বন্ধুত্বের টানে রাজমিস্ত্রির বাড়িতে মার্কিন নাগরিক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গড়ে ওঠা এক বন্ধুত্বের টানে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ছুটে এসেছেন নাটোরের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে মার্কিন নাগরিক তেরি পারসন।
বিজ্ঞাপন
বর্তমানে তিনি নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চর বালশা গ্রামে অবস্থান করছেন তার বন্ধু সেতু মোল্লার বাড়িতে।
গত মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ভোরে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তেরি পারসন। বিমানবন্দর থেকেই তাকে স্বাগত জানিয়ে নিজের গ্রামে নিয়ে আসেন সেতু মোল্লা।
সেতু পেশায় একজন ভ্যানচালক ও রাজমিস্ত্রি। অবসরে তিনি নিজের ফেসবুক পেজে ভিডিও তৈরি করেন। প্রায় ২৫ দিন আগে তার একটি ভিডিওতে লাইক দেন মার্কিন ব্যবসায়ী তেরি পারসন। সেখান থেকেই শুরু হয় দু’জনের আলাপ, তারপর গড়ে ওঠে আন্তরিক বন্ধুত্ব।
বিজ্ঞাপন
সেতু মোল্লা বলেন, “আমারও ওকে ভালো লাগে, আর ও আমাকে ভাইয়ের মতো মনে করেছে। আমন্ত্রণ জানানোর পর সত্যিই বাংলাদেশে চলে এসেছে।”
তেরি পারসন এই বন্ধুর টানে ১৫ দিনের ছুটি নিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন। সঙ্গে এনেছেন বন্ধুর জন্য উপহার ও গ্রামের শিশুদের জন্য খেলনা। ইতোমধ্যেই গ্রামের মানুষ ও শিশুদের সঙ্গে তার বেশ সখ্যতা গড়ে উঠেছে।
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশের খাবার, বিশেষ করে মুরগির মাংস ও চা তার পছন্দের তালিকায়। বন্ধুর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় ঘুরে দেখছেন গ্রাম ও চলনবিলের প্রকৃতি।
তেরি পারসন বলেন, “বাংলাদেশে এসে বুঝেছি, সাধারণ মানুষ কতটা হৃদয়বান হতে পারে। এখানে সবাই অতিথিপরায়ণ ও আন্তরিক। আমেরিকায় জীবন বিলাসী, কিন্তু এখানে মানুষ সরলভাবে বাঁচে—এটাই সবচেয়ে সুন্দর। আবারও ছয় মাস পর এখানে আসব, আর আমার বন্ধুদেরও বলব বাংলাদেশে ঘুরে যেতে।”
বিজ্ঞাপন
আরও ১১ দিন বাংলাদেশে থাকবেন তিনি। এ সময় তিনি গ্রামীণ জীবনধারা কাছ থেকে দেখবেন এবং স্থানীয় সংস্কৃতি উপভোগ করবেন।
খুবজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম বলেন, “বন্ধুত্বের টানে আমাদের চর বালশা গ্রামে একজন মার্কিন নাগরিক এসেছেন—এটা গর্বের বিষয়। তিনি চলনবিল দেখে মুগ্ধ হয়েছেন। একজন মানুষ যদি অন্য মানুষের প্রতি ভালোবাসা দেখায়, তাহলে সুদূর আমেরিকা থেকেও সে বাংলাদেশে চলে আসতে পারে—এই বন্ধুত্বই তার জীবন্ত প্রমাণ।”