Logo

লন্ডনের রক্তচোষা গোরস্থান ঘিরে ভয়ঙ্কর যা জানা গেল

profile picture
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৪ নভেম্বর, ২০২৫, ১৮:৩২
26Shares
লন্ডনের রক্তচোষা গোরস্থান ঘিরে ভয়ঙ্কর যা জানা গেল
ছবি: সংগৃহীত

লন্ডনের হাইগেট গোরস্থান নাম শুনলেই যেন ভৌতিক এক আবহ চোখের সামনে ভেসে ওঠে। প্রাচীন সমাধি, ভাঙাচোরা দেয়াল আর রাতের গভীর নীরবতা সব মিলিয়ে এই জায়গাকে ঘিরে অদ্ভুত সব কাহিনি আছে। সিনেমার ড্রাকুলা বা টুয়াইলাইটের রোমান্টিক ভ্যাম্পায়ারকে ভুলিয়ে, বাস্তবের গল্পগুলোই যেন এখানে বেশি ভয় ধরায়।

বিজ্ঞাপন

১৮৩৯ সালে ভিক্টোরিয়ান রীতিতে নির্মিত এই গোরস্থান একসময় ছিল লন্ডনের অন্যতম সুন্দর সমাধিস্থল। কিন্তু ১৯৬০-এর দশকে অবহেলায় পড়ে এটি ভৌতিক পরিবেশে ভরে ওঠে। ঠিক তখন থেকেই বাড়তে থাকে রহস্য আর রক্তচোষার গল্প।

সোয়াইন লেন দিয়ে দুই কিশোরী বাড়ি ফিরছিল। হঠাৎ তারা দেখে গোরস্থানের গেটের ভেতর দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে অদ্ভুত এক ছায়া। এরপর সমাধির ফাঁক ফোকর থেকে বের হতে থাকে একের পর এক ছায়ামূর্তি। আতঙ্কে দৌড়ে পালায় তারা। সেই ঘটনার পরই এলাকায় শুরু হয় ভৌতিক এই গল্পের ঢেউ।

এক দম্পতি রাতের অন্ধকারে হাঁটছিলেন। গোরস্থানের ফটকের ওপাশে হঠাৎ উঁকি দেয় ভয়ঙ্কর একটা মুখ। চোখ দুটো আগুনের মতো জ্বলছিল। তারা দাবি করেন, কয়েক মুহূর্তের জন্য যেন সময় থেমে গিয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

১৯৭১ সালে এক তরুণী অভিযোগ করেন গোরস্থানের পাশের রাস্তায় তাকে ঝাপটে ধরেছিল লম্বা কালো এক ছায়ামূর্তি। মুখ ছিল ফ্যাকাসে সাদা, আর দেহ যেন অস্বাভাবিক ভারী।

১৯৬৯ সালে গবেষক ডেভিড ফেরান্ট গোরস্থান পরিদর্শনে গেলে কালো কোট আর টপ হ্যাট পরা ছায়ামূর্তিকে দেখেছিলেন বলে দাবি করেন। সমাধির আড়ালে মিলিয়ে যায় সেটি।

বিজ্ঞাপন

অনেক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন রাতে সাদা পোশাক পরা এক নারী পুকুরের কাছে ঘোরাফেরা করেন। কখনো হাসেন, কখনো কাঁদেন, কখনো দয়া চান।

গোরস্থানে বিভিন্ন সময় ছিন্নগলার শিয়াল পাওয়া গেছে। কেউ কেউ বলেন, ভ্যাম্পায়ার দীর্ঘ বিশ্রাম শেষে ১৯৬০-এর দশকে আবার সক্রিয় হয়।পরে আশপাশ থেকে রক্তশূন্য মানুষের দেহও মিলেছে বলে দাবি শোনা যায়।

কিংবদন্তি বলছে, রুমানিয়ার ওয়ালাচিয়া থেকে আসা এক প্রাচীন ভ্যাম্পায়ারের কফিন নাকি হাইগেটে সমাধিস্থ করা হয়। বিশ শতকের মাঝামাঝি কেউ তাকে জাগিয়ে তুললে শুরু হয় সব ভৌতিক ঘটনা।

বিজ্ঞাপন

রীতিমতো অভিযান চালানো হয় ভ্যাম্পায়ার খুঁজতে তার বুকে কাঠের কিলক বসাতে। তবে কিছুই মেলেনি। পরের বছর রক্তশূন্য, মস্তকবিহীন নারীদেহ মিললে রহস্য আরও ঘনীভূত হয়।

২০০১ সালে এক নারী দাবি করেন মোমের মতো দেখতে একজন মানুষকে মৃত কুকুরের ওপর ঝুঁকে থাকতে দেখেছেন। তার চিৎকারে ভ্যাম্পায়ার-সদৃশ ছায়া লাফ দিয়ে দেয়াল টপকে পালায়। ২০১১ সালে আবার পাওয়া যায় মাথাবিহীন এক তরুণীর লাশ।

বিজ্ঞাপন

গবেষক ডেভিড ফেরান্টের মতে, হাইগেট বিশেষ ধরনের অতিপ্রাকৃত শক্তির কেন্দ্র। সমাধিগুলো নাকি শক্তির পথ তৈরি করে, আর তাতেই সক্রিয় হয় ছায়ামূর্তিগুলো।

যুক্তিবাদীদের দাবি সবই বিভ্রম, অন্ধকারের খেলা, কিংবা গুজব। কিন্তু যারা রাতের হাইগেটে হেঁটেছেন, তারা বলেন কিছু একটা আছে!

অন্ধকার রাতে সোয়াইন লেনের নীরবতা, ভাঙাচোরা সমাধির পাশে হঠাৎ নড়াচড়া করা ছায়া, বাতাসে অদ্ভুত গন্ধ মনে হয় অন্য এক জগতে পা রাখছে মানুষ।

বিজ্ঞাপন

হাইগেট গোরস্থান তাই আজও লন্ডনের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ও রহস্যময় জায়গাগুলোর একটি যেখানে বাস্তব আর কিংবদন্তির সীমারেখা মিলেমিশে যায় অন্ধকারে।

জেবি/এমএল
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD