কিশোরগঞ্জ হাসপাতালে রমরমা টিকিট বাণিজ্য

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগের টিকিট বাণিজ্যের অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
বিজ্ঞাপন
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, বহির্বিভাগে চিকিৎসক দেখাতে রোগীপ্রতি টিকিটের মূল্য তিন টাকা নির্ধারিত হলেও আদায় করা হচ্ছে ৫-১০ টাকা।
শুধু তাই নয়, অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়ে প্রতিবাদ করলে দুর্ব্যবহারের শিকার হচ্ছেন রোগীরা। তবে এসব বিষয়ে অবগত নন বলে দাবি করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও প প কর্মকর্তা নীল রতন দেব।
প্রতি বছর হাসপাতালের বহির্বিভাগের টিকিট বাবদ বাণিজ্য হচ্ছে লাখ টাকারও বেশি । দীর্ঘদিন এ অনিয়ম চলছে বলে অভিযোগ রোগী ও তার স্বজনদের।
বিজ্ঞাপন
রোগীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সরেজমিনে বহির্বিভাগে টিকিট কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায় রোগীদের ভিড়। সেখানে টিকিট বিক্রি করছেন হারবাল এসিস্ট্যান্ট আলমগীর হোসেন। প্রত্যেক রোগীর কাছ থেকে ৫-১০ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছেন। প্রতিবাদ করলে দুর্ব্যবহার করেন রোগীরা বাধ্য হয়ে তার চাহিদামতো টাকা দিচ্ছেন।
প্রতি টিকিট ৫ টাকা রাখার বিষয়ে টিকিট কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা হাসপাতালে হারবাল অ্যাসিস্ট্যান্ট আলমগীর হোসেনকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন দুই টাকা খুচরা দেয়া সম্ভব নয় তাই ৫ টাকা করে রাখা হচ্ছে। কেউ আবার ২ টাকা ফিরত না নিয়ে চলে যায়।
বিজ্ঞাপন
উপজেলার কেশবা থেকে আসা রোগী ইয়া ইয়া বলেন, ‘কাউন্টারে এসে টিকিট চাইলে পাঁচ টাকা দাবি করেন কাউন্টারে থাকা লোকজন। তিন টাকার কথা বললে তিনি আমাকে লাইনের পাশে দাঁড় করিয়ে রাখেন এবং বলে বেশি কথা বললে টিকিট দেবো না। পরে বাধ্য হয়ে পাঁচ টাকাই দিয়েছি।’
চাঁদখানা ইউনিয়ন থেকে চিকিৎসা নিতে আসা মজিবর রহমান বলেন, আমি ১০ টাকার নোট দিয়েছি আমাকে ৫ টাকা ফেরত দিয়েছে। যদি টিকিটের দাম ৩ টাকা হয় তাহলে কেন ৫ টাকা নিল। এভাবে টিকিট প্রতি ২ টাকা বেশি নিলে মাসে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা হয়। এভাবে বছরে লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তারা। এসব দেখার কেউ নেই।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয়রা বলেন, এমনিতে টিকিটের দাম বেশি নিচ্ছে তারপরও আবার রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার। তাদের ব্যবহারে আমরা অসন্তোষ। চাকরিজীবী নয়, যেন মাস্তান। অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা দাবি জানাই।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৩-৪ শতাধিক রোগী টিকিট কেটে চিকিৎসক দেখান। মাসে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৯-১২ হাজার। মাসে ৯ হাজার হিসেবে বছরে টিকিট কাটা রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১ লাখ ৮ হাজার। সে হিসেবে রোগীপ্রতি ২-৭ টাকা বেশি নিলে টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ২-৬ লাখ টাকা। এভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প প কর্মকর্তা ডা: নীল রতন দেব বলেন, বহির্বিভাগে টিকিট প্রতি তিন টাকা নেয়ার কথা। যদি টিকিট কাউন্টারে অতিরিক্ত টাকা কেউ নিয়ে থাকে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।








