Logo

জলদস্যুদের কবলে পড়া এমভি আবদুল্লাহর সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

profile picture
জনবাণী ডেস্ক
১৮ মার্চ, ২০২৪, ২০:৪৮
144Shares
জলদস্যুদের কবলে পড়া এমভি আবদুল্লাহর সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
ছবি: সংগৃহীত

মোজাম্বিক থেকে আরব আমিরাত যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়া কয়লাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর সাথে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না

বিজ্ঞাপন

মোজাম্বিক থেকে আরব আমিরাত যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়া কয়লাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর সাথে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। 

রবিবার (১৮ মার্চ) চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিংয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিম তথ্যটি নিশ্চিত করেন।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

মেহেরুল করিম বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ভারতীয় নৌবাহিনীর দুটি যুদ্ধ জাহাজ পিছু নেয়ার পর সোমালিয়ান জলদস্যুরা এমভি আবদুল্লাহকে উপকূলের প্রায় ৪০ নটিক্যাল মাইল দূরে গভীর সাগরে নিয়ে গেছে।

এরপর থেকে জাহাজটির নাবিকেরা মালিকপক্ষের সাথে আর যোগাযোগ করেননি। পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারেননি। জাহাজের ফোন না আসায় জিম্মি হওয়া নাবিকদের স্বজনদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। দস্যুরা নিজেরাও কোনো দাবি নিয়ে ফোন না করায় নাবিকসহ জাহাজটি উদ্ধারের আলোচনাও শুরু করা যাচ্ছে না।

বিজ্ঞাপন

মালিকপক্ষ তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে দস্যুদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে যাচ্ছে। তবে গত রাত পর্যন্ত ইতিবাচক সাড়া মিলেনি। এমভি আবদুল্লাহর মুক্তিপণের ব্যাপার নিয়ে মধ্যস্বত্বকারীদের ভূমিকা এবং দাবির বিষয়টি ঠিক করতে তারা সময় নিচ্ছে মন্তব্য করে মেহেরুল করিম বলেন, তাদের ফোন না আসা পর্যন্ত জাহাজটির মালিকপক্ষের বেশি কিছু করার নেই।

বিজ্ঞাপন

তবে জাহাজটিতে যেহেতু ৫৫ হাজার টন কয়লা রয়েছে এবং কয়লা যে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ পণ্য, তা দস্যুদের বোঝানো সম্ভব হয়েছে। জাহাজটির হ্যাজে থাকা কয়লার তাপমাত্রা ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে বিস্ফোরণ ঘটবে; যা শুধু জাহাজ কিংবা জিম্মি হওয়া নাবিকদের নয়, দস্যুদেরও বিপদের কারণ হবে। এজন্য জাহাজের নাবিকদের স্বাভাবিক কাজকর্ম করার ব্যাপারে দস্যুরা অনুমোদন দিয়েছে। শিপিং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি ভালো খবর যে, কয়লায় যাতে বিস্ফোরণ না ঘটে সেজন্য নাবিকদের কোনো ক্ষতি দস্যুরা করবে না।

এদিকে, চট্টগ্রামে অবস্থানকারী ক্যাপ্টেন আতিক খান জাহাজের এক নাবিকের ভয়েস মেসেজের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, এমভি আবদুল্লাহর নাবিকেরা সবাই সুস্থ আছেন এবং সোমালিয়ার জলদস্যুদের অধীনেই রয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

ওই নাবিক জানান, সোমালিয়ার উপকূলে অগ্রসর হওয়ার সময় ইউরোপ ও ভারতীয় নেভির দুইটা যুদ্ধজাহাজ সোমালিয়ার জলদস্যুদের থামতে বলেছে। ওয়ার্নিং দিয়ে ইঞ্জিন বন্ধ করতে বলেছে আর আশপাশে পানিতে গোলাগুলি করেছে। কিন্তু জলদস্যুরা নির্বিকার ছিল এবং তাদের কথা শোনার প্রয়োজন মনে করেনি।

