নীরব ভোটার’ নির্ধারণ করবে গয়েশ্বরের ভাগ্যরেখা

দেশে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দামামা এরই মধ্যে বেজে গেছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ২৩৬ সংসদীয় আসনে তাদের দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করে ঘোষণা করেছে। সেই মনোনয়নে ঢাকা-৩ আসনে (কেরানীগঞ্জ উপজেলার জিনজিরা, আগানগর, তেঘরিয়া, কোন্ডা ও শুভাঢ্যা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত) বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
বিজ্ঞাপন
মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই নির্বাচনী এলাকায় প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। থেমে নেই জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) প্রার্থীরাও।
তবে, আসনটিতে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের বড় ভোট ব্যাংকই শেষ পর্যন্ত প্রার্থীর জয়-পরাজয় নির্ধারণ করবে বলে মনে করছেন স্থানীয় ভোটাররা। তাদের ভাষায়, ঢাকা-৩ আসনে আওয়ামী লীগের নীরব ভোট আছে—এই ভোট যেদিকে যাবে, জয় সেই দিকেই যাবে।
বিজ্ঞাপন
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার আগানগর, জিনজিরা, শুভাঢ্যা, তেঘরিয়া ও কোন্ডা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ আসনে সরেজমিনে দেখা গেছে, সর্বত্র পোস্টার, ব্যানার ও তোরণে ছেয়ে গেছে এলাকা। অধিকাংশ পোস্টার বিএনপি সমর্থিতদের হলেও জামায়াতের প্রার্থীর প্রচারণাও চোখে পড়ছে। তবে সেভাবে চোখে পড়েনি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সম্ভাব্য প্রার্থীর বাহ্যিক প্রচারণা।
এ আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী থেকে লড়বেন অধ্যক্ষ মো. শাহীনুর ইসলাম। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী শেখ ফয়সাল। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রার্থী ঘোষণা করেছে দলটির দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার সভাপতি ব্যবসায়ী সুলতান আহমেদ খানকে। এ আসনে ধর্মভিত্তিক এ দলটির অবস্থান মোটামুটি ভালো। বিশেষ করে কেরানীগঞ্জের আগানগর এলাকার গার্মেন্ট ব্যবসায়ীদের মধ্যে ইসলামী আন্দোলনের প্রভাব রয়েছে বলে জানা যায়।
যুবদলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি রেজাউল কবির পল ছিলেন এ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী। পল কেরানীগঞ্জে তরুণদের মধ্যে সাড়া ফেলেছিলেন। ফলে বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে মনোনয়ন দেওয়ায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে পলের সমর্থকদের মধ্যে। পলের অনুসারীর কেউ কেউ বলছেন, পল স্বতন্ত্র হিসেবে ভোট করলেও জয়ী হবেন।
বিজ্ঞাপন
যুবদলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি রেজাউল কবির পল ছিলেন এ আসনের বিএনপি মনোনয়নপ্রত্যাশী। তরুণদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিলেন তিনি। কিন্তু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় মনোনয়ন পাওয়ায় পলের অনুসারীদের মধ্যে কিছুটা ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। কেউ কেউ দাবি করছেন, পল স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করলে জয়ের সম্ভাবনাও রয়েছে।
সাংগঠনিকভাবে এলাকায় শক্ত অবস্থানের পাশাপাশি নেতাকর্মীদের মধ্যেও ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের। তবে স্থানীয়ভাবে পরিচ্ছন্ন নেতা হিসেবে বেশ পরিচিতি পেয়েছেন যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি রেজাউল কবির পল। গয়েশ্বরের মনোনয়ন পাওয়ার আশাহত হয়েছেন পলের সমর্থকরা।
বিজ্ঞাপন
এদিকে, জামায়াত প্রার্থী অধ্যক্ষ মো. শাহীনুর ইসলাম বলেছেন, “আমি আপনাদের ভাই, আপনাদের সন্তান। কেরানীগঞ্জের সন্তান হিসেবে দাঁড়িপাল্লা মার্কায় দোয়া ও ভোট চাই। ইনসাফভিত্তিক সমাজ গড়তে আপনাদের সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
তবে সব কিছু ছাপিয়ে আসনটিতে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ভোটররা তাদের ভোট যে প্রার্থীর বাক্সে দিবেন সেই প্রার্থী জয়ী হবেন বলে স্থানীয়রা মনে করেন।








