অন্যের ব্যাংক গ্যারান্টার হাওয়া কতটা বিপদজনক

আমাদের সমাজে খুব সহজেই বন্ধু, আত্মীয় বা সহকর্মীর অনুরোধে ব্যাংক ঋণের গ্যারান্টার হওয়া সাধারণ চিত্র। কিন্তু এই ‘সহায়তা’ অনেক সময় গ্যারান্টারকেই আর্থিক ও আইনি বিপদের মুখে ফেলে দেয়। এর ফলে গ্যারান্টারও ঋণখেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হতে পারেন, যা তাদের ভবিষ্যতে নিজেরা ব্যাংক লোন বা অন্যান্য আর্থিক সুবিধা পেতে বাধার সৃষ্টি করে। তাই, গ্যারান্টার হওয়ার আগে এই ঝুঁকি সম্পর্কে জেনে নেওয়া জরুরি।
বিজ্ঞাপন
ব্যাংক সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঋণগ্রহীতা ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে ব্যাংক আইনি প্রক্রিয়ায় গ্যারান্টারের কাছ থেকে অর্থ আদায় করতে পারে। এমনকি তার ব্যক্তিগত সম্পদ, ব্যাংক হিসাব ও বেতনও বাজেয়াপ্তের ঝুঁকিতে পড়ে।
অর্থনীতিবিদ ড. মো. হাফিজুল ইসলাম বলেন, “গ্যারান্টার হওয়া মানে শুধু নাম দেওয়া নয়, বরং পুরো ঋণের দায়ভার নেওয়া। ঋণগ্রহীতা টাকা না দিলে ব্যাংক প্রথমেই গ্যারান্টারের কাছ থেকেই অর্থ আদায় করে থাকে।”
বিজ্ঞাপন
ব্যাংক কর্মকর্তাদের অভিমত, অনেকেই না জেনেই আত্মীয়তার টানে গ্যারান্টার হয়ে যান। পরে যখন ঋণগ্রহীতা টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হন, তখন গ্যারান্টারকে মামলার মুখোমুখি হতে হয়। ফলে তাদের ব্যক্তিগত আর্থিক সুনাম নষ্ট হয় এবং ভবিষ্যতে নিজে ঋণ নিতেও সমস্যা দেখা দেয়।
আইনজীবীরা পরামর্শ দিচ্ছেন গ্যারান্টার হওয়ার আগে ঋণের শর্তাবলি ভালোভাবে পড়ে বুঝে নেওয়া উচিত। প্রয়োজনে আইনগত পরামর্শ নেওয়া এবং ঋণগ্রহীতার আর্থিক সক্ষমতা যাচাই করা প্রয়োজন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “বন্ধুত্ব বা আত্মীয়তার সম্পর্কের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ গ্যারান্টার হওয়া ভবিষ্যতে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির কারণ হতে পারে। প্রয়োজন হলে ‘না’ বলাই শ্রেয়।”
বিজ্ঞাপন
সচেতনতা ও আর্থিক জ্ঞান বাড়লে অন্যের ঋণের গ্যারান্টার হয়ে সাধারণ মানুষ যে বিপদে পড়ছেন, তা অনেকাংশে কমে আসবে বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।