Logo

হাজীনগর চা বাগানের বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধান করতে গিয়ে বিপাকে কর্তৃপক্ষ

profile picture
জেলা প্রতিনিধি
মৌলভীবাজার
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১১:৫০
13Shares
হাজীনগর চা বাগানের বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধান করতে গিয়ে বিপাকে কর্তৃপক্ষ
ছবি: সংগৃহীত

মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার প্যারাগন গ্রুপের অধীন হাজীনগর চা বাগানে দীর্ঘদিনের বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। জেনারেটার স্থাপনের উদ্যোগ নিতে গিয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন বাগানের চা শ্রমিকরা।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিয়মিত বিদ্যুৎ সংকটের কারণে হাজীনগরসহ আশপাশের একাধিক চা বাগানের বিপুল পরিমাণ কাঁচা চা পাতা নষ্ট হচ্ছে। এতে একদিকে বাগান কর্তৃপক্ষ আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে, অন্যদিকে সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বাগান মালিকপক্ষ ও শ্রমিকদের আলোচনার মাধ্যমে একটি বড় ক্ষমতার জেনারেটর স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পুরনো জেনারেটর ঘর ভেঙে সেখানে ৫০০ কেভিএ ক্ষমতার নতুন জেনারেটর বসানোর কাজ শুরু হলে হঠাৎ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় বাগান ব্যবস্থাপকসহ দুইজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।

বাগান কর্তৃপক্ষের দাবি, মামলার পেছনে স্থানীয় পঞ্চায়েত সভাপতি মোশারাফ হোসেনের ভূমিকা রয়েছে। তাদের অভিযোগ, তিনি বিভিন্ন সময় বাগানের জমি দখল করে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ ও বিক্রি করেছেন। সম্প্রতি বাগানের অনুমতি ছাড়াই একটি বড় দোকানঘর নির্মাণ করায় তাকে ১০ ডিসেম্বর লিখিত নোটিস দেওয়া হয় এবং বিষয়টি শ্রম অধিদপ্তর ও রাজনগর থানাকেও অবহিত করা হয়।

বিজ্ঞাপন

এরপরই প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসে জেনারেটর স্থাপনের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে বাগান কর্তৃপক্ষের অভিযোগ।

এ বিষয়ে বাগানের পাহারাদার জমির মিয়া ও শ্রমিক সর্দার গফুর মিয়া বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় চা পাতা নষ্ট হওয়ায় শ্রমিকদের আয় কমে যাচ্ছে। হাজীনগর ছাড়াও রাহমানিয়া, ফতেভাগ ও রাহুমন বাগানের পাতা এই কারখানায় আসে। বড় জেনারেটর বসানো হলে উৎপাদন বাড়বে, সরকার রাজস্ব পাবে এবং শ্রমিকরাও বাড়তি মজুরি পাবে।

শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, টিলা বা পাহাড় কাটার কোনো ঘটনা না থাকলেও মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। তারা আরও জানান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পরিদর্শনে এসে শ্রমিকদের কথা না শুনেই চলে যান এবং অবমাননাকর মন্তব্য করেন। এতে শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। শ্রমিকরা হুঁশিয়ারি দেন, মিথ্যা মামলায় বাগানের ক্ষতি হলে তারা আন্দোলনে নামবেন।

বিজ্ঞাপন

অভিযোগের বিষয়ে পঞ্চায়েত সভাপতি মোশারাফ হোসেন বলেন, তিনি কোনো সরকারি কাজে বাধা দেননি। তার নামে মিথ্যা অভিযোগ ও গুজব ছড়ানো হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, দোকান নির্মাণের জন্য এক বছর আগে আবেদন করেছিলেন, কিন্তু তা গ্রহণ করা হয়নি।

বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক আবু সালমান খান বলেন, হাজীনগর চা বাগান ভ্যাট ও ট্যাক্স প্রদানে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে এবং সরকারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ রাজস্ব উৎস। উৎপাদন বাড়াতে পুরনো জেনারেটর ঘর ভেঙে নতুন জেনারেটর বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, এতে পাহাড় বা টিলা কাটার কোনো প্রশ্নই নেই।

বাগানের ব্যবস্থাপক শহীদুল হক বলেন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে জেনারেটর রুম নির্মাণ প্রয়োজন ছিল। বিষয়টিকে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল ভিন্নখাতে প্রবাহিত করছে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল সিকদার বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি এখনও বিস্তারিত জানেন না। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং প্রয়োজনে ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হবে।

জেবি/আরএক্স
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD