জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে হবে: প্রধান উপদেষ্টা

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা এ ঘোষণা দেন।

ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সব বিষয় বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে একই দিনে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। এতে সংবিধান সংস্কারের লক্ষ্য কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত হবে না। ভোটগ্রহণ আরও উৎসবমুখর ও সাশ্রয়ী হবে।

আরও পড়ুন: জুলাই সনদ ও গণভোট নিয়ে বৈঠকে বসেছে উপদেষ্টা পরিষদ

তিনি আরও জানান, গণভোটের আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন উপযুক্ত সময়ে করা হবে। এছাড়া, জুলাই সনদ অনুযায়ী গণভোটে ভোটারদের সামনে উপস্থাপনযোগ্য প্রশ্নও নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি ভোটারদের উদ্দেশ্যে প্রশ্নটি পাঠ করে শোনান:

"আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং এতে বর্ণিত নিম্নলিখিত প্রস্তাবগুলোর প্রতি সম্মতি জ্ঞাপন করছেন?"

প্রধান উপদেষ্টা চারটি মূল বিষয় তুলে ধরেন-

ক. নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন ও অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হবে।

খ. আগামী সংসদ দুই কক্ষ বিশিষ্ট হবে। নির্বাচনে দলগুলোর ভোটের অনুপাতে উচ্চকক্ষে ১০০ জন সদস্য নির্বাচিত হবেন এবং সংবিধান সংশোধনের জন্য উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন আবশ্যক হবে।

গ. সংসদে নারীর প্রতিনিধি বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন সংস্কার প্রস্তাব কার্যকর করা হবে।

ঘ. জুলাই সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাস্তবায়ন করা হবে।

আরও পড়ুন: রাতজুড়ে আতঙ্ক: রাজধানীসহ দেশের পাঁচ জেলায় যানবাহনে আগুন

গণভোটের দিন ভোটাররা এই চারটি বিষয়ের ওপর একটিমাত্র প্রশ্নে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দিয়ে মতামত জানাতে পারবেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ ‘হ্যাঁ’ ভোটের ক্ষেত্রে আগামী সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধি একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠন করবেন। এই প্রতিনিধিরা একইসাথে জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করবেন।

প্রধান উপদেষ্টা আরও জানিয়েছেন, সংবিধান সংস্কার পরিষদ তার প্রথম অধিবেশন শুরুর ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সংবিধান সংশোধন সম্পন্ন করবে। সংশোধন শেষে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সংসদ নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে, যার মেয়াদ হবে নিম্নকক্ষের শেষ কার্যদিবস পর্যন্ত।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট আয়োজন দেশীয় সংবিধান সংস্কার প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করবে এবং ভোটারদের অংশগ্রহণকে উৎসবমুখর ও কার্যকর করবে।