নতুন পে-স্কেলে কমছে গ্রেড, বাড়ছে বেতন

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণে গঠিত জাতীয় বেতন কমিশন (পে কমিশন) তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে নতুন পে-স্কেল নিয়ে প্রস্তাব জমা দেবে কমিশন।
বিজ্ঞাপন
এবার শুধু বেতন বৃদ্ধি নয়, বর্তমান ২০টি গ্রেড পুনর্বিন্যাস করে গ্রেডের সংখ্যা কমানোর বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে তারা।
বর্তমানে কমিশন সাধারণ নাগরিক, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সমিতির কাছ থেকে বেতন কাঠামো সম্পর্কিত মতামত নিচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
মতামত ফরমের পঞ্চম প্রশ্নে সরাসরি জানতে চাওয়া হয়েছে- “আপনি কি ২০ গ্রেড বেতন কাঠামোর পক্ষে?” এবং “আপনার পছন্দের গ্রেড সংখ্যা কত?” পাশাপাশি, ওই গ্রেডসংখ্যার যৌক্তিকতা সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হয়েছে।
এছাড়া প্রস্তাবিত বেতন কাঠামোয় সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতনের অনুপাত কী হওয়া উচিত -এমন প্রশ্নও রাখা হয়েছে। কমিশনের এক সদস্য জানিয়েছেন, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতনের অনুপাত কমিয়ে বৈষম্য দূর করার বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাচ্ছে। এজন্য বিদ্যমান ২০টি গ্রেড কমিয়ে আনার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনায় রয়েছে।
পে কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান স্কেলে কিছু গ্রেডের মধ্যে বেতনের পার্থক্য অতি সামান্য। যেমন ৮ম (২২ হাজার) ও ৯ম গ্রেডে (২৩ হাজার) বেতনের পার্থক্য মাত্র ১ হাজার টাকা। একইভাবে ২০তম ও ১৯তম গ্রেডের ব্যবধান মাত্র ২৫০ টাকা, ১৭তম ও ১৮তম গ্রেডে ২০০ টাকা এবং ১২তম ও ১৩তম গ্রেডে ৩০০ টাকা। কমিশন মনে করছে, এত কম ব্যবধান থাকা গ্রেডগুলো একীভূত করে গ্রেডসংখ্যা কমানো সম্ভব।
বিজ্ঞাপন
বিশেষজ্ঞদের মতে, মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বিবেচনায় বেতনের বৈষম্য কমানো এখন সময়ের দাবি। নিচের গ্রেডের কর্মচারীরা যে হারে ব্যয়বহুল জীবনে টিকে থাকতে হিমশিম খাচ্ছেন, তা নিরসনে বেতন কাঠামোর ন্যায্য ভারসাম্য আনতে হবে।
এক্ষেত্রে কমিশন প্রতিবেশী দেশ ভারতের মডেল বিবেচনা করতে পারে। সেখানে সরকারি চাকরিজীবীদের গ্রুপ-সি, গ্রুপ-বি ও গ্রুপ-এ তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। মোট ১৮টি লেভেলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন নির্ধারণ করে কেন্দ্রীয় সরকার; যেখানে লেভেল-১ সর্বনিম্ন ও লেভেল-১৮ সর্বোচ্চ।
বিজ্ঞাপন
সবশেষে চারটি ধাপে মতামত সংগ্রহের পর বিভিন্ন সংস্থা ও কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে কমিশন নতুন গ্রেড কাঠামোর বিষয়ে চূড়ান্ত সুপারিশ করবে বলে জানা গেছে।