দেশে ফেরার মাত্র ৫ দিনের মাথায় মাকে হারালেন ছেলে তারেক রহমান

কনকনে ঠাণ্ডার সকাল, কুয়াশার আড়ালে ঢাকা স্তব্ধ। হিমশীতল এই দিনে ঘুম ভাঙে অনেকের, আর ঘুমের মধ্যে থমকে দাঁড়ায় আরও অনেকে। কারণ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এক ভেঙে দেওয়া সংবাদ—বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চলে গেছেন না ফেরার দেশে।
বিজ্ঞাপন
মুহূর্তেই শোকের ছায়া নেমে আসে সারাদেশে। এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে ছুটে আসে নেতাকর্মী, সমর্থক এবং সাধারণ মানুষ। আগে থেকেই সেখানে অবস্থান করছিলেন তারেক রহমান। মায়ের মৃত্যুতে তিনি একা হয়ে পড়েন—এক অনুভূতি যা নিশ্চিতভাবে এই মঙ্গলবার তিনি কল্পনাও করেননি। দেশে ফেরার মাত্র পাঁচদিনের মাথায় এই হৃদয়বিদারক সংবাদ তারেককে দমিয়ে দিয়েছে।
লন্ডন থেকে দেশে ফেরার পর তারেক রহমান শেষবারের মতো মায়ের হাসপাতালে যাওয়ার খবর পেয়েছিলেন। সেই সময় তিনি বাইরে নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা এড়িয়ে, একান্তে সময় কাটাচ্ছিলেন। হয়তো সে সময় মাকে নিয়ে স্মৃতিচিন্তায় নিমগ্ন ছিলেন—দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় মায়ের অবিচল লড়াই, দীর্ঘদিন দূরে থাকায় তার সেবা করতে না পারার বেদনা।
বিজ্ঞাপন
জিয়াউর রহমানকে হারানোর পর রাজপথে দায়িত্বে এসে মা যখন নেতৃত্ব দিয়েছেন, সেই সময় পাশে থেকেছেন ছোট তারেক। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতা ও দেশে দীর্ঘকালের নিপীড়ন পরিবারকে বেদনায় ভেঙে দিয়েছে। ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোও একই ভাগ্য ভোগ করেছেন। কোকো ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়ায় মারা যান। মা এতটাই ভেঙে পড়েছিলেন যে তাকে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়ানো হয়েছিল।
এরপর খালেদা জিয়ার কারাগারে যাত্রা, দীর্ঘ অসুস্থতা, দেশের মানুষের প্রার্থনা, বিদেশে উন্নত চিকিৎসা—সবই নিরাশার মাঝেও দলের নেতাকর্মীদের আশা জাগিয়েছে যে নেত্রী ভোটের মাধ্যমে দলের পাশে থাকবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দীর্ঘ অসুস্থতার পর ২৩ নভেম্বর তিনি ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন।
বিজ্ঞাপন
তারেকের জন্য এটি একবারের নয়, জীবনের তৃতীয় বড় ধাক্কা। বাবা হারানো, ভাই হারানো, এবং এবার মা হারানো—এখন একা হয়ে পড়লেন তিনি। তবে খালেদা জিয়া হয়তো শেষ বিদায়ে তারেককে একটি বার্তা দিয়ে গেছেন—দেশ ও মানুষের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়া, বিপদ ও সংকটের মাঝে সঠিক পথে অটল থাকা। তারেকের জন্য এ লড়াই সহজ নয়, তবে পথও বন্ধ নয়। সে পথেই চলতে হবে, মা তাকে সেই শক্তি দিয়েছেন।








