অস্ত্র, গ্রেনেড ও রকেট সেলসহ দুই সন্ত্রাসী আটক

১টি বিদেশী রিভলবার, ৯ রাউন্ড পিস্তলের এ্যামুনিশন, ১টি এলজি এবং ৩টি ১২ বোর কার্তুজ।
বিজ্ঞাপন
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন গহীন পাহাড়ে রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী গোষ্ঠি আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) আস্তানার সন্ধান পেয়েছে র্যাব। যেখানে টানা ৬ ঘন্টার অভিযানে অস্ত্র, গ্রেনেড ও রকেট সেলসহ দুই সন্ত্রাসীকে আটক করেছে র্যাব।
বুধবার (১৫ মে) ভোর ৫ টা থেকে উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন গহীন লাল পাহাড়ে এ অভিযান চালানো হয় বলে জানান র্যাব সদর দপ্তরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মোহাম্মদ আরাফাত ইসলাম।
বিজ্ঞাপন
অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছে, ৫টি রকেল সেল, ৩টি রাইফেল গ্রেনেড, ১০টি দেশীয় তৈরী হ্যান্ড গ্রেনেড, ১৩টি ককটেল, ১টি বিদেশী রিভলবার, ৯ রাউন্ড পিস্তলের এ্যামুনিশন, ১টি এলজি এবং ৩টি ১২ বোর কার্তুজ।
বিজ্ঞাপন
অভিযানে আটক করা হয়েছে, আরসার অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক ও কমান্ডার ১৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সৈয়দুল আবেরার ছেলে মো. শাহনুর প্রকাশ মাস্টার সলিম (৩৮) ও সলিমের অন্যতম সহযোগি ৮ নম্বর ক্যাম্পের মৃত মোহাম্মদ নুরের ছেলে মো. রিয়াজ (২৭)।
অভিযান শেষে বেলা ১২ টায় ঘটনাস্থলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব সদর দপ্তরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মোহাম্মদ আরাফাত ইসলাম জানিয়েছেন, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া হত্যাকান্ড এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী ঘটনার প্রেক্ষিতে র্যাব-১৫ গোয়েন্দা তৎপরতা ও নজরদারী শুরু করে। যার সূত্র ধরেই জানা যায় মাস্টার সেলিম বর্তমানে বাংলাদেশের আরসার প্রধান হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছে। তার নেতৃত্বে পুনরায় হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ড পরিচালনা এবং পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে অস্ত্র-গোলাবারুদ সংগ্রহ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নাশকতার সৃষ্টির চেষ্টা করছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ভোরে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন লাল পাহাড়ে আরসার আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করে র্যাব। এসময় দুইজন আরসা সন্ত্রাসী আটক করতে সক্ষম হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে অস্ত্র, গ্রেনেড ও রকেট সেল উদ্ধার করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরে কমান্ডার মোহাম্মদ আরাফাত ইসলাম জানান, শাহনুর প্রকাশ মাস্টার সলিম ২০১৭ সালে বাংলাদেশে প্রবেশ এবং ১৫ নম্বর ক্যাম্পে বসবাস শুরু করে। সে মিয়ানমারে থাকাকালীন সেখানকার আরসা জোন কমান্ডারের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল। এছাড়াও আরসা প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনির দেহরক্ষী হিসেবে দুই মাস দায়িত্ব পালন করে। বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী হিসেবে ২০১৭ সালে আসার পর মৌলভী আকিজের মাধ্যমে আরসায় পুনরায় যোগদান করে। আরসার হয়ে আধিপত্য বিস্তার কোন্দলসহ খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে। অস্ত্র চালনাসহ বিভিন্ন বিস্ফোরকের উপর পারদর্শী। তার বিরুদ্ধে ৩টি হত্যা মামলাসহ অন্যান্য বিভিন্ন অপরাধে একাধিক মামলা রয়েছে। আর রিয়াজ তার সহযোগি। এব্যাপারে মামলা করে আটককে উখিয়া থানায় সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।
বিজ্ঞাপন
তিনি জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন কারণে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কর্তৃক ২০২৩ সালে ৬৪ জন এবং ২০২৪ সালে অদ্যাবধি পর্যন্ত ১৬ জন নির্মমভাবে হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে। এ সকল সন্ত্রাসী কার্যক্রম নির্মূলে র্যাব শুরু থেকেই বিশেষ গোয়েন্দা তৎপরতা ও নজরদারী চালু রেখেছে। যার প্রেক্ষিতে ১১০ জন আরসা সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তাদের নিকট থেকে ৫১.৭১ কেজি বিস্ফোরক, ১২টি বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র, ৫৩টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ১৫৩ রাউন্ড গুলি/কার্তুজ, ৬৭ রাউন্ড খালি খোসা, ৪টি আইডি ও ৩৫টি ককটেল উদ্ধার করা হয়। এঅভিযান অব্যাহত রাখা হবে বলে জানান তিনি।
বিজ্ঞাপন
এদিকে বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন সেনাবাহিনীর বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল। দলটি অভিযানে উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক, গ্রেনেড, আইইডি এবং রকেট সেল নিষ্ক্রিয়করণ করেছে।
জেবি/এসবি