Logo

দক্ষিণ এশিয়ার বায়ু দূষণ ভয়াবহ, বছরে প্রাণ হারাচ্ছে ১০ লাখ

profile picture
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১৪:৪৩
6Shares
দক্ষিণ এশিয়ার বায়ু দূষণ ভয়াবহ, বছরে প্রাণ হারাচ্ছে ১০ লাখ
ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ এশিয়ার হিমালয়ের পাদদেশ থেকে ইন্দো-গাঙ্গেয় সমভূমি পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অঞ্চল বর্তমানে একটি ভয়াবহ বায়ু দূষণের চাপে। এক সময় উর্বর এই অঞ্চলে এখন বিশ্বের অন্যতম দূষিত বায়ুস্তর গড়ে উঠেছে।

বিজ্ঞাপন

বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও ভুটানের প্রায় ১০০ কোটি মানুষ প্রতিনিয়ত অস্বাস্থ্যকর বাতাসে নিশ্বাস নিচ্ছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বায়ু দূষণ কেবল পরিবেশগত সমস্যা নয়, এটি এই অঞ্চলের জন্য চরম উন্নয়ন চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। প্রতি বছর দূষণের কারণে প্রায় ১০ লাখ মানুষ অকালে প্রাণ হারাচ্ছে এবং আঞ্চলিক জিডিপির প্রায় ১০ শতাংশ অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ এই দূষণে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ।

বিজ্ঞাপন

বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত ‘পরিবর্তনের নিশ্বাস: ইন্দো-গাঙ্গেয় সমভূমি এবং হিমালয়ের পাদদেশে (আইজিপি-এইচএফ) পরিষ্কার বাতাসের সমাধান’ শীর্ষক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল ও পাকিস্তান মিলে যে আইজিপি-এইচএফ অঞ্চল তৈরি করেছে।

সেখানে বায়ু দূষণের মূল উৎসের মধ্যে রয়েছে- রান্না ও গরম করার জন্য কঠিন জ্বালানি পোড়ানো, জীবাশ্ম জ্বালানি ও জৈববস্তুপুঞ্জ পোড়ানো যেখানে উপযুক্ত ফিল্টার প্রযুক্তি নেই, অদক্ষ অভ্যন্তরীণ দহন যানবাহন ব্যবহার, কৃষি কাজের সময় ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ানো, অদক্ষভাবে সার ও সার ব্যবস্থাপনা এবং পরিবার ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বর্জ্য পোড়ানো।

প্রতিবেদনটি বায়ু দূষণের সমাধানের জন্য তিনটি মূল ক্ষেত্র নির্দেশ করেছে। প্রথমত, রান্না, শিল্প, পরিবহন, কৃষি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উৎসে নির্গমন হ্রাস করা। দ্বিতীয়ত, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়কে সুরক্ষা প্রদান। তৃতীয়ত, নিয়ন্ত্রক কাঠামো, বাজার-ভিত্তিক প্রণোদনা এবং আঞ্চলিক সমন্বয় নিশ্চিত করা, যাতে দীর্ঘমেয়াদী অগ্রগতি বজায় থাকে।

বিজ্ঞাপন

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র পরিবেশগত অর্থনীতিবিদ মার্টিন হেগার বলেন, সমাধানগুলো নাগালের মধ্যে রয়েছে। নীতি নির্ধারক এবং সিদ্ধান্তগ্রহণকারীদের জন্য বাস্তবসম্মত ও প্রমাণ-ভিত্তিক রোডম্যাপ তৈরি করা সম্ভব। পরিবার, কৃষক এবং স্থানীয় উদ্যোগে ক্লিন প্রযুক্তি গ্রহণ করতে সরকারকে সমর্থন করা উচিত।

দক্ষিণ এশিয়ার পরিবেশ অনুশীলন ব্যবস্থাপক অ্যান জেনেট গ্লোবার বলেন, ক্লিন এয়ার অর্জনের জন্য স্থানীয়, জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে অব্যাহত সহযোগিতা, টেকসই অর্থায়ন এবং শক্তিশালী বাস্তবায়ন প্রয়োজন। সরকারগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে, যাতে লাখ লাখ জীবন বাঁচানো যায় এবং সবার জন্য নিরাপদ বাতাস নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।

বিজ্ঞাপন

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে জোর দেওয়া হয়েছে যে, পরিকল্পনা, জবাবদিহি, আচরণগত পরিবর্তন, বিনিয়োগের পুনর্গঠন এবং আধুনিক প্রযুক্তি গ্রহণের মাধ্যমে দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব। সমন্বিত আঞ্চলিক উদ্যোগ ছাড়া, দক্ষিণ এশিয়ার জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতি দীর্ঘমেয়াদি বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।

জেবি/এএস
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD