প্রেমিকের মুখে ‘মা’ ডাক শুনে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

মাদারীপুরের শিবচরে তুচ্ছ কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে দশম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া। এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হলেও এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
বিজ্ঞাপন
উল্টো মামলা তুলে নেওয়ার জন্য সুমাইয়ার পরিবার হুমকির মুখে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ হুমকিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সুমাইয়ার প্রেমিক রিফাত উকিল ও তার লোকজন। এতে যোগ দিয়েছেন সুমাইয়ার দূরসম্পর্কের মামা আবুল খায়ের চোকদার। অভিযোগ রয়েছে, পুলিশও বিষয়টি মীমাংসার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে চাইছে।
পুলিশ ও সুমাইয়ার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সুমাইয়া তার নানাবাড়িতে থেকে স্থানীয় একটি হাইস্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা করত। স্কুলে যাওয়া–আসার পথে তার পরিচয় হয় স্থানীয় যুবক রিফাত উকিলের সঙ্গে। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। রিফাত একদিন সুমাইয়াকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে নিজের মায়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়।
বিজ্ঞাপন
পরবর্তীতে সুমাইয়া বিয়ের জন্য চাপ দিলে রিফাত বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়। বিষয়টি রিফাত সুমাইয়ার দূরসম্পর্কের মামা আবুল খায়েরকে জানায়। এরপর গত ১৭ নভেম্বর আবুল খায়ের, রিফাতসহ স্থানীয় কয়েকজন সুমাইয়ার নানাবাড়িতে গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং বাড়ির সবাইকে উৎখাতের হুমকি দেয়।
এর পরদিন সুমাইয়া রিফাতের মায়ের কাছে গিয়ে বিয়ের বিষয়ে কথা বলেন এবং নানাবাড়ির সবাইকে দেওয়া হুমকির বিচার চান। রিফাতের মা সুমাইয়াকে আশ্বাস দিয়ে ফেরত পাঠান। কিন্তু ১৯ নভেম্বর রিফাত ও তার লোকজন আবারও নানাবাড়িতে এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং বিভিন্ন হুমকি দেয়।
একপর্যায়ে সুমাইয়ার দূরসম্পর্কের মামা আবুল খায়ের বাড়ির উঠানে বসে সুমাইয়া ও নানাবাড়ির সবাইকে ডেকে এনে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন। এ সময় তিনি রিফাতকে দিয়ে সুমাইয়াকে ‘মা’ ডাকাতে বাধ্য করেন। এ অপমান সহ্য করতে না পেরে, দুই পক্ষের তর্ক চলাকালে সুমাইয়া নানাবাড়ির একটি ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে সে আত্মহত্যা করে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: ফুলবাড়ী সীমান্তে বিশেষ টহল ও চেকপোস্ট
পরিবারের লোকজন দরজা ভেঙে সুমাইয়ার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেন। এ সময় রিফাতসহ উপস্থিত অন্যরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
সুমাইয়ার মামি শুভতারা বলেন, প্রথম দিন আবুল খায়ের মামা রিফাত ও তার লোকজন নিয়ে এসে আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেয়। যেদিন সুমাইয়া আত্মহত্যা করে, সেদিন আবুল খায়ের এখানে উপস্থিত ছিলেন না। তবে তার পরিবারের লোকজন এসে উঠানে আমাদের ডেকে আবারও গালিগালাজ ও হুমকি দেয়। এরপর রিফাতকে দিয়ে সুমাইয়াকে ‘মা’ ডাকানো হয়। রিফাত ‘মা’ বলার সঙ্গে সঙ্গেই সুমাইয়া ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে আত্মহত্যা করে।








