শেরপুরে শিক্ষকের চাইনিজ কমলা চাষে সফলতা

‘শখ থেকেই শুরু, এখন তা পেশার পরিপূরক’ এমনই গল্প বগুড়ার শেরপুর উপজেলার খামারখান্দি ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের শিক্ষক মাসুদুর রহমানের। ১৪ শতক জমিতে চাইনিজ জাতের কমলা চাষ করে তিনি এখন সফল বাগান মালিক।
বিজ্ঞাপন
ঢাকায় পড়াশোনা করার সময় থেকেই ফল চাষে ঝোঁক ছিল মাসুদুর রহমানের। ইউটিউব দেখে প্রথমে ঢাকা থেকে একটি কমলার চারা এনে লাগান। তাতে ফল এলেও টক হওয়ায় তিনি নতুন জাতের খোঁজে নামেন। পরে চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের নিধিকুণ্ডু গ্রাম থেকে ৫০টি চাইনিজ ছোট জাতের কমলার চারা সংগ্রহ করেন এবং নিজের গ্রামে রোপণ করেন।
দুই বছর পরই ফলন দেখা দেয়। প্রথমে মাত্র পাঁচটি গাছে কয়েকটি ফল আসে— তার মধ্যেই একটি ফলের স্বাদে মুগ্ধ হয়ে তিনি আশাবাদী হন। এরপর পরিচর্যা বাড়ান এবং কৃষিবিদদের পরামর্শ নিতে থাকেন। দ্বিতীয় বছর ১৯টি গাছে পর্যাপ্ত ফলন হয় যা বিক্রি করে তিনি ২৬ হাজার টাকা আয় করেন।
বিজ্ঞাপন
গত বছর সেই একই গাছ থেকে আয় হয় প্রায় ৪২ হাজার টাকা। এবার বাগানে আরও ৪০-৪৫টি নতুন গাছ যোগ হয়েছে, পুরোনো গাছে ফলন বেশ ভালো। নতুন গাছে আগামী বছর ফল দেবে বলে আশা করছেন তিনি।
মাসুদুর রহমান বলেন, ‘এই ১৪ শতক জমিতে যদি অন্য ফসল করতাম, সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা লাভ হতো। কিন্তু কমলা চাষে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত লাভের সম্ভাবনা আছে। এখন নিজেই ডাল কলম করে চারা তৈরি করছি।’
তিনি আরও জানান, পরীক্ষামূলকভাবে ভারতের কাশ্মীর থেকে আপেল ও আঙুর চারা এনে লাগিয়েছেন। আপেল গাছগুলো এখন বেশ বড় হয়েছে, আঙুর গাছও বেড়ে উঠছে ধীরে ধীরে।
বিজ্ঞাপন
রবিবার (৯ নভেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, বাগানজুড়ে সবুজ পাতার আড়ালে লুকিয়ে আছে শত শত ছোট হলুদ কমলা। স্থানীয় কৃষকরাও বাগানটি দেখে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
শেরপুর উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মামুন আহমেদ বলেন, ‘তাকে দেখে অনেকে অনুপ্রাণিত হয়ে কমলার বাগান করছে। এটি একটি বিদেশি ফলের বাগান, যা আমাদের পুষ্টি চাহিদা মেটাবে এবং আমদানি নির্ভরতা কমাতে সাহায্য করবে।’
বিজ্ঞাপন
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. জুলফিকার হায়দার বলেন, ‘তিনি নিজ উদ্যোগেই এ বাগানটি করেছেন। বিদেশি ফল চাষের জন্য কোনো প্রণোদনা নেই, তবুও বাগান ও ফলন বেশ ভালো হয়েছে। তার মতো উদ্যোগীরা অন্যদেরও উৎসাহিত করবে। আমরা সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি।’








