ইউএনও নেই দুই মাস ধরে, ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ

ইউএনও না থাকার কারণে মৌলভীবাজার রাজনগর উপজেলার সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাতেমা তুজ জাহরা।
বিজ্ঞাপন
এ অবস্থায় ব্যাহত হচ্ছে দাপ্তরিক কাজকর্ম। গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। সঠিকভাবে তদারকি হচ্ছে না বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড।
উপজেলায় দুই মাস ধরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদটি শূন্য রয়েছে। একটি উপজেলার সর্বোচ্চ পদ ‘উপজেলা নির্বাহী অফিসার’। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার রাজনগরের উপজেলার সাবেক নির্বাহী অফিসার আফরোজা হাবিব শাপলা গত ৬ অক্টোবর বদলি হওয়ার পর থেকে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে রুটিন দায়িত্ব পালন করেছেন রাজনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাতেমা তুজ জাহরা।
জানা যায়, ইউএনওর স্বাক্ষর ছাড়া যেমন বেতন ভাতা হয় না কর্মচারীদের, তেমনি উপজেলার বিভিন্ন দপ্তর, শিক্ষা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার থাকায় বিভিন্ন ফাইলে তাকেই স্বাক্ষর দিতে হয়। আর্থিক বিষয়াদি স্বাক্ষরের দায়িত্ব না থাকায় বিপাকে পড়েছেন বিভিন্ন দপ্তর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও আর্থিক বিষয়াদির দপ্তরগুলো। আটকে আছে উন্নয়ন কাজ।
বিজ্ঞাপন
তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করে সাধারণ বিষয়গুলো দেখভাল করলেও আর্থিক বিষয়ে স্বাক্ষরের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি তাকে। এদিকে যেসব বিদ্যালয়ের কমিটি নেই সেসব বিদ্যালয়ে এডহক কমিটি রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির প্রধানের দায়িত্বে রয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। এছাড়াও বিভিন্ন কমিটির সভাপতি হিসেবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী অফিসারের রুটিন দায়িত্ব পালন করলেও আর্থিক বিষয়ে স্বাক্ষরের ক্ষমতা দেওয়া হয়নি ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে। ফলে উপজেলা প্রকল্প অফিসের টিআর কাবিখার ১ম পর্যায়ের তালিকা করেও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষরের অভাবে পাস হয়নি।
এছাড়াও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের বিভিন্ন কাজের বিল প্রস্তুত হলেও নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষরের কারণে আটকে আছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলা বিল পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। কৃষি অধিদপ্তর, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়ন কাজ, কর্মচারীদের বেতন ভাতা আটকে আছে। বিগত মাসে বেতন পাননি নির্বাহী অফিসারের কর্মচারীরা। চলতি মাসেও বেতন ভাতা হবে কিনা সন্দেহ রয়েছে।
উপজেলা অফিসে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ জানান, ইউএনও না থাকায় তাদের অনেক কাজ ঝুলে আছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের এক কর্মচারী জানান, "আমরা ছোট চাকরী করি। আমাদের বেতনও সামান্য। বর্তমান উচ্চ মূল্যের বাজারে এমনিতেই বেতনে পুষায়না। বাকিতে মাসের বাজার চালাই। কিন্তু নির্বাহী অফিসার না থাকায় আমাদের বেতন ভাতা হচ্ছে না। গত মাসে বেতন পাইনি। চলতি মাসের বেতন কবে পাবো তাও বলতে পারছি না।"
বিজ্ঞাপন
রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ফাতেমা তুজ জাহরা বলেন, "আমি ভারপ্রাপ্ত হিসেবে রুটিন দায়িত্ব পালন করছি। আর্থিক বিষয়ে আলাদা করে দায়িত্ব দিতে হয়।"
এবিষয়ে জানতে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক তৌহিদুজ্জামান পাভেলের মোবাইল ফোনে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।








