অর্থনৈতিক সংকটে ইরানে বিক্ষোভ, প্রকাশ্যে সমর্থনের ঘোষণা ইসরায়েলের মোসাদ

মুদ্রার মানের নজিরবিহীন পতন ও নিত্যপণ্যের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ইরানজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে গণবিক্ষোভ। সাধারণ মানুষের এই আন্দোলন তৃতীয় দিনের মতো অব্যাহত রয়েছে এবং প্রতিদিনই তা নতুন নতুন এলাকায় বিস্তৃত হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
এমন পরিস্থিতিতে ইরানের বিক্ষোভকারীদের প্রতি প্রকাশ্যে সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ, যা মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা তৈরি করেছে।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন শহরে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভে অংশ নেন। বিক্ষোভকারীরা দেশের সর্বস্তরের জনগণকে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে দোকানিদের দোকান বন্ধ রেখে আন্দোলনে শরিক হওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
বিজ্ঞাপন
সংবাদমাধ্যম আই২৪নিউজ জানায়, বিক্ষোভের প্রতি সংহতি জানিয়ে মঙ্গলবার তেহরানের ঐতিহাসিক গ্র্যান্ড বাজার সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। ব্যবসায়ীরা দোকান না খুলে আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়ান, যা বিক্ষোভের গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে তোলে।
রাজধানীর বাইরে কেরমানশাহসহ বিভিন্ন শহরেও ব্যাপক বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। কোথাও কোথাও ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের আগে ইরানে প্রচলিত পাহলভি (শাহ) শাসন ফিরিয়ে আনার দাবিতে স্লোগানও শোনা গেছে।
বিক্ষোভের মুখে তেহরান প্রদেশ কর্তৃপক্ষ রাজধানীতে পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করেছে। যদিও কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, তীব্র শীতের কারণে জ্বালানি ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তবে সমালোচকদের মতে আন্দোলন দমাতেই এই লকডাউন কার্যকর করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
একই সঙ্গে বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সক্রিয়ভাবে অভিযান শুরু করেছে, যার ফলে একাধিক স্থানে সংঘর্ষ ও সহিংসতার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
ইরানের চলমান আন্দোলনকে ঘিরে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রকাশ্য অবস্থান। সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে মোসাদ বিক্ষোভকারীদের আন্দোলন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানায়।
বিজ্ঞাপন
পোস্টে বলা হয়, ইরানের আন্দোলনকারীদের সহায়তা শুধু দূর থেকে নয়, বিক্ষোভস্থল থেকেই করা হচ্ছে। মোসাদের এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং ইরান-ইসরায়েল বৈরিতাকে আরও সামনে নিয়ে এসেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, অর্থনৈতিক সংকট থেকে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ এখন রাজনৈতিক রূপ নিচ্ছে। এর সঙ্গে ইসরায়েলের প্রকাশ্য সমর্থনের ঘোষণা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
ইরানের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা এবং মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর এই বিক্ষোভের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
বিজ্ঞাপন
সূত্র: আই২৪নিউজ








