূপ। আর এ কারণেই আমরা আক্রান্ত হচ্ছি নানা রোগব্যাধিতে। কাজেই অপেক্ষাকৃত কম বিষাক্ত বালাইনাশক ব্যবহারের পাশাপাশি ফসল সংগ্রহের পূর্বে বালাইনাশকের প্রকারভেদ ও ফসলের ধরণের উপর ভিত্তি করে একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করা অত্যাবশ্যকীয়। বর্তমানে বিশ্বের অনেক দেশেই যে সমস্ত বালাইনাশকের বিষাক্ততার মাত্রা অনেক বেশি সে সমস্ত বালাইনাশক সমূহের ব্যবহার দিন দিন কমিয়ে আনা হচ্ছে। এমনকি সে সমস্ত বালাইনাশক সমূহের ব্যবহার বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। আমাদের দেশে এখনও এমন অনেক বালাইনাশক ব্যবহৃত হচ্ছে যেগুলো উন্নত বিশ্বে আর ব্যবহৃত হচ্ছে না । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বালাইনাশকের Hazard এর উপর ভিত্তি করে যে শ্রেণীবিভাগ করেছে (সারনি-১) সেখানে নতুন একটি শ্রেণী রয়েছে যেটির নাম হলো ‘ট’- ‘U’- Unlikely to present acute hazard ।

বিজ্ঞাপন

এই শ্রেণীর বালাইনাশক সমূহের ক্ষেত্রে acute hazard এর সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কাজেই কৃষি বিজ্ঞানীগণ তাদের গবেষণা কর্মে এই গ্রুপের বালাইনাশক সমূহের উপর গবেষণা জোরদার করার মাধ্যমে ফসলের বিভিন্ন প্রকার পোকামাকড় ও রোগবালাই দমনের জন্য কার্যকরী বালাইনাশক সমূহ এ গ্রুপ থেকে নির্বাচন করতে পারলে উপকৃত হবেন ভোক্তাগণ । কারণ এ গ্রুপের বালাইনাশক সমূহের বিষাক্ততা একবারেই কম। ইতোমধ্যেই কীটতত্ত্ব বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, গাজীপুর এর বিজ্ঞানীগণ উক্ত গ্রুপের বালাইনাশক সমূহ অন্তর্ভুক্ত করে নানা গবেষণা কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। কৃষি বিজ্ঞানীগণ যে সমস্ত কম বিষাক্ত বালাইনাশক সমূহ চিহ্নিত করবেন, সে সমস্ত বালাইনাশক সমূহ মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের ব্যবহারের জন্য পরামর্শ প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবেন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাবৃন্দ।

বিজ্ঞাপন

বালাইনাশকের ফসল সংগ্রহ পূর্ব অপেক্ষমাণ সময় বিভিন্ন উপাদান যেমন: বালাইনাশকের ভৌতরাসায়নিক বৈশিষ্ট্য, বালাইনাশকের প্রকারভেদ, বালাইনাশকের প্রয়োগের পদ্ধতি, সংশিষ্ট ফসলের বৈশিষ্ট্য, বিভিন্ন প্রকার পরিবেশগত উপাদান যেমন, তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত, বায়ুপ্রবাহ ইত্যাদি দ্বারা প্রভাবিত হয়। কাজেই প্রতিটি দেশের পরিবেশগত অবস্থার উপর ভিত্তি করে বালাইনাশক সমূহের ফসল সংগ্রহ পূর্ব অপেক্ষমান সময় নির্ধারণ করা দরকার। এ লক্ষ্যেই ২০০৯ সাল থেকে কীটতত্ত্ব বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট এর বালাইনাশক বিশ্লেষণ গবেষণাগারে বিভিন্ন প্রকার বালাইনাশকের ফসল সংগ্রহ পূর্ব অপেক্ষমাণ সময় নির্ধারণের জন্য কাজ করে আসছে। উক্ত গবেষণাগার হতে প্রধান প্রধান শাকসবজিতে যে সমস্ত রাসায়নিক বালাইনাশকের ফসল সংগ্রহ পূর্ব অপেক্ষমান সময় নির্ধারন করা হয়েছে, সেগুলো সারনি-২ এ প্রদত্ত হলো।

ফসল সংগ্রহ পূর্ব অপেক্ষমান সময় (PHI) বাস্তবায়নের জন্য করণীয়

আমাদের দেশে PHI এর বাস্তব প্রয়োগ একটি বড় চ্যালেঞ্জ। PHI এর যথাযথ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রধান প্রতিবন্ধক সমুহ হলো: অপ্রশিক্ষিত উৎপাদনকারী, জনসচেতনতা এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব। উল্লেখিত প্রতিবন্ধকতা সমূহ দূর করার জন্য কৃষকগণকে প্রশিক্ষিত করতে হবে যেন তারা কম বিষাক্ত বালাইনাশক ব্যবহার করেন এবং বালাইনাশক ব্যবহারের পর ফসল সংগ্রহ পূর্ব অপেক্ষমান সময় অনুসরণ করেন। জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা যেতে পারে। জনগণ সচেতন হলে এর যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে নিরাপদ ফল-মূল ও শাকসবজি উৎপাদন করা সম্ভব। আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে কৃষকগণকে ফসল সংগ্রহ পূর্ব অপেক্ষমান সময় অনুসরণে অভ্যস্ত করা যেতে পারে। প্রকৃতপক্ষে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত কল্পে উৎপাদনকারী, বাজারজাতকারী, জনপ্রতিনিধি, ভোক্তা, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং আইন প্রনয়নকারী সং¯’া সকলকেই সচেতন হতে হবে। পরিশেষে বলা যায়, আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রয়াসই হলো নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের অন্যতম হাতিয়ার।

বিজ্ঞাপন

সারনি- ২:

বিভিন্ন প্রকার কীটনাশকের ফসল সংগ্রহ পূর্ব অপেক্ষমান সময় (Pre-harvest interval)

লেখক:

বিজ্ঞাপন

ড. মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন প্রধান

প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা

জেবি/এসডি
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD