এবার গাজায় সেনা পাঠিয়ে হামাস গোষ্ঠীকে শেষ করে দেওয়ার হুমকি ট্রাম্পের

ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে দখলদার ইসরায়েলি সেনাদের একাংশকে সরিয়ে নিতেই গৃহযুদ্ধের শঙ্কা জেগে উঠেছে এই ভূখণ্ডটিতে। গজিয়ে ওঠা নতুন গ্যাং ও ইসরায়েলি সহযোগীদের সঙ্গে সশস্ত্র সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস।
বিজ্ঞাপন
এ অবস্থায় এবার হামাসের বিরুদ্ধে চরমভাবে ফুঁসে উঠেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প; সামরিক হামলার হুমকিও দিয়েছেন। তবে তিনি এটাও বলেছেন, এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি অংশ নেবে না।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রাম্প লিখেছেন, যদি হামাস গাজায় মানুষ হত্যা চালিয়ে যায়, তাহলে তাদের মেরে ফেলা ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনো উপায় থাকবে না। বিষয়টির প্রতি মনোযোগ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ!
বিজ্ঞাপন
পরবর্তীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে ট্রাম্প স্পষ্ট করেন, এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি অংশ নেবে না। ট্রাম্প বলেন, এটা আমরা নিজেরা করব না। আমাদের সেটা করারও প্রয়োজন হবে না। এমন লোক আছে; খুব কাছেই আছে, যারা গিয়ে কাজটা সহজেই করে ফেলবে আমাদের তত্ত্বাবধানে। তিনি যদিও কোনো দেশের নাম বলেননি, তার ইঙ্গিত স্পষ্টতই ছিল দখলদার ইসরায়েয়েলের দিকেই।
অথচ, সপ্তাহের শুরুতে তিনি বলেছিলেন, গাজায় গ্যাং দমন অভিযানে হামাসের পদক্ষেপে তার কোনো আপত্তি নেই।মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ওরা কয়েকটা ভয়ংকর গ্যাং নির্মূল করেছে, খুবই খারাপ লোক ছিল তারা। হামাস তাদের মেরে ফেলেছে। আর সত্যি বলতে, এতে আমি তেমন বিরক্ত হইনি। এটা ঠিক আছে।
বিজ্ঞাপন
সম্প্রতি গাজায় হামাস ও স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। এসব গোষ্ঠীর সদস্যদের বিরুদ্ধে মানবিক সহায়তা লুটপাট ও ইসরায়েলের হয়ে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে। রোববারের ওই সংঘর্ষের পর গাজার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয়, যেসব গ্যাং সদস্য রক্তপাতের সঙ্গে যুক্ত ছিল না, তাদের সাধারণ ক্ষমা করা হবে।
এর আগে, গত জুন মাসে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা স্বীকার করেন, হামাসকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে তারা গাজার কিছু গ্যাংকে অস্ত্র দিয়েছে। এর মধ্যে ইসলামিক স্টেট (আইএসআইএল বা আইএসআইএস) এর ঘনিষ্ঠ গোষ্ঠীও ছিল।
এদিকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসও হামাসের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তার অভিযোগ, হামাস সন্দেহভাজন ইসরায়েলি সহযোগীদের হত্যা করেছে, যা ভয়াবহ অপরাধ।
বিজ্ঞাপন
আব্বাসের দপ্তর এক বিবৃতিতে জানায়, এটি মানবাধিকারের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং আইনের শাসনের নীতির ওপর গুরুতর আঘাত।
তবে, গ্যাং ইস্যু ছাড়াও হামাসকে অন্য কারণেও হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। তার মধ্যস্থতায় করা যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, হামাসকে নিরস্ত্র হতে হবে এবং গাজার প্রশাসনে তাদের ভূমিকার অবসান ঘটাতে হবে। তবে, হামাস এসব শর্তে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মতি দিয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার ট্রাম্প আবারও সতর্ক করে বলেন, হামাস যদি স্বেচ্ছায় অস্ত্র না ফেলে, তাহলে জোর করে তা করানো হবে। তার ভাষায়, ‘তারা নিরস্ত্র হবে। আর যদি তা না করে, তাহলে আমরাই তাদের নিরস্ত্র করব, খুব দ্রুত, হয়তো সহিংসভাবেই।’ সূত্র: আলজাজিরা।