মায়ের জ্ঞান ফেরার অপেক্ষায় থমকে আছে মেডিকেল ছাত্র রাফির দাফন

রাজধানীতে ভূমিকম্পে ভবনের রেলিং ভেঙে প্রাণ হারানো মেডিকেল ছাত্র রাফিউল ইসলাম রাফির (২১) জানাজা সম্পন্ন হলেও দাফন এখনও স্থগিত।
বিজ্ঞাপন
গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাফির মা নুসরাত জাহান মিতা অচেতন থাকায় তাকে শেষবারের মতো ছেলের মুখ দেখানোর অপেক্ষায় রয়েছে পরিবার।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্সে রাফির মরদেহ বগুড়ার গোয়াইল রোডে পৌঁছালে পুরো এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। স্বজন, সহপাঠী ও প্রতিবেশীরা তাকে হারানোর বেদনায় ভেঙে পড়েন। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন রাফি।
বিজ্ঞাপন
একই ঘটনায় গুরুতর আহত তার মা মিতাকে আরেকটি অ্যাম্বুলেন্সে করে বগুড়ায় এনে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মাথায় মারাত্মক আঘাত থাকায় তিনি এখনো অচেতন।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আগামী ৭২ ঘণ্টা না গেলে তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে না। পরিবার জানিয়েছে, এখনো তাকে ছেলের মৃত্যুসংবাদ দেওয়া হয়নি।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার ভোরে বংশালের কসাইটুলিতে একটি মাংসের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন মা-ছেলে। ঠিক সেই সময় ভূমিকম্পে ভবনের রেলিং ভেঙে রাফির মাথায় পড়ে। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
বিজ্ঞাপন
শনিবার বাদ জোহর বগুড়ার সেউজগাড়ী সেন্ট্রাল হাই স্কুল মাঠে জানাজায় শতাধিক মানুষ অংশ নেন। পরে নামাজগড় আঞ্জুমান-ই-মফিদুল কবরস্থানে দাফনের প্রস্তুতি নেওয়া হলেও, মায়ের চেতনাপ্রাপ্তির অপেক্ষায় দাফন স্থগিত রয়েছে।
রাফির বাবা ওসমান গনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ছেলেকে ডাক্তার বানানোর স্বপ্ন ছিল। কেন এত তাড়াতাড়ি চলে গেল সে?
সহপাঠীরা বলেন, রাফি ছিলেন শান্ত, মেধাবী ও পরিশ্রমী—সবসময় চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করার কথা বলতেন।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় বাসিন্দা মাহবুব হাসান বলেন, এতো ভালোমানুষের এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া কঠিন। এখন নিজের সন্তানদের নিয়েও আতঙ্ক লাগে।
নিহতের চাচা আব্দুস সামাদ জানান, মা-ছেলেকে একই অ্যাম্বুলেন্স বহর নিয়ে আনা হয়েছে। জানাজা শেষ হলেও মাকে ছেলের মুখ দেখানোর জন্যই দাফনে দেরি করা হচ্ছে। তিনি এখনো অচেতন।








