কার্গো ভিলেজে আগুন, ২১ ঘণ্টা পরও ধ্বংসস্তূপ থেকে উড়ছে ধোঁয়া

ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ২১ ঘণ্টা পরও ধ্বংসস্তূপ থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। রোববার (১৯ অক্টোবর) সকাল ১১টার পরও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সেখানে পানি ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিজ্ঞাপন
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার লিমা খানম জানান, আগুন এখনো পুরোপুরি নেভেনি, তাই ধোঁয়া উঠছে। আগুন যেন আবার ছড়িয়ে না পড়ে, সে জন্য তাদের ২২টি ইউনিট এখনো কাজ করছে।
এদিকে, সকাল থেকেই ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা ও উৎসুক জনতা কার্গো ভিলেজ এলাকায় ভিড় করছেন। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে কাউকেই ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্মী রেজাউল করিম রনি বলেন, “শুক্র-শনিবার আমদানি বন্ধ থাকে, কিন্তু রপ্তানি চালু থাকে। শনিবার সকালে আমি রপ্তানি পণ্য দিতে এসেছিলাম। বৃহস্পতিবার টাকা জমা দিয়েছিলাম, রোববার মাল নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সব পুড়ে গেছে। এতে তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর বড় ক্ষতি হবে।” তিনি আরও জানান, আগুনের ঘটনায় হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
শনিবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট। সহায়তায় যোগ দেয় নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, সিভিল অ্যাভিয়েশন, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার বাহিনী।
সূত্র জানায়, আগুন লাগে আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স ভবনে, যেখানে আমদানিকৃত পণ্য রাখা হয়। আগুনে ভবনের প্রায় সব মালামালই পুড়ে গেছে।
বিজ্ঞাপন
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের কারণে বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ওঠানামা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিকল্পভাবে কিছু ফ্লাইট চট্টগ্রাম, সিলেট ও কলকাতায় অবতরণ করে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে রাত ৯টার পর আবার ফ্লাইট চলাচল শুরু হয়। এ সময়ে অন্তত ২৩টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অন্যত্র অবতরণ করে, ফলে যাত্রীদের ব্যাপক ভোগান্তি হয়।
তথ্যমতে, আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিস, সিভিল অ্যাভিয়েশন ও আনসারসহ ৩৫ জন আহত হয়েছেন; এর মধ্যে ২৫ জন আনসার সদস্য। আহতদের সিএমএইচ ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, আগুনে মূলত তৈরি পোশাক কারখানার জন্য আমদানিকৃত কাপড় ও দাহ্য পদার্থ পুড়ে গেছে। এতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দীর্ঘ সময় লাগে। কবে নাগাদ কার্গো ভিলেজ পুনরায় চালু করা যাবে, তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।