এবার জেন-জি বিক্ষোভ ভারতে, বিজেপি কার্যালয়ে আগুন

বাংলাদেশ ও নেপালের পর এবার জেন-জি প্রজন্মের আন্দোলনের ঢেউ আছড়ে পড়েছে ভারতে। চীন সীমান্তঘেঁষা লাদাখে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ ইতোমধ্যেই ভয়াবহ সহিংসতায় রূপ নিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
রাজ্য মর্যাদা ও সাংবিধানিক সুরক্ষার দাবিতে ফুঁসে ওঠা তরুণদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত চারজন প্রাণ হারিয়েছেন। পাশাপাশি বিক্ষোভকারীরা ক্ষমতাসীন বিজেপির আঞ্চলিক কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) থেকে লাদাখের রাজধানী লেহতে সহিংস রূপ নেয় দীর্ঘদিনের আন্দোলন। শান্তিপূর্ণ অনশন কর্মসূচি ভেঙে তরুণরা রাস্তায় নেমে সরকারি ভবন ও বিজেপি কার্যালয়ের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে। এ ঘটনায় নিহতদের পাশাপাশি আহত হয়েছেন বহু মানুষ। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পুলিশেরও বহু সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে নরেন্দ্র মোদি সরকার জম্মু-কাশ্মিরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা বাতিল করে। তখন লাদাখকে আইনসভাহীন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে রূপান্তর করা হয়। এতে স্থানীয় জনগণের প্রতিনিধিত্বের অধিকার পুরোপুরি কেড়ে নেওয়া হয়। আন্দোলনকারীরা এখন ষষ্ঠ তফসিলের আওতায় সাংবিধানিক সুরক্ষা এবং পূর্ণ রাজ্য মর্যাদা দাবি করছেন।
স্থানীয় সংগঠন লাদাখ এপেক্স বডির সমন্বয়ক জিগমাত পালজোর বলেছেন, “এটা লাদাখের ইতিহাসে সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন। যারা ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য রাস্তায় নেমেছিলেন, তাদের হত্যা করা হলো।”
অন্যদিকে শিক্ষক ও আন্দোলনের পুরোধা সোনাম ওয়াংচুক এটিকে ‘জেন-জি বিপ্লব’ আখ্যা দিয়েছেন। তার মতে, বছরের পর বছর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি কোনো ফল না দেওয়ায় তরুণদের মধ্যে হতাশা জমে বিস্ফোরণে রূপ নিয়েছে। তিনি দাবি করেন, সহিংসতার ডাক তিনি দেননি, বরং সতর্ক করেছিলেন যে দাবি উপেক্ষা করা হলে তরুণদের ক্ষোভ ভয়াবহ হয়ে উঠবে।
বিজ্ঞাপন
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, পুলিশ আত্মরক্ষায় গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছে। সংঘর্ষে ৩০ জনেরও বেশি পুলিশ আহত হয়েছেন। সরকারের অভিযোগ, ওয়াংচুক তরুণদের উসকে দিচ্ছেন এবং বিদেশি আন্দোলনের দৃষ্টান্ত টেনে বিভ্রান্ত করছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কাশ্মির থেকে শুরু হওয়া অশান্তি এখন লাদাখেও ছড়িয়ে পড়েছে। সীমান্তবর্তী এ অঞ্চলে ভারত-চীন উত্তেজনা দীর্ঘদিন ধরেই বিরাজমান। নতুন করে ছড়িয়ে পড়া জেন-জি বিক্ষোভ মোদি সরকারের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।