Logo

কর্মরত প্রতিনিধি ছাড়াই চূড়ান্ত পুলিশ কমিশন, মাঠে ক্ষোভ

profile picture
নিজস্ব প্রতিবেদক
২৭ অক্টোবর, ২০২৫, ১৩:২১
39Shares
কর্মরত প্রতিনিধি ছাড়াই চূড়ান্ত পুলিশ কমিশন, মাঠে ক্ষোভ
ছবি: সংগৃহীত

সরকার চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে এসেছে স্বাধীন পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ, ২০২৫। কিন্তু এই অধ্যাদেশে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের প্রতিনিধিত্ব রাখা হয়নি, যা পুলিশের অভ্যন্তরীণ মহলে যথেষ্ট ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

বিজ্ঞাপন

মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা মনে করছেন, বর্তমান খসড়া অনুযায়ী কমিশন গঠিত হলে স্বাধীন ও গ্রহণযোগ্য পুলিশ কমিশন গঠনের লক্ষ্য প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে।

পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স জানিয়েছে, কমিশনের শতভাগ নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কমিশনের খসড়া আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে, যেখানে ভেটিং শেষে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। উল্লেখযোগ্য যে, খসড়ায় পুলিশের কর্মকাণ্ডে দায়মুক্তির বিধান রাখা হয়নি।

পুলিশের ডিআইজি কাজী জিয়া উদ্দিন জানিয়েছেন, খসড়া এখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের পর্যালোচনা শেষে এটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে।

বিজ্ঞাপন

তিনি ব্যাখ্যা করেন, বিভিন্ন দেশে পুলিশ কমিশনে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের রাখা হয় না, কারণ তারা ইতিমধ্যেই কমিশনের নজরদারির আওতায় থাকবেন। তাই নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতা বজায় রাখতে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে সদস্য মনোনয়ন করা হয়েছে।

মাঠ পর্যায়ের এক ডিআইজি এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেন, যারা কমিশনের মাধ্যমে পুলিশের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবে সেখানে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের প্রতিনিধি না রাখলে বিষয়টি একতরফা হয়ে যাবে। স্বাধীন পুলিশ কমিশনের লক্ষ্য বাস্তবায়ন কঠিন হবে। ক্যাডার ও নন-ক্যাডার সদস্যদের অন্তর্ভুক্তি কমিশনকে কার্যকর ও গ্রহণযোগ্য করে তুলতে পারত।

বিজ্ঞাপন

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, ৯ অক্টোবর কমিশনের খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের পর্যালোচনা ও রাষ্ট্রপতির অনুমোদন সাপেক্ষে চলতি মাসেই অধ্যাদেশ জারি করা হতে পারে। পেশাগত নিরাপত্তা ও সংশোধনী বিষয়ক দাবি তুলে ধরতে মাঠ পুলিশ আইজিপির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে।

বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, কমিশনে কর্মরত পুলিশের পক্ষে মাত্র দুইটি সদস্য রাখা হয়েছে এবং তারা অবসরপ্রাপ্তদের মধ্য থেকে মনোনয়ন পাবেন। সংগঠনগুলোর দাবি, ন্যূনতম একজন কর্মরত নন-ক্যাডার ও একজন ক্যাডার পুলিশ কর্মকর্তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হোক।

বিজ্ঞাপন

খসড়া অনুযায়ী, কমিশন একটি স্বাধীন, সংবিধিবদ্ধ ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান হবে। ঢাকায় প্রধান কার্যালয়, নিজস্ব বাজেট ও জনবল থাকবে। কমিশন পুলিশ সদস্যদের কর্মকাণ্ডে নজরদারি, অভিযোগ তদন্ত, প্রশাসনিক সংস্কার এবং মানবাধিকার রক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

কমিশনে থাকবেন ৯ জন সদস্য: চেয়ারম্যান, সদস্য সচিব, পাঁচ স্থায়ী ও দুই অস্থায়ী সদস্য। চেয়ারম্যান হবেন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, সদস্য সচিব একজন অবসরপ্রাপ্ত আইজিপি। স্থায়ী সদস্যদের মধ্যে থাকবেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা, পুলিশ কর্মকর্তা, জেলা জজ বা অভিজ্ঞ আইনজীবী, বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক এবং মানবাধিকার কর্মী। কমপক্ষে একজন নারী সদস্য থাকতে হবে।

কমিশন পুলিশের নিয়োগ, পদোন্নতি, পদায়ন নীতিমালা তৈরি, তদন্ত এবং অভিযোগ নিষ্পত্তি, আধুনিক পুলিশিং ও জনআস্থা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এছাড়া কমিশন প্রতিবেদন প্রকাশ করবে এবং রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করবে।

বিজ্ঞাপন

আইজিপি বাহারুল আলম জানান, মাঠ পুলিশ তাদের দাবিগুলো জানিয়েছে। এই মুহূর্তে স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। অধ্যাদেশ জারি হলে পরে পুলিশ সদস্যদের দাবিসমূহ পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে।

জেবি/এএস
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD