‘হঠাৎ ঝাঁকুনি শুরু হয়, ৬ তলা থেকে পড়ে গেলাম ৫ তলায়’

রাজধানীর জুরাইন ও সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় গতকাল সংঘটিত ভূমিকম্পে অনেক মানুষ আহত হয়েছেন। নির্মাণাধীন জুরাইন টাওয়ার থেকে পড়ে দুই পা ভেঙে গুরুতর আহত রাজমিস্ত্রি ধলাই তার দুঃখের কথা শেয়ার করেছেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি জানান, ৬ তলায় কাজ করছিলাম, হঠাৎ বিল্ডিংটা দুলতে শুরু করল। সঙ্গে সঙ্গে আমি ৬ তলা থেকে ৫ তলায় পড়ে গেলাম। এরপর আর উঠে দাঁড়াতে পারিনি।
বর্তমানে তিনি আগারগাঁওয়ের জাতীয় অর্থোপেডিক ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (নিটোর)-এর ক্যাজুয়ালিটি-১ ফ্লোরে শুয়ে আছেন।
বিজ্ঞাপন
দুই পা প্লাস্টার করা অবস্থায় ফ্লোরে পড়ে থাকা ধলাই বলেন, সকালে সিড়ির পাশে কাজ করছিলাম, হঠাৎ ঝাঁকুনি শুরু হয়। পরে উদ্ধার করে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে এখানে আনা হয়। একটি পা বেশি ভেঙেছে, অন্যটি সামান্য। আমি গরিব মানুষ, দুই পা ভাঙা, এখন সংসার নিয়ে চিন্তায় আছি।
অন্যদিকে, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে বাম পায়ের হাঁটুর বাটি ভাঙা সুবহানও নিটোরে ভর্তি আছেন। তিনি জানান, চা খাচ্ছিলাম, হঠাৎ মাটি সহ ঝাঁকুনি শুরু হল। সবাই দৌড়াতে লাগল। আমি ভয় পেয়ে দৌড়ে গিয়ে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যাই। এখন বাম পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াতে পারছি না।
তিনি প্লাস্টার অবস্থায় ফ্লোরে শুয়ে আছেন কারণ হাসপাতালের বিছানা পর্যাপ্ত নয়।
বিজ্ঞাপন
নিটোরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কেনান বলেন, গতকাল ভূমিকম্পে ১১৯ জন রোগী আহত হয়ে আমাদের হাসপাতালে এসেছে। এর মধ্যে ২৩ জন ভর্তি রয়েছেন। আমরা রোগীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি এবং টেককেয়ারের ব্যবস্থা করেছি। আহতদের মধ্যে তিনজন নারী, একজন শিশু এবং বাকি পুরুষ।
এছাড়া, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মোহাম্মদ ফারুক জানিয়েছেন, এর মধ্যে ৮ জন বর্তমানে চিকিৎসাধীন। নরসিংদী থেকে আসা একটি বাবা–ছেলের ঘটনা সবচেয়ে দুঃখজনক; তারা আহত অবস্থায় মারা গেছেন।
বিজ্ঞাপন
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আহতদের বেশিরভাগই প্যানিকের কারণে আহত হয়েছেন। কেউ তাড়াহুড়া করে নামতে গিয়ে, কেউ লাফিয়ে পড়ে বা বাইরে বের হলে ওপর থেকে কিছু পড়ে আহত হয়েছেন। এছাড়া জানালা বা রেলিং ধরে ঝুলতে গিয়ে পড়ে আহত হওয়াও দেখা গেছে।








