বিজিবির রেদোয়ানুলসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর নির্দেশ

জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে ঘিরে রাজধানীর রামপুরায় সংঘটিত হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিজিবি কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ এ আদেশ দেওয়া হয়। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এই সিদ্ধান্ত দেন। বেঞ্চের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এদিন শুনানির শুরুতেই আসামিদের অব্যাহতির জন্য করা আবেদন নাকচ করে দেন ট্রাইব্যুনাল। পরে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ অন্যান্য প্রসিকিউটররা।
বিজ্ঞাপন
আসামিপক্ষে গ্রেপ্তার থাকা দুইজনের আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হামিদুল মিসবাহ ও রাষ্ট্রনিযুক্ত ডিফেন্স আইনজীবী মো. আমির হোসেন। এর আগে, ২১ ডিসেম্বর পলাতক দুই আসামির পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী শুনানি করেন। সে সময় চার আসামির পক্ষ থেকেই অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আবেদন জানানো হয়।
এই মামলায় রেদোয়ানুল ইসলামের সঙ্গে গ্রেপ্তার রয়েছেন বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত বিন আলম। বুধবার সকালে ঢাকার সেনানিবাসে অবস্থিত সাব-জেল থেকে প্রিজনভ্যানে করে তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
মামলার অপর দুই আসামি এখনো পলাতক রয়েছেন। তারা হলেন—ঢাকা মহানগর পুলিশের খিলগাঁও অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. রাশেদুল ইসলাম এবং রামপুরা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান।
বিজ্ঞাপন
এর আগে ১৪ ডিসেম্বর এ মামলার শুনানি নির্ধারিত থাকলেও বিশেষ কারণে তা অনুষ্ঠিত হয়নি। চিফ প্রসিকিউটর ৬ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক অভিযোগের ওপর শুনানি শেষ করেন। তারও আগে, ২২ অক্টোবর সেনা হেফাজতে থাকা রেদোয়ানুল ইসলাম ও রাফাত বিন আলমকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে শুনানি শেষে তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। একই সঙ্গে পলাতক আসামিদের হাজির করতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় দেশজুড়ে সহিংসতার মধ্যে রামপুরা এলাকায় সবচেয়ে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সেখানে ২৮ জন নিহত হন এবং বহু মানুষ আহত হন।
বিজ্ঞাপন
তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়, আন্দোলনকারীদের ওপর সরাসরি গুলি চালানোর ঘটনায় বিজিবি কর্মকর্তা রেদোয়ানুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্টরা নেতৃত্বমূলক ভূমিকা পালন করেন। এসব তথ্যের ভিত্তিতে প্রসিকিউশন চারজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে ট্রাইব্যুনালে পৃথক ফরমাল চার্জ দাখিল করে।








