পথে পথে নেতাকর্মীদের ঢল, সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে যাত্রা শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। তাকে বহনকারী উড়োজাহাজটি সেখানে স্বল্প সময়ের যাত্রাবিরতি নেয়। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, তাকে বহনকারী উড়োজাহাজটি বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বিজ্ঞাপন
তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। বিমানবন্দরের ইনকামিং ও আউটগোয়িং সড়কের দুই পাশে অবস্থান নিয়েছেন নেতাকর্মীরা। স্লোগানে মুখর হয়ে উঠেছে পুরো বিমানবন্দর সড়ক। নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা থেকেই বিমানবন্দর এলাকা একাধিক স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ঘিরে ফেলা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঢাকা মহানগর পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর প্রায় দুই হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
মিরপুর থেকে বিমানবন্দর মোড় পর্যন্ত সড়কে দেখা গেছে মানুষের অবিরাম স্রোত। সারি সারি গাড়ি, ব্যানার-ফেস্টুন ও মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা বিমানবন্দরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। কুড়িল থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো।
নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় মাঠে রয়েছে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, এপিবিএন, আনসার, ব্যাটালিয়ন আনসার এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা। বিমানবন্দর, ৩০০ ফিট সড়ক, গুলশানসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে সীমান্তরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিবি সদর দপ্তর।
এদিকে বিমানবন্দরে আনসার গার্ডের নিয়মিত সদস্যদের পাশাপাশি অতিরিক্ত ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্যদেরও গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট ও টহল ডিউটিতে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।
বিজ্ঞাপন
তারেক রহমানের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম জানিয়েছেন, সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পোশাকধারী ও সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্বে রয়েছেন। পাশাপাশি বিএনপির পক্ষ থেকেও নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) শফিকুল ইসলাম জানান, স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষ্যে পর্যাপ্তসংখ্যক গোয়েন্দা সদস্য মোতায়েন রয়েছে। নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে, তবে যান চলাচল সীমিত থাকায় সাধারণ যাত্রীদের কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে।
জানা গেছে, দেশে ফেরার পর তারেক রহমানের চলাচল, বাসভবন ও অফিস এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা বলয় থাকবে। এ কাজে পোশাকধারীদের পাশাপাশি সাদা পোশাকের গোয়েন্দারাও দায়িত্ব পালন করবেন।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: দীর্ঘ ১৭ বছর পর ঢাকার মাটিতে তারেক রহমান
অন্যদিকে, তারেক রহমানের আগমনকে কেন্দ্র করে ভোর থেকেই সদরঘাট টার্মিনাল উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে লঞ্চযোগে হাজার হাজার নেতাকর্মী সদরঘাটে এসে পৌঁছান। তাদের হাতে ছিল জাতীয় ও দলীয় পতাকা।

নেতাকর্মীদের স্বাগত জানাতে সদরঘাট ও আশপাশের এলাকায় বিশেষ অভ্যর্থনা বুথ স্থাপন করা হয়। টার্মিনালের প্রবেশপথ, পন্টুন এবং আশপাশের সড়কে সারি সারি মিছিল অবস্থান নিতে দেখা গেছে। স্বেচ্ছাসেবকরা সদরঘাট থেকে বিমানবন্দর অভিমুখে যাতায়াতে নেতাকর্মীদের দিকনির্দেশনা দিয়ে সহায়তা করছেন।
বিজ্ঞাপন
এদিকে ৩০০ ফিট এলাকায় মঞ্চের সামনে ও আশপাশে সকাল থেকেই হাজার হাজার নেতাকর্মী অবস্থান নিয়েছেন। দলীয় পতাকা ও ফেস্টুন হাতে তারা বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় আরও বাড়তে থাকে। যানবাহনের চাপ সামলাতে ট্রাফিক পুলিশকে অতিরিক্ত তৎপরতা চালাতে দেখা যায়।
মঞ্চের সামনে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যদের টহল দিতেও দেখা গেছে। একাধিক টিম গাড়িতে করে দফায় দফায় পুরো এলাকা পরিদর্শন করছে। সমন্বিত নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে যেকোনো ঝুঁকি এড়াতে সর্বোচ্চ সতর্কতা বজায় রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।








