Logo

চলতি মাসেই আরও ২০ বার ভূমিকম্পের সম্ভাবনা, দাবি বিশেষজ্ঞদের

profile picture
নিজস্ব প্রতিবেদক
২৩ নভেম্বর, ২০২৫, ১১:৫৬
22Shares
চলতি মাসেই আরও ২০ বার ভূমিকম্পের সম্ভাবনা, দাবি বিশেষজ্ঞদের
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা ও আশপাশের জেলাগুলোতে মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে চারবার ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ায় জনমনে উৎকণ্ঠা আরও বেড়েছে। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে একটি এবং শনিবার (২২ নভেম্বর) দিনের বিভিন্ন সময়ে তিনটি কম্পন দেখা দেয়। এর মধ্যে তিনটির উৎস নরসিংদী অঞ্চল এবং একটি ঢাকার বাড্ডায় শনাক্ত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবারের ভূমিকম্পটি ছিল সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে শক্তিশালী—রিখটার স্কেলে ৫.৭ মাত্রার। নরসিংদীর মাধবদী এলাকায় ভূপৃষ্ঠের মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে এর উৎপত্তি হওয়ার ফলে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তীব্র ঝাঁকুনি অনুভূত হয়। এই কম্পনে শিশুসহ ১০ জনের প্রাণহানি এবং ছয় শতাধিক মানুষের আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। বহু ভবন হেলে পড়ে ও ফাটল দেখা দেয়।

এদিকে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় গঙ্গা–ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় একটি গোপন ভূ-চ্যুতি শনাক্ত হওয়ায় বাংলাদেশে উচ্চমাত্রার ভূমিকম্পের ঝুঁকির বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা আবারও সতর্ক করছেন। তাদের মতে, এই অঞ্চলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পও হতে পারে।

বিজ্ঞাপন

সাম্প্রতিক কম্পনের পর নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে বিশেষজ্ঞদের এক পূর্বাভাস।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মেহেদি আহমেদ আনসারী জানিয়েছেন, মাত্র দুই দিনে চার দফা কম্পনের পর আগামী এক সপ্তাহে আরও ২০ বার ভূমিকম্প হতে পারে।

তিনি বলেন, যদি ৫.৭ মাত্রার চেয়েও বড় কম্পন ঘটে, তাহলে স্বল্প সময়ের মধ্যেই ভয়াবহ দুর্যোগ নেমে আসতে পারে।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ যে তিনটি টেকটোনিক প্লেট—ভারতীয়, ইউরেশীয় ও বার্মা প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত, তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের গবেষক রুবাইয়াত কবির বলেন, প্লেটগুলো দীর্ঘদিন আটকে থাকা অবস্থান থেকে সরে যেতে শুরু করেছে। এর চাপে বড় ধাক্কার সম্ভাবনা বাড়ছে।

২০১৬ সালের গবেষণায় গঙ্গা–ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার নিচে বিস্তৃত ‘মেগাথার্স্ট ফল্ট’ শনাক্ত হওয়ার পর থেকে ভূমিকম্প ঝুঁকি আরও গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, সিলেট থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত প্লেট সংযোগস্থলে গত ৮০০–১০০০ বছরের মধ্যে জমে থাকা শক্তি এখনো মুক্ত হয়নি। ফলে ভয়াবহ ভূমিকম্পের সম্ভাবনা অস্বীকার করা যায় না।

এদিকে ঘোড়াশাল এলাকার সক্রিয় ফাটল থেকে সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষা করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আ স ম ওবায়দুল্লাহ জানান, বিশ্লেষণ শেষ হলে সাম্প্রতিক কম্পনের প্রকৃতি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ১৭৬২ সালে টেকনাফ–মিয়ানমার ফল্ট লাইনে সংঘটিত ৮.৫ মাত্রার ভূমিকম্পে যেমন সেন্টমার্টিন দ্বীপ তিন মিটার উঁচু হয়েছিল, তেমন শক্তি আবারও জমা হতে পারে। তাই বাংলাদেশের জন্য সতর্কতা অবলম্বন ও প্রস্তুতি এখন সময়ের দাবি।

জেবি/এএস
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD