ঝিকরগাছায় মাদ্রাসায় না এসেও নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলছেন অধ্যক্ষ

সেলিম হুসাইন রনি: যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার শ্রীরামপুর ছিদ্দিকীয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে নিয়মিত মাদ্রাসায় উপস্থিত না থেকেও হাজিরা খাতায় সই করে বেতন-ভাতা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, তিনি দীর্ঘদিন ধরে এমন অনিয়ম করে আসছেন।
বিজ্ঞাপন
জানা গেছে, উপজেলার ৬নং ঝিকরগাছা ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামে ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ছিদ্দিকীয়া আলিম মাদ্রাসা। ১৯৮৭ সালের ১ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠানটিতে যোগ দেন মাওলানা মো. আব্দুর রাজ্জাক। তবে তিনি প্রায় সময় অসুস্থতার অজুহাতে সপ্তাহে এক–দুই দিন মাদ্রাসায় আসেন এবং ওই সময় হাজিরা খাতায় পুরো সপ্তাহের স্বাক্ষর দিয়ে যান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অধ্যক্ষের অফিসকক্ষ ফাঁকা। রবিবার (২৬ অক্টোবর) তিনি অল্প সময়ের জন্য মাদ্রাসায় এলেও হাজিরা খাতায় পরপর তিন কর্মদিবসে তার সই অনুপস্থিত ছিল। এ সময় অলিখিতভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলেন এটিএম আব্দুল আহাদ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এটিএম আব্দুল আহাদ বলেন, “অধ্যক্ষ অসুস্থ থাকায় আসতে পারেননি। তবে তিনি ছুটির কোনো আবেদন জমা দেননি।”
বিজ্ঞাপন
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, অধ্যক্ষ প্রায়ই অসুস্থতার কথা বলে মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকেন, কিন্তু হাজিরা খাতায় নিয়মিত সই করে বেতন-ভাতা তুলে নেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “আমি সকালে মাদ্রাসায় গিয়েছিলাম, সাড়ে ১১টার আগে চলে এসেছি।” তবে বুধবার ও বৃহস্পতিবারের উপস্থিতি বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বিরক্ত হয়ে ধুত বলে ফোন কেটে দেন।
মাদ্রাসার এডহক কমিটির সভাপতি মো. তৌহিদুর রহমান বলেন, “তিনি অসুস্থ থাকার কারণে মানবিক বিবেচনায় কিছু বলা হয়নি। তাকে মেডিকেল ছুটি নিতে বলা হলেও এখনো পর্যন্ত নেননি।”
বিজ্ঞাপন
উপজেলা শিক্ষা অফিসার এস.এম. সুলতান মাহমুদ বলেন, “গত ৮ অক্টোবর আমি মাদ্রাসা পরিদর্শনে গিয়ে অধ্যক্ষকে অনুপস্থিত পাই। পরে তাকে দেখা করতে বললেও তিনি এখনও অফিসে আসেননি।”
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা অভিযোগ করেছেন, সরকারি অর্থে বেতন-ভাতা নিয়ে দায়িত্বে অবহেলা করা শিক্ষার মান ও প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে।








