জোটবদ্ধ হলেও নিজ প্রতীকে করতে হবে নির্বাচন: হাইকোর্টের রায়

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটবদ্ধভাবে অংশ নিলেও প্রতিটি দলকে নিজ নিজ প্রতীকে ভোটে লড়তে হবে—হাইকোর্টের এক রায়ে এ বিষয়টি আরও একবার স্পষ্ট হয়েছে। জোটগত নির্বাচনে একক প্রতীক ব্যবহারের বিধান চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রুল খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের হাইকোর্ট বেঞ্চ টানা শুনানি শেষে এই রায় দেন।
হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, নির্বাচনে জোট থাকা সত্ত্বেও সব রাজনৈতিক দলকে তাদের নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে।
দুপুর আড়াইটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা পর্যন্ত চলা শুনানিতে রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম, ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম, ব্যারিস্টার রেশাদ ইমাম এবং ব্যারিস্টার সাহেদুল আজম। এনসিপির পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হোসেন লিপু, অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মূসা, অ্যাডভোকেট আজমল হোসেন এবং অ্যাডভোকেট নাজমুস সাকিব। কংগ্রেসের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ইয়ারুল ইসলাম।
বিজ্ঞাপন
এই রায়ের আগে, গত ১ ডিসেম্বর হাইকোর্টে রুল জারি করা হয়েছিল, যাতে জানা যায় আসন্ন নির্বাচনে জোটবদ্ধ হলেও নিজ নিজ দলীয় প্রতীকে ভোট দেওয়ার বিধান অবৈধ কি না। রুলে ১০ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে জবাব দিতে বলা হয়েছিল।
রিটটি দায়ের করেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম)-এর মহাসচিব মোমিনুল আমিন। রিটে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টরা বিবাদী করা হয়। মূলত রিটে দাবী করা হয়েছিল, নির্বাচনে নিবন্ধিত দলগুলোর জোটবদ্ধ থাকা সত্ত্বেও ভোট দিতে হবে নিজ নিজ দলের প্রতীকে এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) বাতিল করা হোক।
এর আগে ৩ নভেম্বর সরকার আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশ জারি করে। এই অধ্যাদেশে বলা হয়, জোট থাকা সত্ত্বেও প্রতিটি দলকে তাদের নিজস্ব প্রতীকে ভোটে অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকবে। এই বিধান পূর্বে ছিল না; আগে জোটভুক্ত কোনো দল জোটের শরিক যেকোনো দলের প্রতীক ব্যবহার করতে পারত।
বিজ্ঞাপন
সরকারের এই পদক্ষেপের প্রাথমিক সময়ে বিএনপি ও কিছু ছোট দল আপত্তি জানিয়েছিল। জামায়াতে ইসলামীও বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্য প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত বিধানটি অপরিবর্তিত রেখে অধ্যাদেশ জারি করা হয়।
এই হাইকোর্টের রায়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া সকল দলকে স্বতন্ত্র প্রতীকের অধীনে ভোটে অংশ নেওয়ার পথে আইনগত স্বীকৃতি মিলল। এর ফলে নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রম আরও স্পষ্ট ও সংহতভাবে চলবে।








