পাবজি খেলতে না দেয়ায় মা, ভাই ও দুই বোনকে গুলি করে হত্যা


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


পাবজি খেলতে না দেয়ায় মা, ভাই ও দুই বোনকে গুলি করে হত্যা

গা শিউরে ওঠার মতো ঘটনা। পাকিস্তানের লাহোরে পাবজি গেমের নেশায় মত্ত ১৪ বছরের ছেলে গুলি করে মা, ভাই ও  ২ ছোট বোনকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ। গেম খেলার প্রভাবেই এই হত্যাকাণ্ড, দাবি পুলিশের। তারা  জানিয়েছে, নাহিদ মুবারক নামে ৪৫ বছরের স্বাস্থ্যকর্মী, তাঁর ২২ বছরের ছেলে তৈমুর ও ১৭, ১১ বছরের দুই মেয়েকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে লাহোরের কাহনা এলাকায়। পরিবারে শুধু বেঁচে আছে ঘাতক কিশোর। 

পুলিশ বিবৃতিতে বলেছে, পাবজি আসক্ত ছেলেটি গেম খেলার তাড়নায় মা, ভাইবোনকে হত্যার  কথা স্বীকার করেছে। দিনে টানা ঘন্টার পর ঘন্টা পাবজি খেলতে খেলতে ছেলেটির মানসিক সমস্যা  দেখা দিয়েছিল।

ডিভোর্সি নাহিদ প্রায়ই ছেলেকে বকাঝকা করতেন পড়াশোনায় মন না দিয়ে প্রায় সারাদিন পাবজি গেম খেলে বলে।  ঘটনার দিনও নাহিদ ছেলেকে বকাবকি করেন।  পরে সে আলমারি থেকে মায়ের পিস্তল বের করে তাঁকে ও বাকি তিনজনকে ঘুমের মধ্যেই গুলি করে মারে। পরদিন সকালে সে নিজেই  হইচই শুরু করে। খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন, পুলিশ ডাকেন। ছেলেটি তখন পুলিশকে জানিয়েছিল, সে বাড়ির ওপরতলায় ছিল, কখন এসব ঘটে গিয়েছে, জানেই না!

নাহিদের কাছে লাইসেন্সওয়ালা পিস্তল ছিল পরিবারের সুরক্ষার জন্য, জানিয়েছে পুলিশ। তবে সেটি এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি, কেননা ছেলেটি সেটি ড্রেনে ফেলে দিয়েছে। তবে তার রক্তমাখা পোশাক উদ্ধার করেছে পুলিশ।

পাকিস্তানের ডনের খবরে বলা হয়েছে, এটি লাহোরে পাবজির নেশায় ঘটিয়ে ফেলা চতুর্থ অপরাধের ঘটনা। ২০১০  সালে প্রথম এমন ঘটনার পরই তত্কালীন লাহোরের পুলিশ প্রধান জুলফিকার হামিদ মর্মান্তিক  পরিণতি ও কিশোর-নাবালকদের জীবন, সময় ও ভবিষ্যত্ রক্ষায় সুপারিশ করেছিলেন, অবিলম্বে পাবজি ও এ ধরনের গেম নিষিদ্ধ করা হোক। গত ২ বছরে তিন কিশোর পাবজি খেলতে খেলতে আত্মহত্যা করে বসে বলে পুলিশের দাবি।

এমন প্রাণঘাতী গেম খেলায় মগ্ন হয়ে থাকে বাস্তব জীবন থেকে দূরে চলে যাওয়াকে গেমিং ডিসঅর্ডার বলেন মনোবিদরা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) সরকারি ভাবে গেমিং ডিসঅর্ডারকে রোগ বা অসুখ হিসাবে তালিকাভুক্ত করেছে। জীবনের বাকি সব দিককে ভুলিয়ে দিয়ে শুধু ডিজিটাল বা ভিডিও গেমে আচ্ছন্ন হয়ে থাকা, এটাই গেমিং ডিসঅর্ডার।

এসএ/