বগুড়ায় ফিল্মি স্টাইলে শোরুম থেকে ব্যবসায়ী অপহরণ, মিলল মরদেহ

বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় শোরুম থেকে অস্ত্রের মুখে অপহরণের শিকার এক ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। অপহরণের প্রায় ছয় ঘণ্টা পর সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত আনুমানিক ৩টার দিকে পাশের আদমদীঘি উপজেলার কুমারপুর এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বিজ্ঞাপন
নিহত ব্যবসায়ীর নাম পিন্টু আকন্দ (৩৫)। তিনি নওগাঁর রানিনগর উপজেলার লোহাচুরা গ্রামের বাসিন্দা এবং দুপচাঁচিয়া উপজেলার সিও অফিস বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থিত ‘লটো’ শোরুমের মালিক ছিলেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত ৯টা ৮ মিনিটের দিকে একটি সাদা রঙের হায়েস মাইক্রোবাস শোরুমের সামনে এসে দাঁড়ায়। এরপর মুখ ঢাকা চারজন দুর্বৃত্ত গাড়ি থেকে নেমে শোরুমে প্রবেশ করে। তাদের একজন আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে পিন্টু আকন্দকে জোরপূর্বক শোরুমের বাইরে টেনে নেয়। পরে অন্যদের সহায়তায় তাকে মাইক্রোবাসে তুলে বগুড়া–নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়ক ধরে দ্রুত সরে পড়ে দুর্বৃত্তরা।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ
বিজ্ঞাপন
ঘটনার পরপরই ব্যবসায়ী নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়ে দুপচাঁচিয়া ও আদমদীঘি থানা পুলিশের একাধিক দল অভিযান শুরু করে। প্রযুক্তির সহায়তায় মাইক্রোবাসটির গতিবিধি শনাক্ত করা হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের কোমারভোগ এলাকায় মাইক্রোবাসটি অচল হয়ে পড়লে দুর্বৃত্তরা গাড়ি ও ভেতরে থাকা মরদেহ ফেলে রেখে পালিয়ে যায় বলে পুলিশের ধারণা।

পরে স্থানীয়দের দেওয়া সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাইক্রোবাসের ভেতর থেকে পিন্টু আকন্দের মরদেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, অপহরণের পর তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় এবং মরদেহ মাইক্রোবাসের সিটের নিচে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল।
এ ঘটনায় ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়েছে এবং গাড়ির চালক সানোয়ার হোসেন (৪০) নামের একজনকে আটক করেছে পুলিশ। তিনি দুপচাঁচিয়া উপজেলার উত্তর সাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্তে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
দুপচাঁচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আফজাল হোসেন জানান, ঘটনার পর থেকেই পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে। হত্যার প্রকৃত কারণ উদঘাটনে কাজ চলছে এবং অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতাউর রহমান জানান, ঘটনাস্থল দুপচাঁচিয়া থানার আওতাভুক্ত হওয়ায় সেখান থেকেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
এদিকে প্রকাশ্যে শোরুম থেকে অপহরণ ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডে দুপচাঁচিয়া উপজেলা ও নিহতের গ্রামের বাড়ি রানিনগরে শোক ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।








