Logo

গাজায় নেতানিয়াহুর নির্দেশে ফের ইসরায়েলি হামলা, নিহত ১৮

profile picture
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৯ অক্টোবর, ২০২৫, ১১:৫৬
18Shares
গাজায় নেতানিয়াহুর নির্দেশে ফের ইসরায়েলি হামলা, নিহত ১৮
ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নতুন করে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ১৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহ ও খান ইউনুসে এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদনে বলা হয়, রাফাহ সীমান্ত এলাকায় এক বন্দুক হামলায় ইসরায়েলের এক সেনা সদস্য আহত হওয়ার পরপরই প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গাজায় পাল্টা হামলার নির্দেশ দেন। তার নির্দেশের পরপরই ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান গাজার বিভিন্ন স্থানে একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায়। স্থানীয় সূত্রের বরাতে আল জাজিরা জানায়, নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছে।

হামলার পরপরই ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সশস্ত্র শাখা ‘আল কাসাম ব্রিগেডস’ তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়। তারা অভিযোগ করে, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে এবং এই হামলার মাধ্যমে গাজায় চলমান মানবিক ত্রাণ কার্যক্রমকে আরও বিপন্ন করেছে। সংগঠনটি জানায়, ইসরায়েলের আগ্রাসনের কারণে গাজায় মৃতদেহ উদ্ধারের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং নিখোঁজ ১৩ জন ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ উদ্ধারে বিলম্ব ঘটছে।

কাসাম ব্রিগেডসের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েল যদি বড় ধরনের উস্কানি চালায়, তবে মৃতদেহ উদ্ধারের প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা শান্তি চুক্তি মেনে চলছি, কিন্তু ইসরায়েল তা লঙ্ঘন করছে।”

বিজ্ঞাপন

হামাস নেতা সুহাইল আল-হিন্দি আল জাজিরা-কে বলেন, “আমরা মরদেহ উদ্ধারে কিছু কারিগরি সমস্যার মুখে পড়েছি। কিন্তু এর মূল কারণ ইসরায়েলি বিমান হামলা। এই বিলম্বের দায় তাদেরই।”

অন্যদিকে, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে.ডি. ভ্যান্স এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন, যুদ্ধবিরতি এখনো কার্যকর রয়েছে। তিনি বলেন, “ছোটখাটো সংঘর্ষ হতে পারে, তবে শান্তি প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে বলে আমি মনে করি। গাজায় একজন ইসরায়েলি সৈন্য আহত হয়েছেন, ইসরায়েল প্রতিক্রিয়া জানাবে—এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সার্বিকভাবে যুদ্ধবিরতি টিকে আছে।”

তবে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে জানায়, যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর থেকে ইসরায়েল এখন পর্যন্ত অন্তত ৯৪ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। পাশাপাশি, উপত্যকাটিতে জরুরি খাদ্য, ওষুধ ও ত্রাণ সহায়তা প্রবেশ কঠোরভাবে সীমিত রেখেছে তেল আবিব।

বিজ্ঞাপন

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নতুন হামলার পর থেকে শহরের হাসপাতালগুলোতে চাপ বেড়েছে। অনেক জায়গায় চিকিৎসা সামগ্রী ও বিদ্যুতের ঘাটতির কারণে চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে। বেশ কয়েকটি হাসপাতাল আংশিকভাবে কার্যক্রম স্থগিত করেছে।

হামাস তাদের সর্বশেষ বিবৃতিতে বলেছে, তারা যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চলছে এবং রাফাহে ইসরায়েলি সেনা আহত হওয়ার ঘটনায় তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। সংগঠনটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়ে বলেছে, “গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠা ও মানবিক সহায়তা প্রবেশে জাতিসংঘ ও আঞ্চলিক শক্তিগুলোর আরও সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া জরুরি।”

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে, বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকা অবস্থায় এই নতুন হামলা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলবে। বিশেষ করে রাফাহ ও খান ইউনুস সীমান্ত এলাকা এখন মানবিক সংকটের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে।

এর আগে চলতি মাসের শুরুতে মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সীমিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়, যার আওতায় আহত বেসামরিক লোকদের সরিয়ে নেওয়া ও ত্রাণ সামগ্রী প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু সর্বশেষ হামলার ঘটনায় চুক্তিটির ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

জেবি/এসডি
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD