Logo

সাগরে শক্তি সঞ্চয় করছে ‘মোন্থা’, বাংলাদেশে পড়বে কি প্রভাব?

profile picture
নিজস্ব প্রতিবেদক
২৭ অক্টোবর, ২০২৫, ১২:২৬
29Shares
সাগরে শক্তি সঞ্চয় করছে ‘মোন্থা’, বাংলাদেশে পড়বে কি প্রভাব?
ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি ঘনীভূত হয়ে রূপ নিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’-তে। রবিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

বিজ্ঞাপন

সংস্থাটি জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি আরও শক্তি সঞ্চয় করে আগামীকাল মঙ্গলবার ভারতের উড়িষ্যা ও তামিলনাড়ু উপকূলে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে আঘাত হানতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ঘূর্ণিঝড়টির সরাসরি আঘাত বাংলাদেশে না পড়লেও এর প্রভাব থাকবে উপকূলীয় অঞ্চলে। উপকূলের কাছাকাছি এলাকায় মাঝারি ধরনের বাতাস বইতে পারে এবং দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে।

সোমবার সকালে প্রকাশিত বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’-তে পরিণত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আঞ্চলিক সাইক্লোন সংস্থা এসকাপের তালিকা অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়টির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মোন্থা’, যা থাইল্যান্ডের প্রস্তাবিত নাম। থাই ভাষায় ‘মোন্থা’ শব্দের অর্থ- সুন্দর বা সুবাসিত ফুল। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ঘূর্ণিঝড়গুলোর নাম আগেই নির্ধারিত থাকে।

সোমবার সকাল পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’ অবস্থান করছে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে, অর্থাৎ ১১.৭ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৫.৫ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশে।

বিজ্ঞাপন

রবিবার দিবাগত রাত ৩টার সময় ঘূর্ণিঝড়টি অবস্থান করছিল- চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে প্রায় ১৩৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ১৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা থেকে ১২৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা বন্দর থেকে ১২৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে।

আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়টি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাতের মধ্যে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে পৌঁছাতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। বর্তমানে ঘূর্ণিঝড়ের আশপাশের সমুদ্র এলাকা অত্যন্ত উত্তাল রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বিশেষ বুলেটিনে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত নামিয়ে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত প্রদর্শন করতে বলা হয়েছে। এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল এবং গভীর সাগরে না যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে আঘাতের পর দুর্বল হয়ে ভারতের বিহার ও পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশের দিকে আসতে পারে। এর ফলে আগামী বুধবার থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি শুরু হতে পারে। রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা অঞ্চলে বৃষ্টিপাত চলবে মাসের শেষ দিন পর্যন্ত। রাজধানী ঢাকাতেও ছিটেফোঁটা বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আবহাওয়া অধিদপ্তরের শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী- ঘণ্টায় ৬২–৮৮ কিলোমিটার বেগের ঝড়কে বলা হয় ‘ঘূর্ণিঝড়’, ৮৯–১১৭ কিলোমিটার বেগের হলে ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়’, ১১৮–২১৯ কিলোমিটার বেগে ‘হারিকেনের গতিসম্পন্ন ঘূর্ণিঝড়’, আর ২২০ কিলোমিটার বা তার বেশি হলে সেটি ‘অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়’ বা সুপার সাইক্লোন হিসেবে শ্রেণিভুক্ত হয়।

এর আগে চলতি মাসের শুরুতে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছিল ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’, তবে সেটির তেমন কোনো প্রভাব বাংলাদেশে পড়েনি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘মোন্থা’ তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী হতে পারে এবং এর প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে আবহাওয়ার পরিবর্তন কয়েকদিন স্থায়ী হতে পারে।

জেবি/এএস
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD