জোট নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের বাধ্যবাধকতায় ক্ষুব্ধ বিএনপি ও ছোট দলগুলো

জোটগত নির্বাচনে অংশ নিলেও নিজ নিজ দলীয় প্রতীকে ভোট করার বাধ্যবাধকতা আরোপ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিএনপি ও জোটভুক্ত ছোট রাজনৈতিক দলগুলো।
বিজ্ঞাপন
তাদের দাবি, এই সিদ্ধান্ত তড়িঘড়ি করে নেওয়া হয়েছে, যা বহুদলীয় গণতন্ত্র ও সংসদে বহুমতের প্রতিনিধিত্বকে দুর্বল করবে।
সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেয়। এতে বলা হয়, কোনো দল জোটগতভাবে নির্বাচন করলেও নিজ নিজ প্রতীকে অংশ নিতে হবে।
আরও পড়ুন: ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে এনসিপি
বিজ্ঞাপন
এই সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে ছোট রাজনৈতিক দলগুলো। তারা বলছে, এত অল্প সময়ে নিজেদের প্রতীক জনগণের কাছে পরিচিত করা কঠিন হবে। আগে বড় দলের জনপ্রিয় প্রতীকে নির্বাচন করলে জোটের বার্তা সহজেই পৌঁছানো যেত, কিন্তু এখন তা আর সম্ভব নয়।
বিএনপি জানায়, এ সিদ্ধান্তে তাদের কোনো সম্মতি নেই।
দলের নেতারা জানিয়েছেন, তারা শিগগিরই নির্বাচন কমিশন ও আইন উপদেষ্টার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আপত্তিপত্র জমা দেবেন।
বিজ্ঞাপন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “প্রতীক সংক্রান্ত এই সংশোধনীতে আমরা একমত হইনি। গণতন্ত্র ও নির্বাচনের স্বার্থে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা জরুরি।”
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি মনে করেন, “প্রতীকের বিষয়টি উন্মুক্ত থাকাই ভালো ছিল।”
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “এখন প্রতীক পরিচিত করতে প্রচুর সময় ও পরিশ্রম লাগবে।”
বিজ্ঞাপন
এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ সরকারের সিদ্ধান্তকে “একতরফা ও অগণতান্ত্রিক” বলে মন্তব্য করেন।
বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, “এই আইন বাস্তবায়িত হলে বহুদলীয় গণতন্ত্র ও সংসদে ছোট দলের অংশগ্রহণ হ্রাস পাবে।”
বিজ্ঞাপন
তবে কিছু দল এই সংশোধনীকে ইতিবাচকভাবেও দেখছে। এলডিপি মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমদ মনে করেন, “নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচনে প্রতিটি দলের স্বতন্ত্র পরিচিতি বাড়বে এবং ভোটের অনুপাত বোঝা সহজ হবে।”
বিএনপি আশঙ্কা করছে, ধানের শীষ প্রতীকের বাইরে ছোট দলগুলো নিজেদের অপরিচিত প্রতীকে ভোট করলে আসন হারানোর ঝুঁকি বাড়বে। তাদের মতে, ভোটাররা পরিচিত প্রতীক খোঁজেন; নতুন প্রতীকে ভোট চাইলে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এ সিদ্ধান্ত তাত্ত্বিকভাবে গণতান্ত্রিক হলেও বাস্তবে ছোট দলগুলোর রাজনৈতিক অবস্থান দুর্বল করে দিতে পারে। তারা মনে করছেন, এই বিধান কার্যকর করতে হলে পর্যাপ্ত সময় ও আলোচনা দরকার ছিল।








