হাসিনার ফাঁসির রায় ভারতের নজরে, প্রত্যর্পণের বিষয়ে চুপচাপ

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ফাঁসির দণ্ড দিয়েছেন। রায় ঘোষণার পর সোমবার (১৭ নভেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে একটি অফিসিয়াল বিবৃতি প্রকাশ করেছে।
বিজ্ঞাপন
ভারতের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঘোষিত রায়ের বিষয়ে তারা সম্পূর্ণভাবে সচেতন।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হিসেবে শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি এবং স্থিতিশীলতা বজায় রেখে বাংলাদেশের জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থ রক্ষায় ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা এই লক্ষ্য অর্জনে সকল অংশীদারের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে কাজ করব।
তবে ভারতের পক্ষ থেকে এখনও শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরের বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
বিজ্ঞাপন
রায় ঘোষণার পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন জানিয়েছে, যাতে দণ্ডপ্রাপ্ত দুই ব্যক্তিকে দ্রুত বাংলাদেশে ফেরত হস্তান্তর করা হয়।
মন্ত্রণালয় বলেছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দণ্ডপ্রাপ্ত। অন্য কোনো দেশে আশ্রয় দেওয়া হলে এটি ন্যায়বিচারের প্রতি অগ্রাহ্য আচরণ হিসেবে গণ্য হবে।
বিজ্ঞাপন
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত বলেন, হাসিনার বিরুদ্ধে রায় প্রত্যাশিত হলেও ভারত তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে দুই দেশের সম্পর্ক তুলনামূলকভাবে অস্থির ও ভঙ্গুর।

তিনি বলেন, হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় প্রত্যাশিত ছিল। দেশের ভেতরের পরিস্থিতি দেখে বোঝা যাচ্ছিল, এটি কঠিন বিচার হবে। ট্রাইব্যুনাল কার্যক্রম বাংলাদেশের আইনি প্রক্রিয়া অনুসারে পরিচালিত হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
শ্রীরাধা দত্ত আরও উল্লেখ করেন, নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের ওপর সংঘটিত হত্যাযজ্ঞে প্রধানমন্ত্রী সরাসরি নির্দেশ দিয়েছেন, এ বিষয়ে প্রমাণ রয়েছে। যদিও আওয়ামী লীগ পাল্টা বক্তব্য তৈরি করতে পারে, সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশিরা মনে করেন, হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্যানেল রায় ঘোষণা করেছে। রায়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে—একটিতে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং দুইটিতে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।








