৯ হাজার তরুণদের প্রশিক্ষণ নিয়ে ব্যাখ্যা দিলেন আসিফ মাহমুদ

দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও গণপ্রতিরক্ষা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ৯ হাজারেরও বেশি তরুণকে প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তবে এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য নিয়ে যেসব ভুল ব্যাখ্যা ছড়ানো হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, এই প্রশিক্ষণ প্রকল্পের লক্ষ্য কোনো সশস্ত্র বাহিনী বা মিলিশিয়া গঠন নয়। এটি সম্পূর্ণ আত্মরক্ষামূলক দক্ষতা উন্নয়নের একটি সরকারি অনুমোদিত কর্মসূচি।
সম্প্রতি কিছু মহল এই প্রকল্পকে আক্রমণাত্মক সামরিক উদ্যোগ হিসেবে প্রচার করছে উল্লেখ করে আসিফ মাহমুদ বলেন, এসব গুজবের কোনো ভিত্তি নেই। প্রশিক্ষণার্থীদের নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ স্বচ্ছভাবে করা হচ্ছে, আর অংশগ্রহণকারীরা প্রশিক্ষণ শেষে তাদের স্বাভাবিক পেশায় ফিরে যাবেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি জানান, দেশজুড়ে ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী তরুণদের জন্য এই কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। অংশগ্রহণকারীরা জুডো, কারাতে, তায়কোয়ান্দো ও এয়ারগান শুটিং বিষয়ে মৌলিক প্রশিক্ষণ নেবেন।
প্রশিক্ষণগুলো অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)-তে, যেখানে মোট ৮ হাজার ৮৫০ জন তরুণকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রকল্পটি ১০০টি স্লটে ভাগ করে দুই বছরের মধ্যে ধাপে ধাপে পরিচালিত হবে। পুরো প্রকল্পের বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮ কোটি টাকা।
বিজ্ঞাপন
উপদেষ্টা আসিফ বলেন, এ প্রশিক্ষণে কাউকে অস্ত্র দেওয়া হবে না, কোনো রিক্রুটমেন্টও করা হবে না। অংশগ্রহণকারীদের তথ্যভান্ডার রাখা হবে কেবল জরুরি পরিস্থিতিতে যোগাযোগের সুবিধার জন্য, এর বাইরে আর কিছু নয়।”
তিনি অভিযোগ করেন, কিছু মহল প্রকল্পটির উদ্দেশ্য বিকৃতভাবে তুলে ধরছে। তার ভাষায়, এই উদ্যোগের পেছনে কোনো বিদেশি প্রভাব নেই। আমাদের নীতিমালা দেশের সার্বভৌম স্বার্থেই নির্ধারিত হয়, বাইরের কোনো শক্তির নির্দেশে নয়।
প্রকল্পটিকে ‘পাইলট উদ্যোগ’ হিসেবে উল্লেখ করে আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে এটি একটি প্রাথমিক প্রস্তুতি। আজকের বিশ্বে বড় রাষ্ট্রগুলোর আগ্রাসী মনোভাব দেখা যাচ্ছে, তাই আমাদেরও প্রস্তুত থাকতে হবে। গণপ্রতিরক্ষা গঠনই সার্বভৌমত্ব রক্ষার অন্যতম উপায়।
বিজ্ঞাপন
তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেউ কেউ এই উদ্যোগকে ১৯৭২ সালের রক্ষী বাহিনীর সঙ্গে তুলনা করেছেন। সে বিষয়ে তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, এটি কোনো বাহিনী নয়, সামরিক প্রশিক্ষণও নয়। এখানে অস্ত্র চালনা শেখানো হবে না, বরং আত্মরক্ষা ও নাগরিক প্রতিক্রিয়া বিষয়ক মৌলিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
প্রকল্পটি নিয়ে ইতোমধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ একে সময়োপযোগী পদক্ষেপ বলে প্রশংসা করেছেন, আবার কেউ রাজনৈতিক বা নিরাপত্তাগত প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
বিজ্ঞাপন
এসব সমালোচনার জবাবে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, সব তথ্য ও প্রামাণ্য নথি উন্মুক্ত রয়েছে। প্রকল্পের প্রকৃত উদ্দেশ্য জানতে চাইলে সেগুলো দেখলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে।








