Logo

স্পিরিট পানে ৬ জনের মৃত্যু, মাদকের সহজলভ্যতাকে দায়ী করছে স্থানীয়রা

profile picture
জেলা প্রতিনিধি
চুয়াডাঙ্গা
১৩ অক্টোবর, ২০২৫, ১৫:০৩
8Shares
স্পিরিট পানে ৬ জনের মৃত্যু, মাদকের সহজলভ্যতাকে দায়ী করছে স্থানীয়রা
ছবি: প্রতিনিধি

চুয়াডাঙ্গায় বিষাক্ত স্পিরিট পানে একে একে ৬ জনের মৃত্যুর ঘটনায় মাদকের সহজলভ্যতাকে দায়ী করছে স্থানীয়রা। তারা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তায় শুধু শহরেই না এখন গ্রামের অলিগলিতে মিলছে নানা ধরনের মাদক। হাত বাড়ালেই সহজেই মিলছে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য। মরননেশা এসব মাদকের ভয়াল থাবায় ঘটছে প্রাণহানী, ধ্বংস হচ্ছে সমাজ।

বিজ্ঞাপন

এদিকে মৃতদের মধ্যে চারজনের মরদেহ গোপনে দাফন হলেও বাকি দুই জনের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের একটি প্রতিনিধি দল। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে হেফাজতে নিয়েছে সদর থানা পুলিশ।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে চুয়াডাঙ্গা সদরের ডিঙ্গেদহ বাজার এলাকায় একসাথে বসে বিষাক্ত স্পিরিট পান করেছিলেন বেশ কয়েকজন দিনমজুর-শ্রমিক। বিষক্রিয়ায় তাদের মধ্যে শনিবারে দুইজন ও রোববার চারজনের মৃত্যৃ হয়। প্রথমে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তারা স্ট্রোক করে মারা গেছেন বলে দাবি করা হয়। পরে তাদের মধ্যে এক ব্যক্তি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলে তার মৃত্যুর কারণ হিসেবে চিকিৎসক উল্লেখ করেন ‘অ্যালকোহলিক পয়জেনিং’।

বিজ্ঞাপন

এরপর বিষয়টি জানাজানি হয়। খবর পেয়ে রবিবার দিনগত রাতভর শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের খেজুরা, ডিঙ্গেদহ, নফরকান্দি, জালশুকা ও পিরোজখালী গ্রামে অভিযান চালায় পুলিশের একাধিক ইউনিট। সেখান থেকে ৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে পুলিশ। এছাড়া অসুস্থ তিনজনকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়।

অপরদিকে, একসাথে এত সংখ্যক মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় মাদকের সহজলভ্যতাকে দায়ী করছে স্থানীয়রা। খেজুরা গ্রামের বাসিন্দা সেলিম উদ্দীন নামে এক বাসিন্দা বলেন, গ্রামের অলিতে গলিতে মাদক ছেঁয়ে গেছে। মাদকব্যবসায়ীদের পিছনে প্রভাবশালী মহলের ইন্ধন রয়েছে। আমরা কিছু বলতে গেলে পাল্টা হুমকি পেতে হয়। এখনই এসব মাদকদ্রব্য নির্মূল করা না গেলে আরও বড় ক্ষতির জন্য অপেক্ষা করতে হবে আমাদের।

আরেক ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলাম বলেন, এই মাদক বিক্রি তো নতুন নয়। মাদকব্যবাসয়ীরা লোক দেখানো অভিযানে ধরা পড়ে, আবার ছাড়া পায়। ফিরে এসে পুনরায় ব্যবসা শুরু করে। প্রশাসন দেখেও দেখে না।

বিজ্ঞাপন

মাদকের ভয়াবহতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহিবুল আলম সুজন বলেন, মাদক নির্মূলে আমরা বেশ কয়েকটার চেষ্টা করেছি। নানা ধরনের উদ্যোগ হাতে নিয়েছিলাম। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হয়নি। বরং মাদকের বিস্তার বেড়েছে। এজন্য প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়া ছাড়া উপায় নেই।

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড আপস) জামাল আল নাসের বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তারা ওই ডিঙ্গেদহ বাজারের আশপাশের কোনো মাদকব্যবসায়ীর কাছ থেকে এই নেশাজাতীয় দ্রব্য কিনে সেবন করেছিল। কার কাছ থেকে কিনেছে সেসব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জুমাত আলী নামে একজনকে থানা হেফাজতে নেয়া হয়েছে। এছাড়া থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

বিজ্ঞাপন

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমান জানান, খবর পেয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিভিন্ন ধরনের নমুনা সংগ্রহ করেছে। কেউ যাতে অপচিকিৎসার শিকার না হয় সেজন্য রাজশাহী মেডিকেলের টক্সিকোলজি বিভাগে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়া হবে। এমনকি সরকারি ব্যবস্থাপনায় অ্যাম্বুলেন্সযোগে অসুস্থ ব্যক্তিদের রাজশাহী নেয়া হবে।

জেবি/এসএ
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD