Logo

শত শত অরক্ষিত ‘মৃত্যুকূপ’, বরেন্দ্র অঞ্চলে ঝুঁকিতে শিশুরা

profile picture
জেলা প্রতিনিধি
রাজশাহী
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২১:২৩
5Shares
শত শত অরক্ষিত ‘মৃত্যুকূপ’, বরেন্দ্র অঞ্চলে ঝুঁকিতে শিশুরা
ছবি: সংগৃহীত

বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির স্তর নিচে নামার কারণে বহু নলকূপ বসানো ও পুনঃস্থাপনের সময় তৈরি হওয়া অরক্ষিত গভীর গর্ত শিশুদের জন্য বড় ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে। রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁর বিভিন্ন উপজেলায় এ ধরনের শত শত পরিত্যক্ত নলকূপের গর্ত রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

নলকূপ বসানোর কাজের জন্য পানির স্তর নির্ধারণ করতে একাধিক স্থানে খোঁড়াখুঁড়ি বা বোরিং করা হয়। খননকাজ চলাকালীন এসব গর্ত প্রায়শই অরক্ষিত থাকে। কোথাও আংশিকভাবে বন্ধ করা হলেও বেশিরভাগই পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকে, যা শিশুদের জন্য মারাত্মক বিপদ সৃষ্টি করে।

গত বুধবার (১০ ডিসেম্বর) তানোরের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে দুই বছর বয়সী শিশু সাজিদ গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে মৃত্যুবরণ করে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ৩২ ঘণ্টার চেষ্টায় শিশুটিকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন। শিশুটির মৃত্যু এলাকার মানুষদের মধ্যে সতর্কতার হুঁশিয়ারি জাগিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রাজশাহীর তানোর, গোদাগাড়ী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর ও নাচোল এবং নওগাঁর নিয়ামতপুর, পোরশা ও সাপাহার উপজেলায় এই ধরনের বহু পরিত্যক্ত নলকূপের গর্ত রয়েছে। সাধারণত এসব গর্তের ব্যাস ৮ থেকে ১২ ইঞ্চি।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নতুন নলকূপ বসানোর সময় একাধিক বোরিং চালানো হয়। কাজ শেষে অনেক ক্ষেত্রে গর্ত বন্ধ করা হয় না। ফলে শিশুরা সহজেই এতে পড়ে যায়। নলকূপ বসানো ও পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকারি বিধি ও নিরাপত্তা না মানায় বিপদ বাড়ছে।

বরেন্দ্র অঞ্চলে কৃষি কার্যক্রমের জন্য বিএমডিএ (বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) কর্তৃক কয়েক হাজার গভীর নলকূপ স্থাপিত আছে। তবে ব্যক্তিমালিকানায় আরও অসংখ্য নলকূপ বসানো হয়েছে। পানির স্তর ক্রমশ নিম্নমুখী হওয়ায় ২০১৫ সালে বিএমডিএ সিদ্ধান্ত নেয়, তারা নতুন গভীর নলকূপ স্থাপন করবে না। তবুও ব্যক্তি মালিকানায় নলকূপ বসানো থেমে যায়নি।

বিজ্ঞাপন

তানোর উপজেলার উদাহরণে দেখা গেছে, বিএমডিএর অধীনে ৫২৯টি গভীর নলকূপ রয়েছে। কিন্তু ব্যক্তিমালিকানায় ১৬টি গভীর নলকূপ এবং অনুমোদনহীন প্রায় আড়াই হাজার সেমিডিপ স্থাপিত আছে। এসবের কারণে শিশু ও স্থানীয়দের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছে।

নিহত শিশুর পরিবার ও স্থানীয়রা বলেছেন, খননকাজের পরে গর্তগুলো বন্ধ না করলে শিশুর মতো দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব নয়। উপজেলা প্রশাসন ইতোমধ্যেই বিএমডিএকে নির্দেশ দিয়েছে অরক্ষিত নলকূপ চিহ্নিত ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।

বিজ্ঞাপন

তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুজ্জামান বলেন, শিশু সাজিদের মৃত্যুর ঘটনায় জিডি মূল্যে মামলা হয়েছে। পরিবার চাইলে মামলা করা যাবে।

স্থানীয়রা আশা করছেন, এই দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে অরক্ষিত নলকূপ ও সেমিডিপগুলো দ্রুত বন্ধ করা হবে, যাতে বরেন্দ্র অঞ্চলের শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।

জেবি/এএস
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD