রাজস্থলীর একমাত্র ঝুলন্ত সেতু এখন ঝুঁকির প্রতীক

রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার একমাত্র ঝুলন্ত সেতু—যা স্থানীয়দের কাছে ‘রাজস্থলীর প্রতীক’ হিসেবে পরিচিত—দীর্ঘদিন সংস্কারহীন পড়ে থাকার কারণে এখন মারাত্মক ঝুঁকির মুখে। প্রতিদিন শত শত মানুষ এই নড়বড়ে সেতুতে নিজেদের জীবন হাতে নিয়ে পারাপার করছেন।
বিজ্ঞাপন
সড়কজুড়ে দেখা যায়, কাপ্তাই নদীর ওপর প্রায় ৫০–৬০ ফুট উঁচুতে ঝুলে থাকা সেতুটির কাঠের পাটাতন বহু জায়গায় নরম হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও পাটাতন ভেঙে নদীতে পড়ে যাওয়ায় হাঁটা তো দূরের কথা, সঠিকভাবে পা ফেলাও দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। ঢিলে হয়ে যাওয়া তার বাতাসে দুলে সেতুটিকে আরও ভয়ংকর করে তোলে। তবুও প্রতিদিন সকালে স্কুলের পোশাক পরে শিশুরা ব্যাগ কাঁধে নিয়ে এই ঝুঁকিপূর্ণ সেতু পার হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, বর্ষায় কাঠ ভিজে নরম হয়ে যায়, পরে পচে ভেঙে পড়ে। বছর ধরে এ অবস্থা চললেও কখনো স্থায়ী সংস্কার হয়নি।
এক পথচারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এই সেতু দিয়ে হাঁটলেই মনে হয় নিচে পড়ে যাব। যেন জীবনটা ঝুলে আছে সেতুর সঙ্গে।”
বিজ্ঞাপন
স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদেরও একই ভয়। পাটাতনের ফাঁক দিয়ে নিচে নদীর পানি দেখা যাওয়ায় তারা আরও আতঙ্কিত হয়ে হাঁটেন।
একজন অভিভাবক বলেন, “প্রতিদিন সন্তানদের এই সেতু দিয়ে যেতে হয়। ওদের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তা লেগেই থাকে।”
সেতুর দুই পাশের তার ও সাপোর্টেও বয়সের ছাপ স্পষ্ট। স্থানীয়দের শঙ্কা—যেকোনো সময় ভারী চাপ, ঝড় বা বৃষ্টি এলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
বিজ্ঞাপন
এলাকার প্রবীণদের ভাষায়, “এই সেতু আমাদের জীবনরেখা। কিন্তু এখন সেটাই মৃত্যুঝুঁকির কারণ।”
এ বিষয়ে রাজস্থলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান খান জানান, “সেতুটির ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা আমাদের জানা। দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডে আবেদন পাঠানো হয়েছে, প্রক্রিয়া চলছে।”
তিনি আরও বলেন, “নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
বিজ্ঞাপন
স্থানীয়দের দাবি—এখন আর সাময়িক মেরামতে কাজ হবে না। প্রয়োজন টেকসই, স্থায়ী এবং আধুনিক একটি সেতু।
এক স্থানীয় প্রতিনিধি বলেন, “প্রতি বছর সামান্য সংস্কার করে ঝুঁকি ঢেকে রাখা যায় না। এখন সময় এসেছে পুরোপুরি নতুন ও শক্তিশালী সেতু নির্মাণের।”
রাজস্থলীর বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের যাতায়াত নির্ভর করে এই সেতুর ওপর। তাই দ্রুত স্থায়ী সমাধানের প্রত্যাশা তাদের সবার।








