গভীর নলকূপের গর্ত থেকে যেভাবে উদ্ধার হয় শিশু সাজিদ

রাজশাহীর তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট গ্রামে একটি গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে যায় দুই বছর বয়সী সাজিদ। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে মায়ের সঙ্গে হাঁটার এক ফাঁকে সে ওই গর্তে পড়ে যায়।
বিজ্ঞাপন
ঘটনার প্রায় ৩২ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে মাটির ৫০ ফুট নিচের গর্ত থেকে তাকে উদ্ধার করেন ফায়ার ফাইটাররা।
স্থানীয়রা জানান, শিশু সাজিদ তার মা ও ভাইয়ের সঙ্গে বাড়ির পাশের একটি জমি পার হচ্ছিল। জমিটি খড় দিয়ে ঢাকা ছিল। সাজিদের মা জানতেন না যে খড়ের নিচেই রয়েছে একটি অরক্ষিত গভীর নলকূপের গর্ত। হাঁটার সময় হঠাৎ সাজিদ গর্তে পড়ে যায়। পেছন থেকে ‘মা মা’ চিৎকার শুনে মা ফিরে দেখেন সাজিদ নেই। খড় সরাতেই বেরিয়ে আসে সেই মৃত্যুকূপ।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে গর্তে পড়া শিশু সাজিদ মারা গেছে
বিজ্ঞাপন
পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এসে উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। প্রথমে ফায়ার কর্মীরা ক্যামেরা এবং অন্যান্য সরঞ্জামাদি দিয়ে গর্তের গভীরতা মাপার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি শিশুটিকে শনাক্তেরও জোর চেষ্টা চলে।
কিন্তু তা সম্ভব না হওয়ায় নলকূপটির পাশেই এস্কেভেটর দিয়ে মাটি খোঁড়া শুরু হয়। সুড়ঙ্গ তৈরি করে মূল গর্তে প্রবেশ করারও চেষ্টা করা হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ৩৫ ফুটের বেশি গর্ত করেও সাজিদের কোনো রকম অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তখন জানান, গর্তে বিশেষ ক্যামেরা নামিয়ে শিশুটির অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ৩৫ ফুট গভীরে গিয়ে ক্যামেরাটি আটকে যায়।
বিজ্ঞাপন
ঘটনার পর থেকে বুধবার পুরো রাত গর্তের পাশেই নির্ঘুম কাটিয়েছেন সাজিদের মা। সন্তানকে ফিরে পাওয়ার আশায় চলে তার বিরামহীন কান্না ও দোয়া। দুর্ঘটনার পরপর শিশুটির সাড়াশব্দ পাওয়া গেলেও সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভেতর থেকে আর কোনো আওয়াজ না আসায় উদ্ধারকর্মীদের শঙ্কিত করে। তারা গর্তের ভেতরে অক্সিজেন সরবরাহ অব্যাহত রাখেন।
দীর্ঘ সময় চেষ্টা চালিয়ে অবশেষে বৃহস্পতিবার রাতে ৫০ ফুটের বেশি মাটি খুঁড়ে শিশু সাজিদকে উদ্ধারে সক্ষম হন ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা।
বিজ্ঞাপন
উদ্ধারের পর সাজিদকে দ্রুততম সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রাত ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে সাজিদকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।