বিজ্ঞাপন

এ সময় জলদস্যুরা মনে করেছিল বাংলাদেশের নাবিকরা তাদের ডেকে এনেছে। তাই তারা কিছুটা রাগ করে সবাইকে ব্রিজে ডেকে বন্দুকের মুখে রেখেছিল। পরে ক্যাপ্টেন রেডিওতে ভারতীয় নেভিকে দূরে সরে যেতে বললে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

ক্যাপ্টেন আতিক জানান, জলদস্যুদের দোভাষী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তি বাংলাদেশের টিভি আর মিডিয়ার ওপর চোখ রেখেছে। তাই গুজব রটানো বা নাবিকরা বিপদে পড়ে এমন কিছু যেন মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়ানো না হয় সেদিকে সতর্ক থাকার জন্য জিম্মি ওই নাবিক অনুরোধ জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

অপরদিকে ইইউ ও ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ দুটি জিম্মি হওয়া জাহাজটির এক মাইলের মধ্যে থেকে সার্বক্ষণিক অনুসরণ করছে। শিপিং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জিম্মি হওয়া নাবিকদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ওই দুটি জাহাজ থেকে কোনো অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না।

বিজ্ঞাপন

সোমালিয়ার যে উপকূলে এমভি আবদুল্লাহকে প্রথমে নোঙর করা হয়েছিল সেখানকার শাসনে যারা জড়িত তাদের সাথে দস্যুদের সম্ভবত বনিবনা হয়নি। একই সাথে ইইউ ও ভারতীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজ পিছু নেয়ার ফলে জাহাজটিকে দূরে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। জাহাজটিকে সরানোর পর থেকে নাবিকদের আর কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেয়া হয়নি। ফলে জাহাজটির সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে রোববার পর্যন্ত নিশ্চিত করে কেউ কিছু বলতে পারেননি।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে কবির গ্রুপের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের কয়লাবাহী জাহাজটি সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে। এই জাহাজের মাস্টার হিসেবে আছেন চট্টগ্রামের রাশেদ মোহাম্মদ আব্দুর, চিফ অফিসার হিসেবে আছেন চট্টগ্রামের খান মোহাম্মদ আতিক উল্লাহ, সেকেন্ড অফিসার হিসেবে আছেন চট্টগ্রামের চৌধুরী মাজহারুল ইসলাম, থার্ড অফিসার হিসেবে আছেন ফরিদপুরের ইসলাম মো. তারেকুল, ডেক ক্যাডেট হিসেবে আছেন টাঙ্গাইলের হোসাইন মো. সাব্বির। এছাড়া চিফ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে আছেন নওগাঁর শাহিদুজ্জামান এএসএম, সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে আছেন খুলনার ইসলাম মো. তৌফিকুল, থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে আছেন নেত্রকোনার উদ্দিন মো. রোকন, ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে আছেন চট্টগ্রামের আহমেদ তানভীর, ইঞ্জিন ক্যাডেট হিসেবে আছেন লক্ষ্মীপুরের খান আইয়ুব, ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে আছেন উল্লাহ ইব্রাহিম খলিল, এবিল সি-ম্যান (নাবিক) হিসেবে আছেন নোয়াখালীর হক মোহাম্মদ আনোয়ারুল, চট্টগ্রামের রহমান মো. আসিফুর, হোসাইন মো. সাজ্জাদ, অর্ডিনারি সি-ম্যান (সাধারণ নাবিক) হিসেবে আছেন নাটোরের মোহাম্মদ জয়, সিরাজগঞ্জের হক মো. নাজমুল, অয়লার হিসেবে আছেন চট্টগ্রামের হক আইনুল, চট্টগ্রামের শামসুদ্দিন মোহাম্মদ, বরিশালের হোসাইন মো. আলী, ফায়ারম্যান হিসেবে আছেন চট্টগ্রামের শাকিল মোশাররফ হোসেন, চিফ কুক হিসেবে আছেন চট্টগ্রামের ইসলাম মো. শফিকুল, জেনারেল স্টুয়ার্ড হিসেবে আছেন চট্টগ্রামের মোহাম্মদ নূর উদ্দিন ও ফাইটার হিসেবে আছেন নোয়াখালীর আহমেদ মোহাম্মদ সালেহ।

জেবি/এজে

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD